টাঙ্গাইলে ইউএনও’র অপসারণের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

| আপডেট :  ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪  | প্রকাশিত :  ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:২৪


টাঙ্গাইলে ইউএনও’র অপসারণের দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান

সারাদেশ

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি


অনিয়ম, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও হুমকির অভিযোগে টাঙ্গাইলের  ঘাটাইলের উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরতিজা হাসানের অপসারণের অভিযোগে জেলা প্রশাসকের বরাবর স্মারকলিপি দেয়া হয়েছে।

৩ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার বিকেলে ঘাটাইল উপজেলার সাঘরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হাবিুল্লাহ এ স্মারকলিপি জমা দেন। পরে জেলা প্রশাসক স্মারকলিপি গ্রহণ করে তদন্তের নির্দেশ দেন।

স্মারকলিপিতে ইউপি চেয়ারম্যান হাবিুল্লাহ উল্লেখ করেন, স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর কর ১% প্রকল্প থেকে নাজির আব্দুল লতিফের মাধ্যমে ইউএনও ইরতিজা হাসান ৩৫% টাকা অবৈধভাবে গ্রহণ করে আত্মসাৎ করেছেন। এই টাকা দিতে অীকৃতি জানালে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের অপসারণের হুমকি দিতেন। ইউএনও যে নাজিরের মাধ্যমে টাকা গ্রহণ করেছেন তার চাকরি শেষ হয়েছে চলতি বছরের ১ জানুয়ারি।
৪০ দিনের কর্মসূচি থেকে উপসহকারী প্রকৌশলী তারা মিয়া এবং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক চেয়ারম্যানদের কাছ থেকে শ্রমিকদের নামে বিকাশ একাউন্টধারী ২০% সীম কার্ড জমা নেন। কিন্তু এই ২০% সীম কার্ডের টাকা তারা আত্মসাৎ করেন। আমি সাগরদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে এই ২০% সীম কার্ড জমাদানে অস্বীকৃতি জানালে আমাকে বিভিন্নভাবে হেয়প্রতিপন্ন করা হয়।

উপজেলা পি.আই.ও অফিসের সহকারী প্রধান হুরমুজ আলীর মাধ্যমে টিআর- কাবিখা প্রকল্প থেকে বরাদ্ধের ১৫%-২০% টাকা চাপ প্রয়োগ করে গ্রহণ করেন। টাকা প্রদানে অস্বীকৃতি জানালে বা কম দিলে বিল প্রদানে টালবাহানা করেছেন।  

পিয়ন হুরমুজ আলীর হাত দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা অবৈধভাবে বিভিন্ন বরাদ্দ হতে বিপুল পরিমাণ টাকা গ্রহণ করেন। যার সামান্য অংশই পেতেন এই হুরমুজ আলী। তবুও তিনি অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন এবং ঘাটাইল পৌর এলাকায় তার ৬ তলা বিশিষ্ট বহুতল ভবনের কাজ চলমান।

ইউএনও অফিসের আউট সোর্সিংয়ের দায়িত্ব পালনের সময় রফিকুল ইসলাম ইউএনও এর বরাদ্ধকৃত সকল প্রকল্প থেকে পার্সেন্টের নামে বিপুল পরিমাণ চাদা গ্রহণ করেন। বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে ইউএনও এর পক্ষ থেকে বিভিন্ন ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান হতে চাঁদা তুলেছেন। পরবর্তীতে রফিকুল ইসলাম পোড়াবাড়ী পাবলিক ফাজিল মাদ্রাসায় অফিস সহকারী পদে যোগদান করেন।

গত বছরের বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রত্যেকটি ইট ভাটা হতে ৫০ হাজার টাকা এবং চলতি বছরের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ৫০ হাজার করে চাঁদা উত্তোলন করা হয়েছে।

ইউএনও একজন সরকারী কর্মকর্তার পরিচয় ভুলে গিয়ে তিনি দলীয় নেতার ভূমিকা পালন করতেন। ইউএনও আমাকে ৪ আগস্ট ফোন দিয়ে ছাত্র আন্দোলন প্রতিহত করতে ২০-৩০ জন লোক নিয়ে উপজেলা পরিষদের সামনে উপস্থিত থাকতে বলেন। একই সাথে আমাকে বলা হয় পরিবারের কোনো সদস্য চলমান আন্দোলনে অংশ গ্রহণ করলে চেয়ারম্যান পদ হতে অপসারণ করে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দেয়া হবে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক ২০১১ সালের ৭ আগস্ট কালিহাতী থেকে বদলী হয়ে ঘাটাইল আসেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালের ১১ সেপ্টম্বর ঘাটাইল থেকে বদলী হয়ে গোপালপুরে আসেন। এনামুল হকের ২০১৬ সালে গোপালপুর থেকে সদর বদলী হন। কিন্তু তিনি অসৎ উপায়ে বগুড়া না গিয়ে ঘাটাইল উপজেলায় বদলী হয়। তিনি ঘাটাইল উপজেলা পিআই.ও অফিসকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা। আমি এ ধরনের কোন দুর্নীতি করেনি।

ঘাটাইলের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইরতিজা হাসানের সাথে যোগাযাগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।

এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিবার্তা/ইমরুল/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত