ব্যক্তি পর্যায়ে কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের

| আপডেট :  ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৬:০৩  | প্রকাশিত :  ২৩ আগস্ট ২০২৪, ০৬:০৩


ব্যক্তি পর্যায়ে কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের

বিবার্তা প্রতিবেদক


সহিংস ও আধিপত্যবাদী পথে ব্যক্তি পর্যায়ে কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

২৩ আগস্ট, শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো ওই বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্কের পক্ষে সাক্ষর করেন অধ্যাপক গীতি আরা নাসরীন।

বিবৃতিতে বলা হয়, গত ১৬ বছর স্কুল থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান কিংবা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক পদে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন, সর্বাগ্রে তাদের দলীয় পরিচয় এবং আনুগত্য বিবেচনা করা হয়েছে। কিছু ব্যতিক্রম বাদে, এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনিক কাজে দায়িত্বপ্রাপ্তরা গণঅভ্যুত্থানে সদ্যবিদায়ী সরকারের ক্ষমতাবলে হয়ে উঠেছিলেন স্বেচ্ছাচারী এবং স্বৈরাচারী।

নিজেদের চারদিকে তারা তাদের অনুগত শিক্ষকদের নিয়ে এমন একটি সুবিধাভোগী-বলয় তৈরি করেছিলেন যে, গণঅভ্যুত্থানের পরপরই তাদের ব্যাপারে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকবৃন্দের আস্থা ও বিশ্বাসের সংকট তৈরি হয়েছে। তাদের পৃষ্ঠপোষক সরকারের পতনের পর দেশের প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান পদত্যাগ করেছেন বা শিক্ষার্থীদের চাপে পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন। এটা যেমন স্কুল-কলেজের ক্ষেত্রে সত্য, তেমনই সত্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্ষেত্রেও।

এমতাবস্থায় স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রশাসনিক নেতৃত্বের ভয়াবহ শূন্যতা তৈরি হয়েছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ শূন্যতা পূরণে অন্তর্বর্তী সরকার দ্রুত তৎপর না হওয়ায়, কিছু অগ্রহণযোগ্য ও অনভিপ্রেত ঘটনা আমরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দেখেছি বা দেখছি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। আবার অনেক সুযোগসন্ধানী চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিকে কাজে লাগিয়ে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটাতেও এরকম অগ্রহণযোগ্য ঘটনা ঘটাতে পারেন, যেহেতু তারা জানেন যে এ অবস্থায় তাদেরকে কোনো ধরনের জবাবদিহিতার আওতায় আনা যাবে না।

সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায়, শিক্ষার্থীদের জমে থাকা ক্ষোভ প্রকাশ বা অভিযোগ তাৎক্ষণিকভাবে নিরসনের কোনো উপায় না থাকায় এমন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটছে বলে মনে করে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

বিবৃতিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক বলেন, যাদের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের হয়রানি ও নিপীড়নের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ আছে, তাদের প্রাতিষ্ঠানিক বা দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনতে গেলে প্রশাসনিক শূন্যতা দ্রুত দূর করা প্রথম কাজ হওয়া উচিত। নইলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে চলমান পরিস্থিতি সামলানো আরো কঠিন বা জটিল হয়ে পড়তে পারে।

তবে শিক্ষার্থীসহ সকলকেই ক্ষোভের বশবর্তী হয়ে সহিংস ও আধিপত্যবাদী পথে ব্যক্তি-পর্যায়ে কাউকে হেনস্তা না করার আহ্বান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। এমন আহ্বান সরকারের তরফ থেকেও ইতোমধ্যে করা হয়েছে, যা প্রশংসাযোগ্য।

সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক অন্তর্বর্তী সরকারকে আহ্বান জানিয়েছে যেন তাঁরা সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যথাযথভাবে এবং গ্রহণযোগ্য উপায়ে প্রশাসনিক শূন্যতা পূরণে দ্রুত ব্যবস্থা নেন।

অন্যদিকে, শিক্ষকেরাও যেন শিক্ষার্থীদের সাথে যে আস্থাহীনতা এবং অবিশ্বাসের সম্পর্কের বিকাশ গত ১৬ বছরে হয়েছে, তা নিরসনে তৎপর হয়ে শিক্ষার্থীদের সাথে যোগাযোগ করেন এবং তাদের অভিযোগ ও ক্ষোভ কমাতে দ্রুতই প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রশাসনিক উদ্যোগ গ্রহণ করেন, সে আহ্বানও জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক।

বিবার্তা/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত