নন্দনমঞ্চে লালন স্মরণোৎসবে ২য় দিনের পরিবেশনা

| আপডেট :  ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১০  | প্রকাশিত :  ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৯:১০

লালনের বাণী অনুসারে জ্ঞান অন্বেষিত হয় শিল্পকলার মাধ্যমে। ‘এজন্য লালন সাঁইজি আমাদের প্রিয়’ বললেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
 
শুক্রবার (১৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মহাত্মা লালন সাঁইজির স্মরণে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নন্দনমঞ্চে ২য় দিনের পরিবেশনায় ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ এ কথা বলেন।
 
তিনি আরও বলেন, লালনের শিক্ষাই হলো অহিংস বাহাস আর সাধনা ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ এবং রাষ্ট্র নির্মাণের মূলমন্ত্র। লালনের গান হলো- তত্ত্ব গান যা প্রয়োগের সঙ্গে যুক্ত, সাধনার সঙ্গে যুক্ত। তত্ত্ব যা যে কোনো সাধনার মূল খোঁজার প্রক্রিয়া।
 
তিনি বলেন, লালনের বাণী অনুসারে জ্ঞান অন্বেষিত হয় শিল্পকলার মাধ্যমে, এজন্য লালন সাঁইজি আমাদের প্রিয়। আমাদের রাষ্ট্র গঠনের নতুন পরিকল্পনায়, তিনি পথ দেখাতে সক্ষম। জ্ঞানভিত্তিক আত্মজীবন কি করে রাষ্ট্র ও সমাজের কেন্দ্রে স্থাপিত হয় শিল্পকর্মের মাধ্যমে উনি তা দেখিয়েছেন।
 
স্বাগত বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান বলেন, লালন সাঁইজি বৈষম্যবিরোধী এবং মানবতার কথা বলে গেছেন।
 
অনুষ্ঠানে আগত বাউল শিল্পীদের কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনি বলেন, প্রতি বছর এই দিনে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার মতো করেই আমরা লালন উৎসব আয়োজন করতে চাই।
 
সাংস্কৃতিক পর্বের শুরুতেই দৈন্য গান ‘এসো হে দয়াল কান্ডারী’ পরিবেশন করেন নবীন, প্রবীণ ও বিশিষ্ট বাউল শিল্পীরা। 
এরপর ধারাবাহিক পরিবেশনায় বিপাশা পারভীন ‘কী সন্ধানে যাই’ এবং মো. মুক্তার হোসেন পরিবেশন করেন ‘এনেছে এক নবীন গোড়া’। ‘সব লোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’ পরিবেশন করেন শিরিন সুলতানা। ‘সাইর লীলা বুঝবি ক্ষ্যাপা’ পরিবেশন করেন শ্রীকৃষ্ণ গোপাল।

এ ছাড়াও পরিবেশিত হয় ‘দাসের যোগ্য নাই চরনে’, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘কোন নামে ডাকিলে তারে’, ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’সহ লালনের বিখ্যাত ও জনপ্রিয় গান।
 
পাগলা বাবলু (ফরিদপুর), টুনটুন ফকির (কুষ্টিয়া), চন্দনা মজুমদার (কুষ্টিয়া), রাবেয়া আক্তার, বাউল লতিফ শাহ্ (চুয়াডাঙ্গা), রুমা আক্তার, ওমর আলী, আয়নাল হক বাউল, বিপ্লব ফকিরানী (মানিকগঞ্জ), বিপ্লব ফকির (মানিকগঞ্জ), আনোয়ার শাহ্ (রাজবাড়ী), আরিফ বাউল (ফরিদপুর)সহ গুণী বাউল শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।

সবশেষে নবীন, প্রবীন ও বিশিষ্ট বাউল শিল্পীরা পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের জনপ্রিয় মিলন গান ‘মিলন হবে কত দিনে’।
  
আগামীকাল শনিবার উৎসবের সমাপনী দিনে বিকাল ৪টায় নাট্যশালার সেমিনার কক্ষে ১ম পর্বে ‘জাতিসত্তার প্রশ্ন এবং বাউল-ফকির পরিবেশনার রাজনীতি’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক আব্দুল হালিম চঞ্চল। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও গবেষক আল মামুন। আলোচনা করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. মোহাম্মদ আজম, লেখক ও সাংবাদিক এবং পিআইবির মহাপরিচালক ফারুক ওয়াসিফ, নাট্যকার, লেখক ও গবেষক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. শাহমান মৈশান। সভাপতির বক্তব্য দিবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ।
 
২য় পর্বে সন্ধ্যা ৭টায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে দেশবরেণ্য শিল্পীদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে লালন স্মরণোৎসব ‘ধরো মানুষ রূপ নেহারে’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিবেন সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রযোজনা বিভাগের পরিচালক আব্দুল হালিম চঞ্চল। আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক মাহবুব মোর্শেদ এবং সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক নাট্যব্যক্তিত্ব সৈয়দ জামিল আহমেদ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত