দেশে জংলী আইনের শাসন কায়েম করেছে সরকার: রিজভী

| আপডেট :  ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:৪৬  | প্রকাশিত :  ১৭ জানুয়ারি ২০২৪, ০১:৪৬


দেশে জংলী আইনের শাসন কায়েম করেছে সরকার: রিজভী

রাজনীতি

বিবার্তা প্রতিবেদক


বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তার অপরিসীম ক্ষমতায় আইন-কানুন, নিয়ম-নীতি, সংবিধান, শৃঙ্খলা সবকিছু পদতলে পিস্ট করে দেশে জংলী শাসন কায়েম করেছেন। তার বক্তব্য ভ্রান্ত ও মিথ্যাা তথ্যের সমষ্টি ছাড়া কিছুই নয়। তাদের উদ্ভট কর্মকাণ্ড দেখে মনে হচ্ছে পেছন থেকে কেউ ধাওয়া করছে আর তারা প্রাণ বাঁচাতে দৌড়াচ্ছেন উর্ধশ্বাসে।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, পূর্ব নির্ধারিত ফলাফলের ভোটরঙ্গ ও ভোট গণনা শেষ না হতেই ডামি এমপিদের নামে গেজেট, শপথ গ্রহণ, মন্ত্রী পরিষদের নাম ঘোষনা, মন্ত্রীদের শপথ—চারদিনেই অভাবনীয় দ্রুততায় বিশ্ব রেকর্ড করে ভেবেছে বিপদমুক্ত হলেন শেখ হাসিনা। তাকে মনে হচ্ছে অস্থির। ভীতি—ত্রাসে তাড়াহুড়ো করে ক্ষমতা নবায়ন করার অবৈধ শপথ নিতে গিয়ে আইন কানুন ও সংবিধানের কবর রচনা করা হয়েছে। এমনিতেই সংবিধানকে কাটাছেঁড়া করে শেখ হাসিনা আতম্ভরী ও ভাববিলাসী নিরঙ্কুশ ক্ষমতা নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, সংবিধানের ৭২ (৩) অনুচ্ছেদে বলা আছে, রাষ্ট্রপতি আগে ভেঙে না দিয়ে থাকলে প্রথম বৈঠকের তারিখ থেকে পাঁচ বছর অতিবাহিত হলে সংসদ ভেঙে যাবে। যেহেতু রাষ্ট্রপতি সংসদ ভেঙে দেননি, তার মানে ২৯ জানুয়ারি পর্যন্ত একাদশ সংসদের যারা সংসদ সদস্য ছিলেন, তারা সংসদ সদস্য হিসেবে আছেন।
দেশের আইন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই মুহুর্তে দেশে মিডনাইট একাদশ সংসদের ৩৫০ জন আর ডামি দ্বাদশ সংসদের ২৯৮ জন মোট ৬৪৮ জন শপথবদ্ধ এমপি রয়েছেন। এখন রাষ্ট্রপতি সংসদ ডাকলে দুই সংসদের সদস্যরাই তাতে যোগ দিতে পারেন। অথচ এটি সাংবিধানিকভাবে অবৈধ। আগামী ২৯ জানুয়ারি একাদশ সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়া অবধি এই অরাজকতা থাকবে। এটি একটি চরম সাংবিধানিক লংঘন। গণতন্ত্র ও দেশের স্বার্থে এই সময়ের মধ্যে দ্বাদশ অবৈধ সংসদ বাতিল করে দিতে পারে উচ্চ আদালত। জনগণের প্রত্যাশা শেষ আশ্রয়স্থল আদালত তাদের যুগান্তকারী ভূমিকা নিতে পারে।

রিজভী বলেন, বর্তমানে দুটি সংসদ বহাল অর্থাৎ প্রতি আসনে এখন দু’জন করে এমপি! সত্যিই সেলুকাস, কী বিচিত্র এই দেশ বানিয়েছেন শেখ হাসিনার ক্ষমতার লালসা। সংবিধান বিচ্যুত অবৈধ পন্থায় অবৈধ শপথে অবৈধভাবে জন্ম নেয়া অবৈধ সংসদের অবৈধ কার্যক্রম এবং অবৈধ মন্ত্রী পরিষদের কোন অন্যায্য আদেশ নির্দেশ দেশের জনগণ মানতে বাধ্য নয়। এই কারণেই আওয়ামী লীগের গোটা শাসনামল দুর্নীতি, মহাহরিলুট, মহাসম্পদ পাচার ও মহামাফিয়া চক্র কবলিত।

বিএনপির এই নেতা বলেন, দেড় দশক ধরে দেশের ভোট বঞ্চিত মানুষের প্রাণ তড়পানো মৌলিক দাবি—নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচন। কিন্তু শেখ হাসিনা ও তার লুটেরা পারিষদবর্গ সংবিধানের দোহায় দিয়ে একটির পর একটি বিনা ভোট, নিশি ভোট, ডামি নির্বাচন করে ক্ষমতা দখল করে দেশে জংলী আইনের শাসন কায়েম করেছে। শেখ হাসিনার যেমন খুশি তেমন শাসনের বাকশাল রাজ্যে বিচার বিভাগ, প্রশাসন, আইন—শৃঙ্খলা সব কিছুই তার অঙ্গুলি নির্দেশে পরিচালিত হচ্ছে। পেশিশক্তির বলে মানবাধিকার, সংবিধান ও গণতন্ত্রের জীবন্ত পোস্টমর্টেম করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, আপনি যদি আবারো প্রমাণ চান ৩০০ সংসদীয় নির্বাচনি আসনে শুধুমাত্র প্রার্থী আপনি এবং বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। নির্বাচনে সারাদেশে তারেক রহমান যদি আপনি শেখ হাসিনার চেয়ে দ্বিগুন ভোট বেশি না পান, তাহলে কথা দিচ্ছি, আমি রাজনীতি ছেড়ে দেব। শেখ হাসিনাকে বলছি, সাহস থাকলে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করুন।

বিবার্তা/রুবেল/মাসুম

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত