ছাত্রনেতাদের মধ্যে জঙ্গি ঢুকেছে কিনা, তাগিদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

| আপডেট :  ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৭  | প্রকাশিত :  ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৩:৪৭


ছাত্রনেতাদের মধ্যে জঙ্গি ঢুকেছে কিনা, তাগিদ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

বিবার্তা প্রতিবেদক


কোটা আন্দোলনে জড়িত কাউকে হয়রানি করা হবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। তবে, ছাত্রনেতাদের মধ্যে জঙ্গিগোষ্ঠীর কোনো এজেন্ট ঢুকেছে কিনা, তা খোঁজার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

২৬ জুলাই, শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যবিরোধী আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রীয় স্থাপনা ও সম্পত্তিতে হামলার অর্থ রাষ্ট্রের ওপর হামলা। দোষীরা যেন আইনের ফাঁকফোকর গলে বেরিয়ে যেতে না পারে, সেই বিষয়ে কঠোর সরকার।

তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সহিংসতা চালিয়েছে বিএনপি-জামায়াত ও জঙ্গি গোষ্ঠী। যার প্রমাণ সরকারের হাতে আছে। সরকার শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেয়ার পরও কারা জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের সহিংসতার সুযোগ করে দিয়েছে, এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ছাত্রনেতাদেরও খোঁজ নেয়া দরকার তাদের মধ্যে দেশবিরোধী অপশক্তি জঙ্গিগোষ্ঠীর কোনো এজেন্ট ঢুকেছে কিনা? আন্দোলনের নামে এক হাজারের বেশি গাড়ি জ্বালিয়ে দেয়া হয়েছে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের ময়লা পরিষ্কার করার গাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে।

হাছান মাহমুদ বলেন, ধৈর্য ধরলে সহিংসতা হতো না। ছাত্রদের দিয়ে কেউ যেন আবারও এমন ঘটনা না ঘটায়, সেজন্য সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।

তি‌নি বলেন, আমি রাষ্ট্রদূতদের ধ্বংসযজ্ঞ দেখানোর জন্য নিয়ে গিয়েছিলাম। ইতালিয়ান রাষ্ট্রদূত নিজে বলেছেন- ইটস শেইম। তার আইডি হ্যাক করা হয়েছে, বিভিন্ন রাষ্ট্রদূতের আইডি হ্যাক করা হয়েছে।

বিএন‌পির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম‌্যান তারেক রহমানের নি‌র্দেশনায় রাষ্ট্রের ওপর হামলা হয়েছে অভিযোগ করে হাছান মাহমুদ বলেন, রাষ্ট্রের ওপর এই হামলা তারেক রহমানের নির্দেশে হয়েছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তারেক রহমানের ভয়েস সরকারের হাতে এসেছে। তিনি বলছেন ‘কারফিউ ভঙ্গ করো, না হলে পদ ছাড়ো।’ বিএনপির আরেক নেতা বলেছেন, ‘তোমরা আন্দোলনে ঢুকে যাও, নৈরাজ্য সৃষ্টি করো।’ এভাবে কোনো রাজনৈতিক দল দেশের ক্ষতি করতে পারে না।

হাছান মাহমুদ বলেন, গতকাল একজন স্বীকারোক্তি দিয়েছে যে ছাত্রলীগ মারলে ৫ হাজার টাকা, পুলিশ মারলে ১০ হাজার টাকা। সামাজিক মাধ্যমে দেখেছেন আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী কীভাবে নির্দেশ দিচ্ছেন তাদের তরুণ নেতাকর্মীদের যে, এখানে ঢুকে পড়ো এবং তারেক রহমান নির্দেশ দিচ্ছে যে কারফিউ ভাঙো না হয় পদত্যাগ করো, সেই অডিও রেকর্ড সরকারের কাছে আছে।

ড. হাছান বলেন, গত বছরের ২৮ অক্টোবর যারা ঢাকায় অগ্নিসংযোগ ও নৈরাজ্যে জড়িত ছিল তাদের বড় বড় পদ দেয়া হয়েছে। এবারও বলে দেয়া হয়েছিল যারা এ ধরনের কাজ করবে, অগ্নিসংযোগ করবে, মানুষ মারবে, পুলিশ মারবে, ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে তাদেরকে বড় বড় পদ দেয়া হবে। এটি কোনো রাজনৈতিক দল? এটি একটি দেশবিরোধী সন্ত্রাসী সংগঠন।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ টেলিভিশন স্থাপিত হয়েছে ১৯৬৪ সালে। কিন্তু বাংলাদেশের ইতিহাসে বিটিভিতে কখনও হামলা, ভাঙচুর হয়নি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় বিটিভির কিছু কর্মকর্তাকে হত্যা করেছিল। কিন্তু কখনও বিটিভিতে হামলা হয়নি।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে ভাঙচুর প্রসঙ্গে হাছান মাহমুদ বলেন, দুর্যোগের সময়ে মানুষ যে মন্ত্রণালয়ে ছুটে যায়, সেই ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ে ভাঙচুর চালিয়েছে তারা। ঢাকাবাসীর গর্ব, দেশবাসীর গর্ব মেট্রোরেল জ্বালিয়ে দিয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা প্রথম থেকেই বলে এসেছি, সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমে সমাধান হবে। আমরা শেষ পর্যন্ত দেখেছি সর্বোচ্চ আদালতের মাধ্যমেই সমাধান হয়েছে এবং শিক্ষার্থীরা যা চেয়েছে তার চেয়ে বেশি পেয়েছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা ৫ শতাংশ থাকলেও আমার ধারণা এক থেকে দেড় শতাংশ পূরণ হবে, তাহলে বাকিটা মেধায় যাবে। আরেকটি বিষয় পরিষ্কার হওয়া দরকার কোটা থাকলেও সবাইকে মেধার মাধ্যমে যোগ্যতা প্রমাণ করতে হয়। সাধারণ ছাত্রছাত্রীকে ভুল বোঝানো হয়েছে। যদি শিক্ষার্থীরা একটু ধৈর্য ধরতো, তাহলে বিএনপি-জামায়াত এই সুযোগটা পেত না।

তিনি আরও বলেন, সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দ্বারা আন্দোলনকারীদের রক্ষা করেছে। লক্ষ্য করে দেখুন, কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে কেউ মারা যায়নি, সব বাইরে হয়েছে। অর্থাৎ, এর সঙ্গে কোটা সংস্কারের দাবির কোনো শিক্ষার্থী জড়িত নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাধারণ শিক্ষার্থীদের আশ্বাস দিয়েছেন কেউ হয়রানির শিকার হবে না।

মৃত্যু নিয়ে নানা গুজব ছড়ানো হচ্ছে ব‌লে মন্তব‌্য ক‌রে হাছান মাহমুদ বলেন, প্রত্যেকটি ঘটনার তদন্ত করে দায়ীদের বিচারের আওতায় আনা হবে, সেই প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিয়েছেন।

সেমিনারে উপ‌স্থিত ছিলেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মহিবুর রহমান, সংসদ সদস‌্য আওলাদ হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন প্রমুখ।

বিবার্তা/লিমন

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত