৮ দফা অবিলম্বে বাস্তবায়ন দাবি ঐক্য পরিষদের

| আপডেট :  ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৬  | প্রকাশিত :  ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৫৬

ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ৮ দফা অনতিবিলম্বে বাস্তবায়নসহ চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ এবং দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। 

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব জমায়েতে সংগঠনের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথ এ দাবি জানান। 

সম্প্রতি অ্যাটর্নি জেনারেলের বক্তব্যে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়া, কিশোরগঞ্জের হৃদয় রবি দাসকে হত্যা,  চট্টগ্রামের হাজারী লাইনে সাম্প্রতিক হামলা, ধর্ম অবমাননার ‘কথিত’ অভিযোগে সুনামগঞ্জের আটক আকাশ সিংহকে গ্রেপ্তার ও মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার শশিকর কলেজের অধ্যক্ষ দূর্লভানন্দকে পদত্যাগে বাধ্য করাসহ নেত্রকোনার মোহনগঞ্জের হিন্দু জমি জবরদখলে অপচেষ্টাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ ছাত্র ঐক্য পরিষদের যৌথ উদ্যোগে এ কর্মসূচি পালিত হয়। 

কর্মসূচিতে বাংলাদেশে সংঘটিত সাম্প্রদায়িক সহিংসতাকে লঘু করে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহলে দেখানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করে এই প্রবণতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন সংখ্যালঘু যুব ও ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতারা।

বাংলাদেশ যুব ঐক্য পরিষদের সভাপতি শিমুল সাহার সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সরকারের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য দেন ছাত্র ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজিব সরকার, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক অপূর্বানন্দ রায়, ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেত্রী সুস্মিতা সরকার, যুব ঐক্য পরিষদের মহিলা সম্পাদিকা চন্দ্রা রায় চম্পা, যুব ঐক্য পরিষদের সহ-সভাপতি তাপস দাস, অ্যাড. প্রভাত টুডু, রঞ্জিত সেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আশিষ সরকার, হিন্দু যুব মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক রাজেশ নাহা প্রমুখ।

তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছিন্নভাবে সহিংসতার ঘটনা ঘটে চলেছে। শুধু তাই নয়, একটি বিশেষ মহল প্রকাশ্যে সংখ্যালঘুদের জবাই করার হুমকি দিচ্ছে। অথচ তাদের বিরুদ্ধে সরকারের কোনো যথাযথ পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। এতে আপামর সংখ্যালঘু সম্প্রদায় আশঙ্কিত ও আতঙ্কিত।

ছাত্র-যুব ও সংখ্যালঘু নেতারা সম্প্রতি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামানের হাইকোর্টের এক মামলার শুনানিতে সংবিধান থেকে ধর্মনিরপেক্ষতা বাদ দেওয়ার পক্ষে প্রদত্ত অভিমতকে গণতন্ত্র, মুক্তিযুদ্ধ ও ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আকাঙ্ক্ষার পরিপন্থি হিসেবে উল্লেখ করেন। 

তারা বাংলাদেশ সনাতনী জাগরণ মঞ্চের রংপুরের শান্তিপূর্ণ সমাবেশকে বানচালের লক্ষ্যে যোগদানেচ্ছুক সনাতনী সম্প্রদায়ের উপর উপর্যুপরি হামলার তীব্র নিন্দা, প্রতিবাদ ও ধিক্কার জানিয়ে বলেন, এহেন ন্যক্কারজনক ঘটনা বহির্বিশ্বে দেশের ভাবমূর্তিকে ক্ষুণ্ন করবে। ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নকারী হামলাকারীদের ও মহাসমাবেশ বানচালের অপচেষ্টাকারীদের অনতিবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং আহতদের সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানান। 

কর্মসূচিতে ছাত্র-যুবদের দাবির পক্ষে সংহতি প্রকাশ করে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের শীর্ষ নেতা ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক ও মনীন্দ্র কুমার নাথ চলমান সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধ এবং দোষীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। এছাড়া অনতিবিলম্বে সংখ্যালঘুদের ৮ দফা বাস্তবায়ন এবং হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও মানবাধিকার নেতা রাণা দাশগুপ্তসহ ঐক্য পরিষদ নেতাদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানান।  
জমায়েত শেষে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চিরতরে বন্ধ এবং সহিংসতাকারীদের গ্রেপ্তারপূর্বক বিচারের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান সহকারে এক বিক্ষোভ মিছিল প্রেস ক্লাবের আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে। 

যুব ঐক্য পরিষদ ও ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতারা জানান, সাম্প্রদায়িক সহিংসতা বন্ধের দাবিতে সংগঠন দুটির উদ্যোগে এ দিন রাজধানী ঢাকা ছাড়াও কুমিল্লা জেলা ও মহানগর, পাবনা, খুলনা জেলা ও মহানগর এবং চট্টগ্রাম জেলা ও মহানগরে জমায়েত ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত