দায়িত্ব গ্রহণের আড়াই ঘণ্টা পর রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ

| আপডেট :  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭  | প্রকাশিত :  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:১৭


দায়িত্ব গ্রহণের আড়াই ঘণ্টা পর রাজশাহী কলেজ অধ্যক্ষের পদত্যাগ

সারাদেশ

বিশেষ প্রতিনিধি, রাজশাহী


গত ৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হিসেবে প্রফেসর ড. আনারুল হককে পদায়নের দিন থেকেই প্রতিবাদ শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন, বিক্ষোভ, স্মারকলিপি প্রদানসহ প্রশাসন ভবনে তালাও ঝুলিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা।

ধারাবাহিক আন্দোলনকে উপেক্ষা করে ১৭ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও ছাত্রদলের সহযোগিতায় দায়িত্ব গ্রহণ করতে কলেজে আসেন প্রফেসর আনারুল।

সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে এদিন দুপুর ২টার দিকে পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করে কলেজের উপাধ্যক্ষের কাছে জমা দেন তিনি।

জানা যায়, মঙ্গলবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও বিজিবিসহ ক্যাম্পাসে আসেন নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. আনারুল হক। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হোন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। এরপর ছাত্রদলের ১৫-২০ জন নেতা-কর্মী প্রশাসন ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। এ সময় নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ কক্ষে গিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

খবর পেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেঁটে পড়ে। দলে দলে প্রশাসন ভবনের সামনে এসে একত্রিত হন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এসময় ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বেরিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এরপর শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পদত্যাগ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নিরাপত্তায় ক্যাম্পাস ছাড়েন প্রফেসর ড. আনারুল হক।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রাজশাহী শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থাকার সময় ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে বোর্ডের ১৮ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০২০ সালে তিনটি মামলা করে দুদক। দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আত্মসাতের সমপরিমাণ টাকা বোর্ডের ফান্ডে জমা দেওয়ার মাধ্যমে আসামিরা মামলা থেকে অব্যাহতি পান। এতকিছুর পরও শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান হওয়ার তদবিরে উঠে পড়ে নামেন এই বিতর্কিত শিক্ষক। যা বিভিন্ন গণমাধ্যমেও উঠে আসে। রাজশাহী বোর্ড চেয়ারম্যানের স্বপ্ন পূরণ না হলেও তৎকালীন মেয়র লিটনের সুপারিশে পেয়েছেন বুদ্ধিজীবী কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ার। তাকে বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ, হাসিনা সরকারের দালাল আখ্যা দিয়ে দেশসেরা রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ পদায়নের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানায় শিক্ষার্থীরা। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন প্রফেসর আনারুল।

আন্দোলনের সমন্বয়কারী মহুয়া জান্নাত মৌ বলেন, রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থীরা যোগ্য অধ্যক্ষ ছাড়া সরকারের কোন দোসরকে আমাদের পবিত্র ক্যাম্পাসে জায়গা দেওয়া হবে না। এ কারণেই শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করছে। শিক্ষার্থীরা যখন আন্দোলন করছে সাবেক সরকারের দোসরদের বিরুদ্ধে সে সময় ছাত্রদলের কতিপয় নেতারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এটা কখনোই কাম্য নয়।

এ বিষয়ে ছাত্রদলের রাজশাহী কলেজ শাখার আহ্বায়ক আবির বলেন, এ আন্দোলনে আমরা প্রশাসন ভবনে তালা দেওয়ার আগ পর্যন্ত ছিলাম। এখন আমরা নবনিযুক্ত অধ্যক্ষকের যোগদানের পক্ষে, সে যে দলেরই হোক। কারণ অধ্যক্ষ না থাকায় শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্ভোগের সম্মুখীন হচ্ছেন। কলেজের সুবিধার স্বার্থে আমরা তাকে বসিয়েছি, যেন কলেজ সুবিধাটা পায়। আমরা চাচ্ছিলাম, অধ্যক্ষ অফিসে যোগ দিয়ে অফিসের কাজ চালাক, আমরা আমাদের মতো তাকে সরানোর চেষ্টা করি।

বিবার্তা/বাবুর/জেনি/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত