খানসামায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

| আপডেট :  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:০৭  | প্রকাশিত :  ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:০৭


খানসামায় প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ

সারাদেশ

খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি


দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার কায়েমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামছুল হুদার বিরুদ্ধে অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। এছাড়াও ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের পদধারী এই প্রধান শিক্ষক স্বৈরাচারী সরকারের আমলে প্রভাব খাটিয়ে পরিবারের লোকজনকে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পদে নিয়োগ, শিক্ষার্থীদের সনদপত্র দিয়ে চাঁদা আদায় করতেন বলে অভিযোগ রয়েছে। এতে চরম হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

১৯ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী, ঐ বিদ্যালয়ে কর্মরত একাধিক শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

এসময় ষষ্ঠ-দশম শ্রেণি পর্যন্ত ১০৫ জন শিক্ষার্থী হলেও মাত্র ৩২ জন উপস্থিত দেখা যায়।

স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিগত সরকারের আমলে নিজের দলীয় পরিচয়ের প্রভাব খাটিয়ে প্রতিষ্ঠানটিকে পরিবারতন্ত্রে রুপান্তরিত করেন প্রধান শিক্ষক শামসুল হুদা। প্রতিষ্ঠানের সবশেষ চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারীর নিয়োগে প্রায় সবগুলো নিজের পরিবার থেকেই তিনি নিয়োগ দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা। এছাড়াও বিদ্যালয়ের ব্যবহার করা কম্পিউটার, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও সনদপত্র বাসায় রাখেন এই প্রধান শিক্ষক। কোনো সাবেক শিক্ষার্থীর সনদপত্র প্রয়োজন হলে বাসায় গিয়ে টাকা দিয়ে সনদ নিতে হয় বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষার্থী।

জানা যায়, ২০১০ সালে প্রধান হিসেবে যোগদান করেন শামসুল হুদা। যোগদানের পর থেকেই ধীরে ধীরে প্রতিষ্ঠানটিতে একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করেন তিনি। ঐ বিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৯ জন শিক্ষক-কর্মচারী কর্মরত আছেন। এর মধ্যে ১৩ জন শিক্ষক

৫ জন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে চাকরিরত আছেন। গত ২০১৭ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ছয়জন চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী নিয়োগের মধ্যে আয়া পদে তার চাচী ইয়াসমিন আক্তার, নৈশ্য প্রহরী পদে চাচাতো ভাই ওমর ফারুক ও পিয়ন পদে শ্যালক মজনু ইসলামকে নিয়োগ দেন। এছাড়াও নিজের পছন্দের ব্যক্তি রাকেশ রায় কে লাইব্রেরীয়ান পদে নিয়োগ দেন। তৎকালীন এমপি আবুল হাসান মাহমুদ আলীর প্রার্থী মঞ্জুরুল ইসলাম ও ঐ প্রতিষ্ঠানের সভাপতি সাইফুল ইসলামের ভাই শাহাদাত হোসেন কে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে জানিয়েছেন প্রধান শিক্ষক।

ঐ প্রতিষ্ঠানের অবসরপ্রাপ্ত চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হাফিজ উদ্দিন বলেন, আমি শুরু থেকেই এই প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেছি। খুব সুন্দরভাবে বিদ্যালয় চলত এবং অনেক ছাত্রছাত্রী ছিল। এই প্রধান শিক্ষক আসার পর থেকেই বিদ্যালয়ের করুণ দশা শুরু হয়েছে। নিজের পরিবারের লোকজনকে নিয়োগ দিয়ে মনগড়াভাবে স্কুল পরিচালনা করছেন।  

এ বিষয়ে কায়েমপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শামসুল হুদা বলেন, সবকিছু নিয়ম মেনে এবং তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের ম্যানেজ করে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানের সকল কাগজপত্র প্রতিষ্ঠানেই আছে। বর্তমানে দেশের পরিস্থিতির কারণে এখন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ঐ বিদ্যালয়ের সভাপতি মো. তাজউদ্দিন বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলাম। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিবার্তা/জামান/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত