আ. লীগের কর্মসূচি: জমায়েতে থাকবে ‘সর্বোচ্চ’ সংখ্যক নেতাকর্মী

| আপডেট :  ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০৯:১৭  | প্রকাশিত :  ০৩ আগস্ট ২০২৪, ০৯:১৭


আ. লীগের কর্মসূচি: জমায়েতে থাকবে ‘সর্বোচ্চ’ সংখ্যক নেতাকর্মী

বিবার্তা প্রতিবেদক


কোটা আন্দোলন ঘিরে সারাদেশে অস্থিরতা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসার জন্য কোটাবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কদের সঙ্গে বসতে চায় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তবে আলোচনায় বসার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেছেন কোটা আন্দোলনকারী সমন্বয়করা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে ৩ আগস্ট, শনিবার দুপুরে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এরপর বিকেলে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এক সমাবেশ থেকে সরকারের পদত্যাগের এক দফা দাবি ঘোষণা করেছে কোটা আন্দোলনকারীরা।

রবিবার (৪ আগস্ট) রাজধানীর সব ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা জমায়েত কর্মসূচি পালন করবে। দেশের সকল জেলা ও মহানগরেও জমায়েত কর্মসূচি পালন করা হবে। এছাড়া পরদিন সোমবার (৫ আগস্ট) বিকালে রাজধানীতে ‘শোক মিছিল’ করবে দলটি।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, দলের এ কর্মসূচিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিতির নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

৩ আগস্ট, শনিবার দুপুরে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি জানান, সোমবার (৫ আগস্ট) বিকাল ৩টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানসংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনে থেকে এ শোক মিছিল শুরু হয়ে ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে গিয়ে শেষ হবে।

রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কর্মী জমায়েতের মতো কর্মসূচি ঘোষণার কারণ জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, কোটাসংস্কার শিক্ষার্থীদের যা দাবি ছিল তা মেনে নেয়া হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীদের সেই আন্দোলন ‘বেহাত’ হয়ে চলে গেছে তৃতীয় পক্ষের হাতে। যারা বাংলাদেশকে অকার্যকর করতে চায় এবং দেশকে খাদের কিনারায় নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু তাদের এই অশুভ তৎপরতা আমরা সফল হতে দিতে পারি না।

কোটা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে আন্দোলন করছে বিএনপি-জামায়াত। কোটা সংস্কারের দাবি পূরণের পরও দেশের বিভিন্ন জায়গায় সহিংসতা করতে দেখা গেছে। কোটা আন্দোলনের নামে তারা যেকোনো সময় অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। আমরা তাদের এমন কিছু করতে দেব না, যাতে দেশের মানুষের ক্ষতি হয়। আর এজন্য রাজধানীর ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক অবস্থায় থাকার জন্য বলা হয়েছে।

এদিকে কোটা আন্দোলন ঘিরে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে আওয়ামী লীগ কোনো সংঘাত চায় না বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন কোটা আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আমি বসতে চাই, তাদের কথা শুনতে চাই। কোনো সংঘাত চাই না। আমরা সংঘাত এড়িয়ে চলেছি। বিতর্কে নয় আমরা ঐক্যে বিশ্বাসী। আজকেও আমাদের নির্ধারিত কর্মসূচি ছিল, সেটি স্থগিত করা হয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফী বিবার্তাকে বলেন, আওয়ামী লীগ সংঘাতের রাজনীতিতে বিশ্বাস করে না। দল থেকে যেনো শান্তিপূর্ণভাবে জমায়েত হয়, সেজন্য আমাদের নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। কোটা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘিরে কেউ যাতে বিশৃঙ্খলা না করতে পারে সেজন্য দলের সবাইকে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে শান্তিপূর্ণভাবে সতর্ক অবস্থায় থাকার জন্য বলা হয়েছে। তবে আন্দোলনের নামে কেউ নৈরাজ্য করলে আমরা তার জবাব দেয়ার জন্য সবসময় প্রস্তুত আছি।

তিনি বলেন, আমরা আজও মাঠে ছিলাম। এটা আমাদের রুটিন ওয়ার্ক। নাশকতা প্রতিরোধে আমরা সবসময় মাঠে আছি।

ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ বজলুর রহমান বিবার্তাকে বলেন, আমাদের দলের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন- আমরা কারো সাথে কোনো সংঘাত চাই না। শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে এতেও আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু তাদের ওপর ভর করে যাতে কেউ কোনো বিশৃঙ্খলা না করতে পারে, তার জন্য আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি বলেন, কেউ নাশকতা, সন্ত্রাস বা জনগণের জানমালের ক্ষতি না করতে পারে সেজন্য আমরা সবসময় সতর্ক আছি। কালকের কর্মসূচি সামনে রেখে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদেরকে প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে সতর্ক অবস্থান নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে শনিবার (৩ আগস্ট) কেন্দ্রীয় নির্দেশনা অনুযায়ী আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দিনভর রাজধানীর প্রতিটি ওয়ার্ড, ইউনিট ও মহল্লায় অবস্থানে ছিলেন।

বিবার্তা/সোহেল/রোমেল

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত