গ্যাসের দাম বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার

| আপডেট :  ২৪ অক্টোবর ২০২১, ০৫:৩১  | প্রকাশিত :  ২৪ অক্টোবর ২০২১, ০৫:৩১

এলএনজিতে ভর্তুকির সামাল দিতে গ্যাসের দাম বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার। গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। জ্বালানি বিভাগের একটি সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে। তবে দাম বাড়ানো নিয়ে এখনই সরাসরি মুখ খুলছেন না কেউ। জ্বালানি বিভাগ সূত্র জানায়, আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত এলএনজির জন্য প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি লাগছে। অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে এই ভর্তুকির প্রয়োজন হলে শেষ ছয় মাসে আরও লাগবে। যদিও সেটার পরিমাণ নির্দিষ্ট হয়নি।

এখন খোলাবাজার থেকে প্রতি এমএস বিটিইউ এলএনজি ৩২ থেকে ৩৬ ডলারের নিচে কেনা সম্ভব হচ্ছে না। বাড়তি দামে তিনটি এলএনজির কার্গো কেনা হচ্ছে। সব মিলিয়ে সরকারের দুই হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এর বাইরে জ্বালানি তেলেও বিপুল লোকসান গুনতে হচ্ছে সরকারকে।

এখন দেশে দিনে ১ হাজার ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন হচ্ছে। বাকি ৮০০ থেকে ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের ঘাটতি এলএনজি আমদানি করেই পূরণ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বিশ্বে জ্বালানির ঊর্ধ্বমুখী দরের কারণে আমদানিনির্ভর দেশগুলো বেশি দামে গ্যাস এবং তেল কিনছে বলেও সরকারের লোকসান বেড়ে চলেছে।

জ্বালানি বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে গ্যাসের দাম বাড়ানো নিয়ে একটি সভা হয়েছে। সেখানে জ্বালানি বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ছিলেন। পেট্রোবাংলা সূত্র জানায়, গ্যাসের দাম বাড়ানোর বিষয়ে তারা কাজ শুরু করেছে। জ্বালানি বিভাগ থেকে নীতিগত অনুমতি পেলেই বিইআরসির কাছে প্রস্তাব পাঠানো হবে। তার আগে বিতরণ কোম্পানিগুলোর সঙ্গে কথা হচ্ছে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জ্বালানি বিভাগের সিনিয়র সচিব আনিছুর রহমান বলেন, বেশি দামে গ্যাস কিনে কম দামে বিক্রি করায় লোকসান হচ্ছে। এটা কমিয়ে আনতে ভর্তুকির কথা ভাবা হচ্ছে। তবে বিশ্ববাজারে দামের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকলে দাম বাড়ানোর বিষয়ে আমাদের ভাবতে হতে পারে। সচিব আরও বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে ভারতসহ বেশকিছু দেশই জ্বালানির দাম বাড়িয়েছে।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সংবাদ মাধ্যমকে জানান, গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।

সবশেষ ২০১৯ সালের ১ জুলাই গ্যাসের দাম বাড়িয়েছিল বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি)। বাসাবাড়িতে দুই চুলার খরচ ৮০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৯৭৫ টাকা আর এক চুলার খরচ ৭৫০ টাকা থেকে ৯২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এ ছাড়া সিএনজি গ্যাসের দাম নির্ধারণ করা হয় প্রতি ঘনমিটার ৪৩ টাকা এবং বিদ্যুৎ ও সারের জন্য ৪.৪৫ টাকা। হোটেল রেস্তোরাঁয় প্রতি ঘন মিটার ২৩ টাকা, ক্যাপটিভ পাওয়ারে ১৩.৮৫ টাকা, শিল্প ও চা বাগানে ১০.৭০ টাকা, ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পে ১৭.০৪ টাকা।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত