অন্যদের তুলনায় চিকিৎসকরা চারগুণ বেশি নিপীড়নের শিকার

| আপডেট :  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭  | প্রকাশিত :  ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:১৭


অন্যদের তুলনায় চিকিৎসকরা চারগুণ বেশি নিপীড়নের শিকার

বিবার্তা প্রতিবেদক


অন্যান্য পেশার তুলনায় চিকিৎসকরা চারগুণ বেশি নিপীড়নের শিকার হয়। এছাড়া দেশে ৬৭ শতাংশ চিকিৎসক কোনো না কোনো নির্যাতনের শিকার হন। এ অবস্থায় রোগীদের সেবা নিশ্চিতের স্বার্থে চিকিৎসকদের নিরাপত্তার ওপর গুরুত্বারোপ করা জরুরি।

২১ সেপ্টেম্বর, শনিবার দুপুর ৩টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরাম (এনডিএফ) আয়োজিত ‘চিকিৎসকদের নিরাপদ কর্মস্থল: সংকট এবং করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিলে বক্তারা এসব কথা বলেন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজের ক্যানসার বিশেষজ্ঞ ডা. নাজিরুম মুবিন বাংলাদেশের চিকিৎসকদের ওপর শারীরিক হামলার পরিসংখ্যান এবং বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট আলোচনা করেন।

তিনি বলেন, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৬২-৬৭ শতাংশ চিকিৎসক কোনো না কোনো ধরনের নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

সূচনা বক্তব্য বিশিষ্ট এনেসথেসিলজিস্ট ও ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের যুগ্ম সম্পাদক ডা. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা আজ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তারা প্রতিদিন নিজেদের জীবনকে ঝুঁকিতে রেখে রোগীদের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এ পরিস্থিতিতে চিকিৎসকদের জন্য সুরক্ষিত ও সম্মানজনক কর্মস্থল গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।

এনডিএফের পাবলিসিটি সেক্রেটারি ডা. আল কায়েস কক্সবাজার মেডিকেল কলেজসহ দেশ-বিদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর হামলা নিয়ে ভিডিও চিত্র উপস্থাপন করেন।

লিগ্যাল অ্যাফেয়ার্স সেক্রেটারি ডা. আব্দুল কাদির নোমান জরুরি বিভাগ, সিসিইউ এবং আইসিইউতে চিকিৎসকদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং দেশের হাসপাতালগুলোর শয্যার সীমাবদ্ধতা ও চিকিৎসকদের কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তার অভাব নিয়ে কথা বলেন।

এ ছাড়া বিশিষ্ট মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামান কাবুল কর্মস্থলে চিকিৎসকদের উপর মানসিক চাপ ও মনস্তাত্ত্বিক প্রভাব নিয়ে আলোচনা করেন এবং এসব সমস্যা কীভাবে চিকিৎসকদের মানসিক স্বাস্থ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. আতিয়ার রহমান বলেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জসমূহ উল্লেখ করে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন।

এসময় ইবনে সিনা মেডিকেল কলেজের রেডিওলজি অ্যান্ড ইমেজিং বিভাগের অধ্যাপক ডা. হাবিবা চৌধুরী বলেন, দেশে সব পেশার মানুষই নির্যাতিত। যারা নির্যাতন করে তারা আমাদেরই কেউ না কেউ। এজন্য প্রয়োজন মোরাল ক্যারেক্টার ঠিক করা।

তিনি কর্মস্থলে নারী চিকিৎসকদের খাটো করে দেখা হয় উল্লেখ করে বলেন, দেশে এখন সবচেয়ে বেশি চিকিৎসক হচ্ছেন মহিলা, যা প্রায় ৭০ শতাংশ।  যারা টিকছে তাদের মধ্যেও বিশাল অংশ নারী। কিন্তু নারীদেরকে খাটো করে দেখা হয়। আমাদের মহিলা ডাক্তাররাও পিছিয়ে নেই।

বিশিষ্ট চিকিৎসক ও সমাজকর্মী ডা. মো. তোফাজ্জল হোসেন রোগীদের চিকিৎসকদের উপর আস্থার সংকট নিরসনে বিভিন্ন উপায় এবং কীভাবে চিকিৎসক-রোগীর সম্পর্ক উন্নত করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন- অধ্যাপক ডা. মোজাহেরুল হক, বিচারপতি মাজদার হোসেন, অধ্যাপক ডা. শাহ বুলবুল ইসলাম, অধ্যাপক ডা. আইরিন পারভীন, অধ্যাপক ডা. হাবিবা চৌধুরী সুইট, অ্যাডভোকেট শিশির মনির, সাবেক পুলিশ সুপার মো. মনির হোসেন ও সাংবাদিক শহীদুল ইসলাম প্রমুখ।

সংগঠনটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন এনডিএফ সেক্রেটারির অধ্যাপক ডা. মো. মাহমুদ হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন নিউরোসায়েন্স হাসপাতালের নিউরোমেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. হুমায়ুন কবির সরকার।

বিবার্তা/জেএইচ

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত