গুরুদাসপুরে পরীক্ষামূলক রঙিন কপি চাষ করে সফলতা

| আপডেট :  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:৪২  | প্রকাশিত :  ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:৪২


গুরুদাসপুরে পরীক্ষামূলক রঙিন কপি চাষ করে সফলতা

সারাদেশ

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি


সবুজ পাতার ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপি। সাথে আছে বেগুনি রঙ্গেও বাঁধাকপি। ব্যতিক্রমী কিছু করার আগ্রহ, অধিক মুনাফা ও নিরাপদ পুষ্টি চাহিদা মেটাতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্যোগে পরীক্ষামূলক রঙিন কপি চাষ করে সফলতা পেয়েছেন গ্রামের কৃষক আব্দুল আলিম।

তিনি নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার বিলকাঠোর গ্রামের মৃত আব্দুল আজিজের ছেলে।

১৭ শতাংশ জমিতে ২ হাজার ২০০ চারা রোপনে ৬ হাজার টাকা খরচ করে উৎপাদিত রঙিন সবজি বিক্রি করেন দেড় লাখ টাকা বিক্রির আশা করছেন। বিপুল লাভ ও চাহিদা তার ব্যতিক্রমী ফসল উৎপাদনের কারণে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন তিনি।

কৃষক আব্দুল আলিমের এমন সফলতায় অন্য চাষিরা রঙিন স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন। স্থানীয় বাজারেও সাড়া ফেলেছে আলিমের রঙিন সবজি। বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে এই রঙিন ফুল ও বাঁধাকপি। একটু বেশি দাম হলেও ক্রেতারা আগ্রহের সাথে কিনছেন এই সবজি। খুচরা ও পাইকারি সবজি বিক্রেতা খুঁজছেন এই রঙিন সবজি।

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, ওই কৃষকের মাধ্যমে পরীক্ষামূলক হলুদ ক্যারোটিনা ও গোলাপি ভ্যালেন্টিনা জাতের রঙিন সবজি উৎপাদন উপজেলায় ও জেলায় প্রথম। ভালো ফলন আর দামের কারণে রঙিন ফুলকপি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। কৃষকের সাফল্যে স্থানীয় কৃষি বিভাগও খুশি। আগামীতে জেলা জুড়ে এ ফসলের চাষাবাদ ছড়িয়ে দিতে কাজ করবে কৃষি বিভাগ।

কৃষক মো. আব্দুল আলিম জানান, পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় রঙিন সবজি চাষাবাদ নিয়ে তিনি শঙ্কিত ছিলেন। সার্বক্ষণিক উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে তিনি সফল। জমিতে জৈব সার ও জৈব বালাইনাশক ব্যবহার করেছেন তিনি। এতে খরচ হয়েছে কম। প্রতিটি কপির গড় ওজন ছিল ২ কেজির ওপরে। সফলতা আগামীতে বড় পরিসরে রঙিন ফুলকপির চাষাবাদের পরিকল্পনা রয়েছে তার।

স্থানীয়রা জানায়, রঙিন ফুলকপি প্রথম দেখছেন তারা। এগুলো দেখতে যেমন সুন্দর, খেতেও সুস্বাদু। হলুদ-বেগুনী রঙের ফুলকপির দেখতে ও ছবি তুলতে তরুণ তরুণীর ভিড়ও দেখা গেছে। সেসব ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়েছেন অনেকে।

চাঁচকৈড় বাজারের সবজি বিক্রেতা মহরম আলী জানান, অন্য সবজির তুলনায় রঙিন পাতা ও ফুলকপির চাহিদা বেশি থাকায় বেশি লাভের কারণে তিনি রঙিন সবজি বিক্রি করছেন। এগুলো বিক্রি করে আনন্দও পান তিনি।

গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হারুনর রশীদ জানান, রঙিন ফুলকপি চাষে জৈব সার ব্যবহার করায় রাসায়নিক সারের ব্যবহার অনেকাংশে কম লাগে। রঙিন ফুলকপি সাধারণ ফুলকপির তুলনায় পুষ্টিগুণ বেশি থাকে। পুষ্টিগুণ আর ভিন্ন রঙের কারণে স্থানীয় বাজারে এর প্রচুর চাহিদা রয়েছে। এজন্য কৃষক দামও কিছুটা বেশি পাচ্ছেন। তাই আগামীতে এর প্রসার ঘটাতে কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের সব ধরনের সহযোগিতা দেয়া হবে।

পুষ্টিবিদ মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, রঙিন ফুলকপিতে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে, যা ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে।

এছাড়া এন্টিঅক্সিডেন্ট থাকায় শরীরের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে। এই রঙের সবজিতে অন্য রঙের সবজির তুলনায় প্রায় পঁচিশ গুণ বেশি ভিটামিন এ উপাদান থাকে। যা ভিটামিন এ, সি, আয়রন, খনিজ উপাদানের পরিমাণ সাদাকপির তুলনায় বেশি থাকে রঙিন সবজিতে।

এ সবজিতে আরো রয়েছে বিটা কেরোটিন, যা শরীরে ভিটামিন ‘এ’ তে পরিণত হয়। চোখ এবং ত্বককে ভালো রাখে। তাই মানুষের শরীরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ভাল রাখতে রঙিন শাকসবজি খাওয়া প্রয়োজন।

বিবার্তা/জনি/সউদ

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত