যে কারণে আটকে আছে ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা

| আপডেট :  ০২ জুন ২০২২, ০৯:৩৮  | প্রকাশিত :  ০২ জুন ২০২২, ০৯:৩৮

মূলত তিন ধাপে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নেয়া হয়। প্রথম ধাপে নেয়া হয় প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এরপর উত্তীর্ণদের লিখিত পরীক্ষায় বসতে হয়। সবশেষে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নেয়া হয় মৌখিক পরীক্ষা। ফাইল ছবি
১৬টি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা আয়োজন করেছে এনটিআরসিএ। এখন অপেক্ষা ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার, যার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে ২০২০ সালে।

ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে দুই বছরের বেশি সময়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে পাস করতে হয় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা, যা আয়োজন করে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)।

ইতোমধ্যে ১৬টি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা আয়োজন করেছে এনটিআরসিএ। এখন অপেক্ষা ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার, যার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে ২০২০ সালে। ইতোমধ্যে পেরিয়ে গেছে দুই বছরের বেশি সময়।

মূলত তিন ধাপে শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা নেয়া হয়। প্রথম ধাপে নেয়া হয় প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এরপর প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষায় বসতে হয়। সবশেষ লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের নেয়া হয় মৌখিক পরীক্ষা।

প্রথম দিকে করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষা আয়োজন করতে পারেনি এনটিআরসিএ। এখন করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলেও পরীক্ষার আয়োজনে স্থান ও জনবল সংকটের কারণে পরীক্ষা নেয়া সম্ভব হচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনটিআরসিএর এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানান।

ওই কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রতিবার পরীক্ষা আয়োজনের জন্য শিক্ষাবোর্ডগুলোর জায়গা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমাদের (এনটিআরসিএ কর্তৃপক্ষকে) ব্যবহার করতে দেয়া হয়। কিন্তু এবার পরীক্ষা আয়োজনের জন্য জায়গা বরাদ্দ চেয়েও পাওয়া যায়নি। তাই আমরা পত্রিকায় জায়গা ভাড়া চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছি। কিন্তু এখনও কোনো জায়গা চূড়ান্ত করা সম্ভব হয়নি।’

জনবল সংকটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এনটিআরসিএতে সিস্টেম অ্যানালিস্টের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদও শূন্য। পরীক্ষা গ্রহণের জন্য এ পদে জনবল থাকা একান্ত আবশ্যক। এটাও ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষা আয়োজনে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।’

জানা যায়, ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি ১৭তম শিক্ষক নিবন্ধনের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে এনটিআরসিএ। এতে আবেদন করেন প্রায় ১২ লাখ প্রার্থী। ওই বছরের ১৫ মে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু করোনার মহামারি প্রতিরোধে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় পরে সে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।

জানতে চাইলে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. এনামুল কাদের খান বলেন, ‘পরীক্ষা আয়োজনের জন্য ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। মূলত স্থান সংকট পরীক্ষা আয়োজনের জন্য বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নজরে এনেছি। আশা করছি, শিগগিরই ১৭তম নিবন্ধন পরীক্ষা আয়োজন সম্ভব হবে।’

কবে নাগাদ পরীক্ষা আয়োজন করা হতে পারে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘স্থান সংকটের সমাধান হলে সাত দিনের নোটিশে পরীক্ষা আয়োজন করা হবে। এ সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের সঙ্গে আলোচনা করছি। আশা করি শিগগিরই সমস্যার সমাধান হবে।’

জানা যায়, বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগের জন্য ২০০৫ সাল থেকে সনদ দিয়ে আসছিল এনটিআরসিএ, যদিও নিয়োগের ক্ষমতা ছিল গভর্নিং বডি ও ম্যানেজিং কমিটির হাতে। ২০১৫ সালে এই পদ্ধতির পরিবর্তন আনে সরকার। এর পর থেকে এনটিআরসিএ সনদ দেয়ার পাশাপাশি শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশও করে।

সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শূন্য পদের বিপরীতে এন্ট্রি লেভেলের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেতে প্রার্থীদের প্রিলিমিনারি, লিখিত, মৌখিক ও জাতীয় সম্মিলিত মেধাতালিকায় স্থান পেতে হয়। এরপর নিয়োগের জন্য গণবিজ্ঞপ্তি বা সার্কুলারের মাধ্যমে প্রার্থীদের কাছ থেকে আবেদন নেয়া হয়। চূড়ান্ত ধাপে মেধাতালিকা অনুসরণ করে প্রতিটি শূন্য পদের বিপরীতে একজন শিক্ষককে সেই পদে সুপারিশ করা হয়।

এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি তৃতীয় গণনিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সারা দেশে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৩৪ হাজার ৭৩টি পদে বেসরকারি স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে এনটিআরসিএ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত