হতাশ ১১-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীরা

| আপডেট :  ২২ মার্চ ২০২২, ১০:৪৪  | প্রকাশিত :  ২২ মার্চ ২০২২, ১০:৪৪

বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় আবারও সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য সৃষ্টি করা হলো বলে মনে করছেন ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম-এর সভাপতি মো. লুৎফর রহমান।

বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসের কার্যালয়ের কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তনের অর্থ বিভাগের সম্মতির প্রেক্ষিতে এ মন্তব্য করেছেন তিনি।

এক লিখিত বিবৃতিতে, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মনের পূঞ্জিভূত অসন্তোষ ও বিরাজিত ক্ষোভ নিরসনকল্পে কর্মচারী বান্ধব সরকারের কাছে বার বার দাবি জানিয়েও কোন ফল পাচ্ছেন না বলে হতাশা প্রকাশ করেন লুৎফর রহমান। তিনি বলেন, ‘১৯৯৫ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়েলর প্রজ্ঞাপন নং- সম/সওব্য/টিম-১(সংস্থাপন-সাংকাঃ)-২৪/৯৪-১৭০,তারিখ ১৩-০৯-১৯৯৫খ্রিঃ মোতাবেক তৎকালীন সরকার সচিবালয়ের উচ্চমান সহকারী, শাখা সহকারী, প্রধান সহকারী, বাজেট পরীক্ষকদের (হিসাব রক্ষক) প্রশাসনিক কর্মকর্তা এবং সাঁটলিপিকারদের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে পদ পরিবর্তন করেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের বিষয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বাংলাদেশ সচিবালয়ের ন্যায় সচিবালয়ের বাহিরের অন্যান্য সকল দপ্তরের সমপর্যায়ের পদগুলোর পদবী পরিবর্তন করে প্রশাসনিক কর্মকর্তা করাসহ বেতন ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণের জন্য তিনবার সুপারিশ করা সত্ত্বেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। বৈষম্য দুর না করেই আবার বর্তমান ২০২২ সালে জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের প্রশাসন-৩ শাখার স্মারক নং-০৫.০০.০০০০.১১২.১৫.০০১.২১.১২৯ তারিখ- ১৬.০৩.২০২২খ্রিঃ মোতাবেক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রনালয়ের ব্যয় ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ-২ এর স্মারক নং-০৭.১৫২. ০১৫. ০৫.০০.০০২.২০১৩-৩৪২,তারিখ-২১/০৩/২০২২খ্রিঃ মুলে বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়, জেলা প্রশাসকের কার্যালয় এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় কর্মচারীদের বিভিন্ন পদের পদনাম পরিবর্তন এর বিষয়ে অর্থ বিভাগের সম্মতি জ্ঞাপন করা হয়েছে।

তিনি প্রশ্ন করে বলেন, নির্দিষ্ট কিছু কার্যালয়ের কর্মচারীদের পদবী পরিবর্তন করা হবে কেন? অন্যান্য দপ্তর অধিদপ্তরের যেমন-শিক্ষা অধিদপ্তর, কৃষি অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের আওতাধীন পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট যেমন এসবি, সিআইডি, বিভিন্ন মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত, পুলিশ অধিদপ্তর এবং এসপি অফিসে কর্মরত কর্মচারী, স্থানীয় সরকার অধিদপ্তর, ডাক বিভাগসহ আরো যে সমস্ত দপ্তর, অধিদপ্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মচারীরা কি অপরাধ করেছে যে তাদের পদনাম পরিবর্তন করা হলো না।

তিনি মনে করেন জাতির পিতার কন্যাকে সম্পূর্ন আড়ালে রেখে কোন এক স্বার্থান্বেষী মহল বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। তা না হলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় কর্মচারীদের মাঝে এভাবে বৈষম্য সৃষ্টি করার কথা নয়।

“১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম” এর পক্ষ থেকে এহেন বৈষম্য সৃষ্টির জোর প্রতিবাদ জানান তিনি। সাথে সাথে এ বৈষম্য দ্রুত দূর করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্যও অনুরোধ জানিয়েছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘কারও পদনাম সম্মানজনক ভাবে পরিবর্তন হওয়ার বিরুদ্ধে তিনি নন। তিনি বৈষম্যর বিরুদ্ধে কথা বলছেন। যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু আজীবন সংগ্রাম করে গেছেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও কর্মচারীদের সেই বৈষম্যের শিকার হতে হবে তা কল্পনাও করা যায় না। তিনি অনতিবিলম্বে সচিবালয়েল ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্ত ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মচারীদের পদনাম পরিবর্তন ও ব্লক পোস্টসহ গ্রেড পরিবর্তন করার জন্য জনপ্রশানস প্রতিমন্ত্রী ও মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন। আপনারা যতদ্রুত সম্ভব এ সমস্ত অনিয়মের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করুন। তা না হলে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের মনের পূঞ্জিভূত অসন্তোষ ও বিরাজিত ক্ষোভ নিরসন করা দূরুহ হয়ে পরবে।

লুৎফর রহমান তার বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদৃষ্টি কামনা করে বলেন, ০৬ বছর গত হলো পে-স্কেল প্রদান করা হয়েছে। ৫% হারে বেতন বেড়ে যা হয়েছে তার চেয়ে বাজার দর বেড়েছে কয়েকগুণ বেশি। টাইম স্কেল, সিলেকশন গ্রেড না থাকায় কর্মচারীদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। বর্তমান বাজারে সংসার চালানো তাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব। তাই অনতিবিলম্বে নতুন পে কমিশন গঠন, যৌক্তিক হারে মহার্ঘভাতা প্রদান, বেতন ও পদবী বেষম্য দুর করণসহ ১১ থেকে ২০ গ্রেডের সকল যৌক্তিক দাবি বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য জোর দাবী জানান।

লিখিত বিবৃতি

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত