সরকারি কর্মচারিদের ১৬ অফিসিয়াল শিষ্টাচার

| আপডেট :  ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২:১৩  | প্রকাশিত :  ১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২:১৩

১। যেকোনো অনুষ্ঠানে কর্মচারীর স্পাউস (স্বামী/স্ত্রী) প্রথম অগ্রাধিকার পাবে। তাকে রিসিভ করা, সম্ভব হলে প্রথম সারিতে বসানো এবং উপযুক্ত সম্মান দেখাতে হবে।

২। হ্যান্ডশেক করার সময় সিনিয়র আগে হাত বাড়ানোর পর তারপর জুনিয়র অফিসার হাত বাড়াবে। হ্যান্ডশেক হবে দুজনে দাঁড়িয়ে, চোখের দিকে তাকিয়ে, হাতে হাল্কা চাপ দিয়ে ও হাত পুরোপুরি উলম্বভাবে রেখে। সিনিয়র যতক্ষণ হাত নাড়াবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত হ্যান্ডশেকের স্থায়িত্ব হবে। লেডি কর্মচারীর সাথে কখনো আগ বাড়িয়ে হ্যান্ডশেক করা যাবে না, সেটা যে দেশেরই হোক।

৩। একজন কর্মচারী কখনোই আরেকজন কর্মচারীকে দাঁড় করিয়ে রাখবেন না। তাকে সবসময় বসতে দিবে। কোন সিনিয়র কর্মচারী যদি এই ম্যানারস না জানেন, তাহলে জুনিয়র কর্মচারীর দায়িত্ব হবে তাকে বলা, স্যার বসতে পারি? এই বলে নিজেই বসে পড়া।

৪। একজন কর্মচারীর কখনোই অফিসিয়াল গাড়ির একদম পেছনে সিটে বসবে না। সবসময় মাঝের সিটগুলোতে বসবে। গাড়িতে জায়গা না হলে সে পরে যাবে কিংবা অন্যভাবে যাবে, কিন্তু পেছনে বসবে না… ঊর্ধ্বতন বস বা অন্য কারো অফিসিয়াল গাড়িতে উঠার সময়েও না। পেছনের সিট অধঃস্থন কর্মচারীদের জন্য। একজন কর্মচারী কখনোই গাড়ির সামনে ড্রাইভারের পাশের সীটেও বসবে না।

৫। একজন কর্মচারী সবসময় ওয়েল ড্রেসড হবে… দাড়ি থাকলে পুরোপুরি থাকবে, না থাকলে ক্লিন শেভড হতে হবে। চুলগুলো এলোমেলো থাকা যাবে না, পকেটে চিরুনি থাকবে। ডাক্তারগণ রুগী দেখার সময়েও চেষ্টা করতে হবে ফরমাল ড্রেসে থাকার যাতে কে ডাক্তার, কে ওয়ার্ডবয় লোকেরা সহজেই বুঝতে পারে।

৬। কাঁটা চামুচ দিয়ে খেতে পারলে শব্দ ছাড়াই কাঁটা চামুচ দিয়ে খাবে। না পারলে হাত ধুয়ে এসে হাত দিয়েই ভদ্রভাবে খাবে। কিন্তু অর্ধেক কাঁটা চামচের, অর্ধেক হাত কিংবা কাঁটা চামচের টুংটাং শব্দ করে খাওয়া যাবে না।

৭। খাওয়ার আগে মেনু চেক করতে হবে। বুফে সিস্টেম হলে কখনোই নিজের টেবিলের প্লেট নিয়ে খাবার আনতে যাওয়া যাবে না। বুফেতে খাবার দেওয়ার সময় যে প্লেট থাকে, সেটা নিতে হবে। খাবার পরিমিত নিতে হবে আর একবার খাবার নিয়ে টেবিলে আসার পর অফিসার দ্বিতীয়বার খাবার নিতে বুফেতে যাবে না। ইশারায় ওয়েটারকে ডেকে খাবার দিতে বলবে। গরম খাবার ফু দিয়ে ঠাণ্ডা করা যাবে না। ন্যাপকিন হাত মুছার জন্য না, উরুর উপর কাপড়কে রক্ষা করার জন্য। তাই এটি থাকবে উরুর উপর। খাবারের দিকে মুখ যাবে না, মুখের দিকে খাবার আসবে। খাবার টেবিলে অফিসিয়াল, পলিটিক্স, ধর্ম বা বিরক্তিকর কোন কথা বলা যাবে না।

৮। ফরমাল লাঞ্চ কিংবা ডিনারে চিফ গেষ্ট খাওয়া শুরু করলেই কেবল অন্যেরা শুরু করবেন। আবার তিনি শেষ করার সাথে সাথে খাওয়া বন্ধ করতে হবে, অন্যদের শেষ না হলেও। কারো আয়োজনে ফর্মাল ডিনারে গেলে হোস্টকে কিংবা বাসায় গেলে খাওয়ার পর ভাবীকে অবশ্যই ধন্যবাদ দিতে হবে।

৯। কাউকে ফোন করলে আগেই নিজের পরিচয় দিতে হবে।
১০। কোন কথা বা বক্তব্য দেওয়ার সময় সেই বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। অস্পষ্ট বা অমার্জিত কোন কথা একজন অফিসার বলবে না।

১১। স্টেজে কনফিডেন্স এর সাথে দাঁড়াতে হবে। ডায়াসে সোজা ও রিল্যাক্সড হয়ে দাঁড়াতে হবে। হ্যান্ড মুভমেন্ট, আই কন্ট্যাক্ট, ভয়েস মডুলেশন করতে হবে।

১২। পূর্বানুমতি ছাড়া একজন কর্মচারী আরেকজনের বাসায় বা অফিসে হুটহাট করে যাবে না। আগেই ফোন বা অন্য কোন মাধ্যমে জানিয়ে তারপর যাবে। কোন সিনিয়র কর্মচারীর বাসায় গেলে বাচ্চাদের না যাওয়াই ভাল। কারণ তারা কান্নাকাটি, দুষ্টামি বা কোন জিনিস ভেঙ্গে ফেলতে পারে, যেটা বিব্রতকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে।

১৩। একজন কলিগ আরেকজন কলিগ বা অফিস স্টাফকে জনসম্মুখে ভুল ধারা, বকা-ঝকা করা কিংবা তার সাথে তর্কে লিপ্ত হবে না। পরে ব্যক্তিগতভাবে তার সাথে আলোচনা করে নিতে হবে কিংবা বকা-ঝকা করতে হবে।

১৪। বস ফ্রেন্ডলি আচরণ করলেও, বসের সাথে জুনিয়র কর্মচারী ফ্রেন্ডলি আচরণ করবে না। সবসময় অফিসিয়াল ভাব ধরে রাখবে।

১৫। কোন সিনিয়রের রুমে বসে থাকার সময় অন্যকোন সিনিয়র কর্মচারীর আগমন ঘটলে চেয়ার ছেড়ে উঠে (যদি জায়গা না থাকে) তাকে বসতে বলতে হবে।

১৬। কোন সিনিয়র ফোন করলে তার কথা শেষ না হওয়া পর্যন্ত লাইন কেটে দেয়া যাবে না।

* যদিও অনেক প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীগণ প্রশিক্ষণের অভাবে বা নিজের অহমিকার অভাবে এই কাজগুলো ফলো করেন না।

সম্পাদনায়: উজ্জ্বল প্রধান

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত