পদোন্নতি ঘিরে নতুন মেরুকরণ

| আপডেট :  ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১০:০১  | প্রকাশিত :  ২৪ অক্টোবর ২০২১, ১০:০১

উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। এই পদোন্নতিকে ঘিরে দেখা দিয়েছে মেরুকরণ। পদোন্নতি প্রত্যাশী কর্মকর্তাদের অনেকের মধ্যে দুশ্চিন্তা থাকলেও ফুরফুরে মেজাজে আছেন প্রভাবশালীরা। তাদের ধারণা পদোন্নতি তাদের হবেই। কারণ তারা ‘সরকার সমর্থিত’। দুশ্চিন্তায় থাকা কর্মকর্তারা বলছেন, রাজনৈতিক বিবেচনা করা হলে তাদের পদোন্নতি না-ও হতে পারে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পদোন্নতি হবে যোগ্যদের।

জানা গেছে, সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সুপেরিয়র সিলেকশন বোর্ডের (এসএসবি) বৈঠকে উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতির প্রক্রিয়া শুরু করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। শিগগিরই পদোন্নতির তালিকা চূড়ান্ত হবে। এরইমধ্যে কর্মকর্তারা বিভিন্নভাবে নিজেদের পদোন্নতি নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছেন। এখন চলছে শেষ মুহূর্তের তোড়জোড়। নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণে স্থানীয় সংসদ সদস্য বা মন্ত্রীর লিখিত ডিও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে জমা দিচ্ছেন কেউ কেউ। কেউ সরাসরি জনপ্রশাসনমন্ত্রী বা সচিবকে ফোনও করাচ্ছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এবার যুগ্মসচিব পদোন্নতির ক্ষেত্রে বিসিএস ২০তম ব্যাচ পর্যন্ত কর্মকর্তাদের বিবেচনা করা হচ্ছে। এ ব্যাচে যোগদান করা কর্মকর্তা ২৯৭ জন। এর মধ্যে ২৬৮ জন উপসচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন। ২০তম ব্যাচে যুগ্মসচিব হওয়ার যোগ্য ২৪৮ জন। সূত্র জানায়, এবারের পদোন্নতিতে উপসচিব পদমর্যাদার ৫৫৩ জন কর্মকর্তাকে বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ২০তম ব্যাচ পর্যন্ত (লেফট আউটসহ) ৩২৪ জন কর্মকর্তা রয়েছেন। ইকোনমিক ক্যাডার কর্মকর্তা রয়েছেন ৩৮ জন এবং অন্যান্য ক্যাডারের ১৯১ জন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, প্রত্যেক কর্মকর্তার কর্মজীবনের সমস্ত নথি পর্যালোচনা করা হচ্ছে। প্রয়োজনীয় নম্বর, চাকরিজীবনের শৃঙ্খলা, দুর্নীতির বিষয়সহ সামগ্রিক বিষয় পর্যালোচনায় আসছে। এসএসবির আরও বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলেও জানা গেছে। ওই বৈঠক শেষেই এসএসবিকে যুগ্মসচিব পদের জন্য তিন শতাধিক কর্মকর্তার নামের তালিকা চূড়ান্ত করতে হবে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, মেধার ভিত্তিতে যোগ্যদের পদোন্নতির জন্য বাছাই করলে কোনও দুশ্চিন্তার কথা উঠতো না। অতীতে সরকারের উচ্চপর্যায়ে পরিচিতি ও সম্পর্ক না থাকার কারণে দক্ষদের অনেকেই পদোন্নতি পাননি। মাঠ পর্যায়ে নেতিবাচক পারফরম্যান্স নিয়েও অনেকে রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতি পেয়েছেন।

এদিকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় পদোন্নতিবঞ্চিত করার অভিযোগ তো সব সরকারের সময়ই ছিল। এ ছাড়াও বিভিন্ন সংস্থার ত্রুটিপূর্ণ ও অসত্য প্রতিবেদনের কারণে অনেক মেধাবী কর্মকর্তাকে পদোন্নতিবঞ্চিত হতে হয় এমন অভিযোগও রয়েছে। তবে যারা মন্ত্রিপরিষদ ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে কাজ করেন তাদের পদোন্নতিতে সমস্যা হয় না। কারণ দেশের সেরা অফিসারদের বাছাই করে এখানে পদায়ন করা হয়।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত