ব্যক্তিত্ববান হওয়ার সহজ কিছু উপায়

| আপডেট :  ০৭ নভেম্বর ২০২১, ১০:২৮  | প্রকাশিত :  ০৭ নভেম্বর ২০২১, ১০:২৮

প্রত্যেক মানুষ অন্যের চেয়ে আলাদা। আচরণ, রুচিবোধ ইত্যাদির মতো সহজাত ভিন্নতা একজন থেকে অন্যজনকে আলাদা করেছে। যেসব গুণ মানুষকে উচ্চতায় তুলে আনে; সেসব গুণ আয়ত্ত করার প্রয়াস থাকে সবার। সব মহলে গ্রহণযোগ্যতা পূর্ণাঙ্গ মানুষ হিসেবে তৈরি করে। একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ সব সময় সবার কাছে প্রিয় ও অনুকরণীয় হয়ে থাকেন।

অনেকের মধ্যে রয়েছে অনেক রকম গুণ। যা সাধারণত প্রকাশ পায় না। মানুষ তার আত্মবিশ্বাস, সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্ব ও ব্যবহারের মাধ্যমে যেকোনো জায়গায়, যেকোনো অনুষ্ঠানে বা প্রতিষ্ঠানে নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পারেন। অতএব আপনার যা কিছু ভালো, সেগুলো দিয়েই আপনি সম্পূর্ণভাবে নিজেকে বদলে নিতে পারেন।

সৎ থাকুন :
ব্যক্তিত্বকে ভেতর থেকে জাগিয়ে তোলার শ্রেষ্ঠ উপায় হলো নিজের কাছে নিজে সৎ থাকা। আপনি যা নন, তা হওয়ার চেষ্টা করবেন না। নতুন কারো সঙ্গে পরিচিত হওয়ার পর যদি তাদের সঙ্গে আপনার বিষয়ে মিল না থাকে, তবে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। তাদের সঙ্গে হালকা কথাবার্তা চালাতে হবে। বন্ধুর মতো প্রশ্ন করুন। নতুন কিছু বন্ধু বানাতে চান? কিন্তু কথা বলতে আপনার বিরক্ত লাগছে, তাহলে বিনয়ের সঙ্গে আলাপচারিতা শেষ করুন।

নিজের ওপর ভরসা রাখুন :
অন্য লোকে কী বললো, কী ভাবলো, সেটা দেখার বিষয় নয়। আপনি যখন সফল হবেন; তখন সবাই আপনাকে সাপোর্ট দেবে। নিজেই কিছু করতে শিখুন। আপনি কাউকে অনুসরণ করে কাজ করলে একদিন তার মতো হতে পারবেন। কিন্তু যদি নিজে থেকে কাজ করে নতুন কিছু করেন, তাহলে আপনার অবস্থানে আর কেউ যেতে পারবে না। তাই কাজে লেগে যান। অবশ্যই সফল ব্যক্তি হবেন। ব্যক্তিত্ববান সফল মানুষও ভুল করে। কিন্তু তারা হাল ছেড়ে দিতে নারাজ। এজন্যই তারা ব্যক্তিত্ববান।

আনন্দে থাকুন :
সব সময় ভালো কিছুর খোঁজ করুন। ইতিবাচক ধারণা রাখুন এবং হাসি-খুশি থাকুন। একজন ব্যক্তিত্ববান মানুষ সুখী মানুষ। সুখী মানুষকে কেউ বাধা দিতে পারে না। কিন্তু এই নয় যে, নিজের সঙ্গে প্রতারণা করে বা নিজের অনুভূতিকে চাপা দিতে হবে। কোনো কিছু আপনার বিরক্তির কারণ হওয়া সত্ত্বেও হাসি-খুশির ভাব ধরে রাখতে হবে, এমনটা নয়। সব কিছুর ভালো দিক খুঁজে বের করুন এবং তা নিয়ে আনন্দে থাকুন।

জনপ্রিয় হতে যাবেন না :
অন্যের কাছে যদি জনপ্রিয় হওয়ার লক্ষ্য হয়ে থাকে, তাহলে আপনি আসল উদ্দেশ্য থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। এমন একটি নির্ভরতার বন্ধু সার্কেল তৈরি করুন, আপনি যাদের প্রতি আন্তরিক এবং যারা আপনার প্রতি অমায়িক। এমন কিছুর পেছনে ছুটবেন না যে, যাতে অসংখ্য বন্ধু থাকতে হবে। এমনটা ভেবে শুধু সংখ্যাটায় বন্ধু বাড়াচ্ছেন। যাদের সঙ্গ আপনার ভালো লাগে, শুধু তাদের সঙ্গে থাকুন। যদি সেটা সংখ্যায় প্রচুর হয়, তাহলে ভালো। আর যদি সংখ্যায় মাত্র তিন জন হয়, তাহলেও হবে।

আগ্রহ বাড়ান :
যেকোনো বিষয়ে কথা বলার আগ্রহ থাকা ভালো ব্যক্তিত্বের অন্যতম একটি প্রধান গুণ। যদি কোনো কিছু সহজে মজা করে অন্যকে বোঝাতে আগ্রহী থাকেন। তাহলে প্রতিদিন কিছু না কিছু বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখুন এবং নতুন নতুন শখ তৈরির মাধ্যমে নিজের অভিজ্ঞতা বাড়ান।

কথা স্পষ্ট বলুন :
যদি কোনো বিষয়ে কথা বলতে চান, তবে সে বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা রাখবেন। রাজনীতি, খেলাধুলা এবং বিনোদন যেকোনো ব্যাপারে নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করুন। কথা বলতে গিয়ে নিজের মতামত প্রকাশ করুন। যে কোনো ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলার সময় স্পষ্ট ও ধীরে বলুন। যা জানেন না, তা বলা থেকে বিরত থাকুন। নম্র ভাষায় নিজের যুক্তি উপস্থাপনাকারী ব্যক্তিত্ববানকে মানুষ সর্মথন করে।

বিনয় ও সুন্দর ব্যবহার করুন :
সব সময় মানুষের সঙ্গে বিনয় ও সুন্দর ব্যবহার করুন। আপনার ব্যবহারে যাতে অন্যরা সন্তুষ্ট থাকে, সেদিকে দৃষ্টি রাখুন। অন্যকে ছোট করে অথবা অসম্মান করে কথা বলা মারাত্মক মানসিক ব্যাধি। চট করে কারও সঙ্গে রেগে কথা বলবেন না। আধুনিক সভ্য সমাজে এটি জঘন্য-ঘৃণ্য কাজ হিসেবে গণ্য করা হয়। অন্যের দোষ না খুঁজে গুণগুলো বের করুন। সেগুলো নিজের চরিত্রের সঙ্গে মেলান। দেখবেন আপনার দোষগুলো আস্তে আস্তে মিলে যাচ্ছে। তাই সতর্ক হোন। না হলে নিশ্চিত থাকুন, সামনে বন্ধুহীন হওয়ার নিশ্চিত সম্ভাবনা রয়েছে।

পরিকল্পনা করুন :
কাজ করার আগে পরিকল্পনা করুন। বরাবর ভেবে-চিন্তে সিদ্ধান্ত নেবেন। যেকোনো কাজ ধীরচিত্তে করুন। এতে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজটি সহজেই সমাধান করতে পারবেন। বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল করার চেষ্টা করুন। ঘরে বসে অলস জীবন না কাটিয়ে সময়ের সদ্ব্যবহার করুন। কাজ করার সময় নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখুন। কখনো কোনো নেতিবাচক চিন্তা করবেন না। নিজের কাজের প্রতি সিনসিয়র থাকুন এবং পরিশ্রম করুন। পরিশ্রম যেহেতু ভাগ্যের চাবিকাঠি; সেহেতু পরিশ্রম করে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলুন।

দুর্বলতা প্রকাশ করবেন না :
নিজের প্রতি নিজের নিয়ন্ত্রণ ও আস্থা রাখুন। আবেগে আপ্লুত হওয়া থেকে বিরত থাকুন। অসৎ বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া বন্ধ করুন। জীবন থেকে সব সময় হতাশা, টেনশন এবং দুশ্চিন্তা ঝেরে ফেলুন। কঠোর মনোবল এবং আত্মবিশ্বাস তৈরি করুন। নিজের দুর্বলতা কারও কাছে প্রকাশ করা থেকে বিরত থাকুন। এতে নিজেই সামাজিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

সম্পাদনায়: উজ্জল ফরিদ

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত