নোয়াখালীতে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ ও খাস জমি দখলের প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল

| আপডেট :  ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৮  | প্রকাশিত :  ০৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৪৮


নোয়াখালীতে ভূমিহীনদের উচ্ছেদ ও খাস জমি দখলের প্রতিবাদে ঝাড়ু মিছিল

সারাদেশ

নোয়াখালী প্রতিনিধি


নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের সোনাকান্দি গ্রামে ভূমিহীনদের নামে বন্দোবস্ত দেওয়া জমির ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে তা দখলের চেষ্টা, ভূমিহীনদের জোর পূর্বক উচ্ছেদ ও বাড়ি-ঘর ভাঙচুরের প্রতিবাদে মানববন্ধন এবং ঝাড়ু মিছিল করেছে ভুক্তভোগী সহস্রাধিক নারী-পুরুষ।

৪ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার দুপুরে সোনাকান্দি গ্রামের সাহাপুকুর পাড়ে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

মানববন্ধন শেষে জায়গা দখলকারী প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ঝাড়ু নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে মিছিল করে তারা। একইসাথে যে কোনো মূল্যে দখলদারদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন ভুক্তভোগীরা।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ছাতারপাইয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড সোনাকান্দি মৌজার ৪ একর ২২ শতাংশ সম্পত্তির মালিকানা ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজনের। মুক্তিযুদ্ধের আগে ওই সম্পত্তি হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন রেখে অন্যত্র চলে যান। তখন রেখে যাওয়া ওইসব সম্পত্তি স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যবহার করতেন। পরবর্তীতে সরকারি জরিপে সম্পত্তিগুলো সরকারের খাস খতিয়ানভুক্ত করে রেকর্ড করা হয়। এরই মধ্যে সম্পত্তির মধ্যে গড়ে ওঠে ছাতারপাইয়া বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় নামের একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, একটি মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। এক একর জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হয় ২০জন ভূমিহীনকে। ওই সম্পত্তিতে থাকা দুটি পুকুর ব্যবহার করতেন স্থানীয় বাসিন্দারা। বন্দোবস্ত পাওয়ার পর ওইসব ভূমিহীনরা সেখানে ঘর-বাড়ি করে বসবাস করতে শুরু করেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, কিন্তু কয়েক বছর আগে স্থানীয় বাসিন্দা ও সাবেক এক সরকারি কর্মকর্তা খাসকৃত সম্পত্তি নিজের দাবি করে ভূমিহীন পরিবারকে উচ্ছেদ করে জায়গাটি দখলের চেষ্টা করে। সর্বশেষ প্রায় মাসখানেক আগে ভাড়াটিয়া লোকজনের মাধ্যমে খাস জায়গার পুকুর ভরাট করার চেষ্টা করেন এবং জনগণের চলাচলের রাস্তা কেটে ফেলে। এতে বাধ্য হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যরা রাস্তা নেমে এসেছেন। দখলদারদের কয়েক বার ধাওয়া দিয়েছেন স্থানীয়রা।

ছাতারপাইয়া ২নং ওয়ার্ডের সদস্য (মেম্বার) মো. দুলাল উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, গত ৫-৬ বছর আগে অনেকটা আকস্মিকভাবে স্থানীয় বাসিন্দা ও সরকারের অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি কর্মকর্তা সোনাকান্দি মৌজার ১২৯, ১১৪, ১১৫, ১২৪, ১২৫, ১৫৩ দাগের চার একর ২২ শতাংশ জমি নিজের বলে দাবি করেন। তিনি প্রশাসনের সহায়তা নিয়ে ভূমিহীনদের অনেককে উচ্ছেদ করে ওই জায়গা নিজের দখলে নেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দাদের প্রতিরোধের মুখে পুরো জায়গা দখলে নিতে পারেননি। এরই মধ্যে মাসখানেক আগে ওই অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা পার্শ্ববর্তী সংসদীয় এলাকার সাবেক ও বর্তমান দুই প্রভাবশালী জনপ্রতিনিধির নেতৃত্বে হোন্ডা বাহিনী নিয়ে ভূমিহীনদের জায়গাটি দখল করার চেষ্টা করেন। কিন্তু স্থানীয় প্রতিরোধের মুখে তাঁরা ব্যর্থ হন।

ইসমাইল নামের একজন বলেন, ওই জায়গার বাসিন্দারা যাতে বিদ্যুৎ ব্যবহার করতে না পারেন, সে জন্য প্রায় এক মাস আগে তাদের চলমান বিদ্যুৎ লাইনের কাজ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। দখলকারী গাড়ি বোঝাই করে বালু ফেলে পুকুর ভরাট করার চেষ্টা করেন। তারা জনগণের চলাচলের রাস্তাও কেটে দেন। অথচ ওই রাস্তা দিয়ে পুরো গ্রামের বাসিন্দারা চলাচল করেন।

বিবার্তা/সুমন/এমজে 

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত