গাজীপুরে ওয়ামি কমপ্লেক্স উদ্বোধন করলেন উপদেষ্টা হাসান আরিফ
প্রতিবেশী দেশ ভারতের ভিসা দেওয়ার ব্যাপারে তাদের বিধি-নিষেধ রয়েছে। তারা ভিসা দেবেন, কি দেবেন না এটা তাদের ব্যাপার। এটা নিয়ে আমাদের কোনো বক্তব্য নেই বলে জানিয়েছেন ভূমি এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এএফএম হাসান আরিফ।
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দুপুরে গাজীপুরের সফিপুরে নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্সের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় তিনি জানান, দেশের পর্যটন বিকাশে তার মন্ত্রণালয় বিশদ পরিকল্পনা নিয়েছে। এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য সাংবাদিকদের জানানো হবে। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, শিক্ষা ক্ষেত্রে আমরা পিছিয়ে আছি। তবে শিক্ষার পাশাপাশি যুবসমাজকে এগিয়ে নিতে ওয়ামি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।
বাংলাদেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে অন্যতম মুসলিম দেশ হিসেবে সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের কথা উল্লেখ করে তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত সৌদি রাষ্ট্রদূতের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- সৌদি রাষ্ট্রদূত ঈসা ইউসুফ ঈসা আল দুহাইলান, সৌদি আরব থেকে আসা ওয়ামি সচিবালয়ের অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জেনারেল প্রফেসর ড. আবদুল হামিদ ইউসুফ আল মাজরু এবং ওয়ামি প্রধান কার্যালয়ের বৈদেশিক অফিস ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের পরিচালক ফয়সাল সাআ’দ আব্দুল্লাহ বিন জাবর এবং ত্রাণ বিভাগের কর্মকর্তা আব্দুল মালেক আল আমের।
সৌদি রাষ্ট্রদূত তার বক্তব্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম দেশ হিসেবে বাংলাদেশের উন্নয়নে সৌদি আরব সবসময় বাংলাদেশের পাশে থাকার কথা উল্লেখ করেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বাংলাদেশ ও সৌদি আরবের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর ওয়ামি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর ডা. মোহাম্মদ রেদওয়ানুর রহমান স্বাগত বক্তব্য দেন। পরে অতিথিরা নবনির্মিত ওয়ামী কমপ্লেক্স ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন এবং নির্মিতব্য হাসপাতাল ও স্কুল ভবনের নির্মাণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে গাজীপুর জেলা প্রশাসক নাফিসা আরেফীন, কালিয়াকৈর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ, মেজর জেনারেল (অব.) সালাহউদ্দিন মিয়াজি, প্রফেসর আমিনুর রহমান মজুমদার, প্রফেসর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফসহ গণ্যমান্য ও স্থানীয় বিশিষ্টজনরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ওয়ার্ল্ড এসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথ (ওয়ামি) সৌদি আরব ভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থা। বিগত ৫২ বছর ধরে বিশ্বের প্রায় সবকটি দেশে শিক্ষা, সংস্কৃতি, প্রাকৃতিক ও মানবসৃষ্ট দুর্যোগে জরুরি ত্রাণ তৎপরতা, নারীর ক্ষমতায়নসহ নানাবিধ আর্থ-সামাজিক ও যুব উন্নয়নমূলক কর্মসূচি পরিচালনা করে আসছে। ১৯৭২ সালে রিয়াদে অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক যুব সম্মেলনে গৃহীত প্রস্তাবনার আলোকে সৌদি আরবের তৎকালীন বাদশাহ কিং ফয়সালের রাজকীয় ফরমানে ওয়ার্ল্ড এসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথ (ওয়ামি) প্রতিষ্ঠিত হয়। ওয়ামী জাতিসংঘের বিভিন্ন অঙ্গ সংস্থাসহ নানা আন্তর্জাতিক ফোরামের সক্রিয় সদস্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী ভূমিকা রেখে আসছে।
১৯৮১ সালে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ও ওয়ার্ল্ড এসেম্বলি অব মুসলিম ইয়ুথ (ওয়ামি), সৌদি আরবের যৌথ উদ্যোগে বিশ্বের প্রায় অর্ধশত দেশের যুব প্রতিনিধিদের নিয়ে আন্তর্জাতিক যুব কনফারেন্স অনুষ্ঠিত হয়। কনফারেন্সের সমাপনী অনুষ্ঠানের সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান যুব উন্নয়ন ও প্রশিক্ষণ কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য গাজীপুরের সফিপুরের ৭ একর জমি ওয়ামিকে প্রদানের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। সেখানেই ওয়ামি কমপ্লেক্স ভবনের কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো।
আয়োজকরা জানান, আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত নবনির্মিত ওয়ামি কমপ্লেক্স ভবনে রয়েছে দ্বিতল বিশিষ্ট মসজিদ, ১০০ এতিম শিশুর জন্য মানসম্পন্ন আবাসন ব্যবস্থা, একটি ক্যাডেট মাদ্রাসা, একটি নুরানি ও হিফজ মাদ্রাসা, একটি লাইব্রেরি হল, একটি হলরুম ও কনফারেন্স রুম, তরুণ শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল লার্নিংয়ের জন্য আইটি প্রশিক্ষণ সেন্টার ও ডাইনিং হল। এ ছাড়াও কমপ্লেক্সে একটি হাসপাতাল, স্কুল, ভোকেশনাল সেন্টার, প্রশিক্ষণার্থীদের জন্য ডরমিটরি ও প্লে গ্রাউন্ড নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত