রূপরেখা চূড়ান্ত, মন্ত্রী অনুমোদন দিলেই পদোন্নতি

| আপডেট :  ২০ মার্চ ২০২২, ১২:১৬  | প্রকাশিত :  ২০ মার্চ ২০২২, ১২:১৬

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি অনুমোদন দিলে বেসরকারি কলেজের প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখার খসড়া প্রকাশ করা হবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের গঠিত কমিটি ইতোমধ্যে উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক কলেজগুলোর প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখা চূড়ান্ত করে জমা দিয়েছেন। শিক্ষামন্ত্রী, উপমন্ত্রী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সামনে তা উপস্থাপন করা হবে। এরপর মন্ত্রী বহুল প্রতিক্ষীত রূপরেখা অনুমোদন দেবেন।

জানা গেছে, বেসরকারি স্কুল কলেজের নতুন এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে বিভিন্ন কলেজে কর্মরত প্রভাষকদের অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ দেয়া হয়েছে। ডিগ্রি পর্যায়ের কলেজের প্রভাষকদের চাকরির আট বছর পূর্তিতে সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতির সুযোগ দেয়া হলেও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের প্রভাষকদের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতির সুযোগ দেয়া হয়েছে। প্রভাষকদের পদোন্নতির মূল্যায়ন কিভাবে হবে সে লক্ষ্যে একটি রূপরেখা প্রণয়ন করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। গত বছর অর্থাৎ ২০২১ খ্রিষ্টাব্দের শেষে এ রূপরেখা চূড়ান্ত করে মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি। মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, সব কিছু ফাইনাল, এখন মন্ত্রীর অনুমোদন নিয়ে পরিপত্র জারির অপেক্ষা।

প্রভাষকদের পদোন্নতি রূপরেখা প্রণয়ন কমিটিতে থাকা একজন কর্মকর্তা বলেন, প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখা গত ডিসেম্বর মাসেই চূড়ান্ত হয়ে গেছে। এখন শুধু পরিপত্র আকারে তা জারির অপেক্ষা। কমিটি বেশ কয়েক দফা সভা করে রূপরেখা চূড়ান্ত করে তা জমা দিয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখা তৈরি কমিটিতে থাকা একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলেন, আমরা রূপরেখার খসড়া চূড়ান্ত করে তা জমা দিয়েছি। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনিসহ সংশ্লিষ্টদের সামনে রূপরেখা উপস্থাপন করা হবে। সেটিতে মন্ত্রী মহোদয় অনুমোদন দিলেই তা জারি করা হবে।

এর আগে রূপরেখা চূড়ান্ত কমিটিতে থাকা একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ইঙ্গিত দিয়েছিলেন প্রভাষকদের পদোন্নতিতে কলেজের ব্যবস্থাপনা কমিটির কাছ থেকে অনুমোদন নেয়ার বিধান থাকছে। মন্ত্রণালয় সূত্র দৈনিক আমাদের বার্তাকে জানায়, নতুন এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে বেসরকারি কলেজ প্রভাষকদের পদোন্নতিতে সার্বিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতিকে দেয়া হচ্ছে। মোট ৯টি সূচকের ভিত্তিতে প্রভাষকদের পদোন্নতির ব্যবস্থা করা হবে। নয়টি সূচকে প্রভাষকদের মূল্যায়নের পর অধ্যক্ষ তা গভর্নিং বডির সভায় উপস্থাপন করবেন। গভর্নিং বডির অনুমোদন পাওয়ার পর প্রভাষকরা অনলাইনে আঞ্চলিক পরিচালক বরাবর পদোন্নতির আবেদন করবেন। এভাবেই প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখার খসড়া করা হয়েছে।

তবে, প্রভাষকদের পদোন্নতির রূপরেখায় পদোন্নতির জন্য কি বিধান রাখা হয়েছে সে বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে রাজি হয়নি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

২০২১ খ্রিষ্টাব্দের ৩১ মার্চ জারি করার বেসরকারি স্কুল-কলেজের নতুন এমপিও নীতিমালা ও জনবল কাঠামোতে বিভিন্ন কলেজে কর্মরত প্রভাষকদের অভিজ্ঞতা ও মূল্যায়নের ভিত্তিতে পদোন্নতির সুযোগ দেয়া হয়। চাকরির আট বছর পূর্তিতে ডিগ্রি পর্যায়ের কলেজের প্রভাষকদের সহকারী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানের প্রভাষকদের চাকরির আট বছর পূর্তিতে জ্যেষ্ঠ প্রভাষক পদে পদোন্নতির সুযোগ দেয়া হয়েছে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, মূল্যায়ন ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ একটি কমিটি গঠন করবে। সেই কমিটির সূচকগুলো মূল্যায়ন করে পদোন্নতি দেয়া হবে। পদোন্নতির খসড়ায় সে কমিটি কিভাবে হবে, কে কে থাকবেন তাও উল্লেখ করা হয়েছে।

নতুন নীতিমালায় প্রভাষকদের পদোন্নতিতে ১০০ নম্বরের মূল্যায়নের কথা বলা হয়েছে। নীতিমালা অনুসারে, এমপিও প্রাপ্তির জ্যেষ্ঠতায় ১৫ নম্বর, পরীক্ষার ফলে ১৫ নম্বর, ক্লাসে উপস্থিতি ২০ নম্বর, নেতিবাচক রেকর্ডে না থাকলে ২০ নম্বর, বিভাগীয় মামলা না থাকলে ৫ নম্বর, সৃজনশীল দৃষ্টান্তে ১০ নম্বর, ভার্চুয়াল ক্লাস নেওয়ার দক্ষতায় ১০ নম্বর, এমফিল-পিএইচডিতে ৫ নম্বর, গবেষণা কর্ম ও স্বীকৃত জার্নালে প্রকাশিত প্রবন্ধ থাকলে ১০ নম্বরসহ মোট ১০০ নম্বরে মূল্যায়নের মাধ্যমে প্রভাষকদের পদোন্নতির সুযোগ রেখে রূপরেখার খসড়া করা হয়েছিল।
দৈনিক আমাদের বার্তা

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত