সংবিধান সচল না রহিত সুস্পষ্ট নয়, শীঘ্রই সমাধান চাই: এবি পার্টি

| আপডেট :  ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০  | প্রকাশিত :  ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫০


সংবিধান সচল না রহিত সুস্পষ্ট নয়, শীঘ্রই সমাধান চাই: এবি পার্টি

রাজনীতি

বিবার্তা প্রতিবেদক


গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সাংবিধানিক সংকট ও কাঠামো বিষয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেছে এবি পার্টির আইনজীবীদের সংগঠন এবি পার্টি ল’ইয়ার্স।

৩ সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার বিকেল ৪ টায় বিজয় নগরস্থ এবি পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে আইনজীবী নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সংবিধান সচল রয়েছে না রহিত করা হয়েছে তা সুস্পষ্ট নয়। তারা সাংবিধানিক অস্পষ্টতা শীঘ্রই দুর করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, সংবিধানের বিভিন্ন অনুচ্ছেদ “randomly pick and choose” এর ভিত্তিতে চলছে। যা যেকোনো সময় জটিলতা তৈরি করতে পারে।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ ও সংবিধানের বিভিন্ন অসংগতি তুলে ধরে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এবি পার্টির সহকারী সদস্যসচিব ও এবি লইয়ার্সের যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ ও ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভুইয়া।

ব্যারিস্টার সানী বলেন, গত ২৫ আগস্ট প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে যে ভাষণ দেন তাতে গণতন্ত্র, মানবাধিকার, বিদেশনীতিসহ অনেক বিষয় উঠে আসলেও সংবিধান সম্পর্কে কোন বক্তব্য আমরা পাইনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের সংবিধান সচল রয়েছে কিংবা রহিত করা হয়েছে কোনোটাই সুস্পষ্ট নয়। সরকারকে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা দেয়া প্রয়োজন। অসংগতিগুলো এখনই দূর করা দরকার তা না হলে মারাত্মক জটিলতা তৈরি হতে পারে। কাজেই এটা নিয়ে অতি দ্রুত একটি প্রেসিডেন্টশ্যাল অর্ডিন্যান্স জারি করা দরকার।

তিনি আরো বলেন, আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায় গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে গঠিত সরকার জন-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন অনুসারে সংবিধানের আমূল পরিবর্তন করে কিন্তু এই সরকারের নিকট আমরা সে-ধরনের কোন কিছু দেখতে পাচ্ছি না।

এসময় ব্যারিস্টার সানী সংবিধানের নিম্নোক্ত বিষয়গুলোর সংশোধনী প্রস্তাব করেন;

১. আর্টিকেল ৭বি. সংবিধানের মৌলিক বিধান গুলো সংশোধন যোগ্য নয়
২. আর্টিকেল ৭০. রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ভোট দিলে বা দলত্যাগ করলে সংসদ সদস্য পদ বাতিল।
৩. রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য
৪. বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়া (বিচার বিভাগ সংস্কার)
৫. গণভোট

সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে ব্যারিস্টার ফুয়াদ বলেন, মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী যে সংবিধান জনগণের আকাঙ্ক্ষা ছিলো তার কোন প্রতিফলন না ঘটিয়ে একজন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে ৭২ এর সংবিধান প্রণয়ন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণা পত্রে সুস্পষ্ট উল্লেখ ছিলো এই রাষ্ট্র হবে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচারের ভিত্তিতে। কিন্তু আমরা এমন একটা সংবিধান পেয়েছি যার মাধ্যমে গণতান্ত্রিক পন্থায় একটি স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়। এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ ৭২ থেকে ৭৫ এর আওয়ামী লীগ শাসনামল এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বিগত রেসিস্ট, গণহত্যাকারী সরকার।

তিনি বলেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী পরিস্থিতিতে জন-আকাঙ্ক্ষার আলোকে সংবিধানের আমূল পরিবর্তন এখন সময়ের দাবি।

তিনি আরো বলেন,  সংবিধান অক্ষুণ্ন রাখার দোহাই যেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের সংস্কারকে ভবিষ্যতে ব্যর্থ করে না দেয়।

এসময় সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আলতাফ হোসাইন, এবি ল-ইয়ার্সের যুগ্ম সদস্য সচিব ও দফতর সম্পাদক অ্যাডভোকেট আলী নাসের খান, সহকারী সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট তারেক আব্দুল্লাহ, অ্যাডভোকেট শরণ চৌধুরীসহ এবি পার্টি ল-ইয়ার্সের নেতৃবৃন্দ।

বিবার্তা/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত