ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অরুয়াইলে অর্ধকোটি টাকার ঘাটের সমাধি, বাজারে ভোগান্তিতে মানুষ!

| আপডেট :  ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৬:৩৩  | প্রকাশিত :  ২৫ জানুয়ারি ২০২৪, ০৬:৩৩


ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অরুয়াইলে অর্ধকোটি টাকার ঘাটের সমাধি, বাজারে ভোগান্তিতে মানুষ!

সারাদেশ

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি


অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত ঘাটটি এখন মাটির নিচে! এত বড় হাট, অথচ কোন ঘাট নেই। তাই চরম ভোগান্তি পড়তে হয় হাট ও বাজারে আসা হাজারো মানুষের। কেউ জানে না এই ভোগান্তির শেষ কবে।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় কথাগুলো বললেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার অরুয়াইল বাজারের এক ব্যবসায়ী। তিনিসহ বাজারের অসংখ্য ব্যবসায়ী জানান, অরুয়াইল বাজারের পূর্ব পাশ দিয়ে মেঘনা-তিতাস নদীর পশ্চিম পাড়ে বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে নির্মিত ৬৫ লাখ টাকার ঘাটটি মাটির নিচে চাপা পড়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ঘাটের উপরে একটি টং, বড় গাছের গুঁড়ি আর বাঁশ রাখা হয়েছে। অরুয়াইল বাজারের এত বড় হাটে কোনো ঘাট নেই। তাই বাজারে আসা হাজার হাজার মানুষের পণ্য ওঠানামা ও বাজারে বসবাসকারী পরিবারগুলোকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

প্রভাবশালীদের ভয়ে স্থানীয় লোকজন মুখই খুলতে চাননি প্রথমে। পরে ব্যবসায়ীদের তথ্য মতে দেখা যায়, উপজেলার তিতাস-মেঘনা নদী তীরে গুরুত্বপূর্ণ অরুয়াইল বাজারের সরকারি ঘাটটি দোকান বসিয়ে দখল করে বহাল-তবিয়তে আছেন। দখল নিয়ে এলাকায় মুখরোচক গল্প প্রচলিত আছে। এর আগেও অনেক গণমাধ্যমে এ নিয়ে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা সভায়ও দখল নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে।

ময়লা আবর্জনা ও বাঁশ ফেলে ঘাটের অবশিষ্ট জায়গাটুকুও দখল করা হয়েছে। ময়লা আবর্জনায় ভরাট হওয়ার ফলে ঘাটটি এখন আর ব্যবহার করতে পারছেন না নিরীহ ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণ। সরকারি ঘাটটি দখলদারদের হাত থেকে উদ্ধারের দাবি করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান, বাজার কমিটি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

ঘাট দখলের বিষয়ে (৭০) বছরের রমজান আলী বলেন, সরকারের দেওয়া জনগণের ঘাটলা এখন ’কবর’ হয়ে গেছে। ময়লা-আবর্জনা ও বাঁশ ফেলে ঘাটলা-নদী দখল নিতে ভূমিদস্যুরা বেপরোয়া।

অরুয়াইল বাজার ব্যবসায়ী ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও অরুয়াইল ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোশাররফ হোসেন ভূইঁয়া বলেন, ‘দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে বাজারে ব্যবহারের মত কোন ঘাট নেই। আমি বাজারবাসীর পক্ষ থেকে পুরানো ঘাট উদ্ধারের দাবি  জানাই। নৌপথে নৌকা বা জাহাজ থেকে মালামাল লোড-আনলোড করার জন্য বাজারের বৃহৎ স্বার্থে বিশ্বব্যাংক প্রায় (৬৫) লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারি ঘাটলা নির্মাণ করেছিল। অরুয়াল বাজারের ভূমিদস্যুদের দখল থেকে রক্ষা পায়নি সরকারি এ ঘাটলা। আপনারা জানেন, এর আগেও সাংবাদিকরা আমার বক্তব্য নিয়েছে।

তিনি বলেন, আমি জানি আমাদের জেলা প্রশাসক স্যার অত্যন্ত সুদক্ষ অফিসার। ইউএনও স্যারসহ তারা যদি উদ্যোগ নেন, তাহলে ঘাটলাটি উদ্ধার করা সম্ভব। তিনি আরও বলেন, ঢাকায় বুড়িগঙ্গা নদীর পাড়ে বড় বড় বিল্ডিং যদি ভেঙে দিতে পারে সরকার- তাহলে এটা কঠিন কিছু না। অরুয়াইল বাজারের ঘাটলা না শুধু ভূমিদস্যুদের দখলে সরকারি সকল খাসজমি উদ্ধার করতে হবে। আমার একটি স্বপ্ন- সরকারি ঘাটলা দখল মুক্ত করে অরুয়াইল বাজারের সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার করে ভূমিদস্যু মুক্ত ইউনিয়ন গড়তে হবে।

এ ব্যাপারে সরাইল উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মেজবা উল আলম ভূইঁয়া বলেন, মাটির নিচে ঘাটলার খোঁজ নেওয়া হবে। সরকারি সম্পত্তি কেউ দখল করতে পারবে না। জনস্বার্থে সরকারের স্থাপনাগুলো যারা দখল করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। খোঁজ খবর নিয়ে সরকারি ঘাটলাটি উদ্ধারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বিবার্তা/নিয়ামুল/রোমেল/সউদ

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত