সাদিক এগ্রোর যোগসাজশে অনিয়ম-দুর্নীতি, কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে দুদকের অভিযান

| আপডেট :  ০১ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৭  | প্রকাশিত :  ০১ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৭


সাদিক এগ্রোর যোগসাজশে অনিয়ম-দুর্নীতি, কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে দুদকের অভিযান

জাতীয়

বিবার্তা প্রতিবেদক


ছাগলকাণ্ডে আলোচিত সাদিক এগ্রোর সঙ্গে যোগসাজশ করে বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে ঢাকার সাভারে কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অভিযান চলাকালে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র হাতে এসেছে দুদকের।

১ জুলাই, সোমবার বেলা পৌনে ১টায় অভিযান শুরু করে সংস্থাটি।

দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে ৯ সদস্যের একটি এনফোর্সমেন্ট টিম গঠন করে কেন্দ্রীয় গো-প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে অভিযান শুরু করা হয়। অভিযানের নেতৃত্ব দেন দুদকের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ।

দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ জানান, ২০২১ সালে ১৮টি আমেরিকান ব্রাহামা জাতের গরু বাংলাদেশে এনে তোলপাড় সৃষ্টি করেন ইমরান হোসেন। কিন্তু ব্রাহমা জাতের গরু আমদানি নিষিদ্ধ থাকায় সেগুলো বাজেয়াপ্ত করে ঢাকা কাস্টমস। গরুগুলো প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাধ্যমে সাভারের কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারে রাখা হয়। পরে রহস্যজনকভাবে গরুগুলো চলে যায় ইমরানের সাদিক এগ্রোতে।

এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় গো প্রজনন ও দুগ্ধ খামারের পরিচালক ডা. মনিরুল ইসলাম জানান, গরুগুলো ফ্রিজিয়ান জাতের বলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে আমদানি করেছিলেন সাদিক এগ্রোর স্বত্বাধিকারী মো. ইমরান হোসেন। বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে ম্যানেজ করে মাংস বিক্রির শর্তে ব্রাহমা জাতের গরুগুলোকে কৌশলে নিলামে তুলে সাদিক এগ্রোতে নিয়ে যান ইমরান। নিলামে বিক্রি হওয়া গরুগুলো জবাই করে সেই মাংস ঈদুল ফিতরের সময় সুলভ মূল্যে বিক্রির কথা থাকলেও তা করেনি তিনি। পরিবর্তে কম দামি গরুর মাংস বিক্রি করেন এবং ব্রাহমা জাতের সেই গরুগুলো উচ্চ বংশের গরু বলে কোটি টাকা দাম হাঁকেন।

একইভাবে যশোর থেকে সংগ্রহ করা একটি ছাগলের দাম ১৫ লাখ টাকা হাঁকান ইমরান হোসেন। পরে মুশফিকুর রহমান ইফাত নামে এ তরুণ ওই ছাগলটি ১২ লাখ টাকায় কিনে নিলে সামনে চলে আসে তার বাবা মতিউর রহমানের নাম, যিনি রাজস্ব বোর্ডের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা। সঙ্গে বের হয়ে আসে তার নিজের ও স্ত্রী-সন্তানদের নামে গড়া অবৈধ সম্পদের পাহাড়ের খবরও। এরই মধ্যে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয় সাদিক এগ্রোর স্বত্বাধিকারী ইমরান হোসেন এবং তার উচ্চবংশীয় পশুর খামার নিয়েও।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন নীতিমালার আলোকে যে-সব গরুর জাত পালনের অনুমতি আছে, সেখানে ব্রাহমা জাতের কোনো অনুমোদন নেই। ফলে এই জাত পালনের কোনো অনুমোদন আমরা দিইনি। কিন্তু অবৈধভাবে আনা ব্রাহমা গরুগুলো ছিল প্রজনন অনুপযোগী। ফলে নিয়ম অনুসারে এসব প্রজনন অনুপযোগী গরু খামারিদের সংগঠনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কোনো ব্যক্তিকে দেওয়া হয়নি। কিন্তু ইমরান কৌশলে এসব গরু নিজের নামে নিয়ে নিয়েছেন। তার ওপর শর্তানুযায়ী এসব গরুর মাংস বিক্রি না করে কোরবানির পশু হিসেবে বাজারেও বিক্রি করেছেন। ২০২৩ ও ২০২৪ সালের প্রাণিসম্পদ সেবা সপ্তাহ ও প্রদর্শনীতে প্রকাশ্যে ইমরান এই ব্রাহমা জাতীয় নিষিদ্ধ গরু উঠিয়েছিলেন

বিবার্তা/জবা

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত