আন্দোলনে আহতদের তালিকায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তির নাম
সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহতদের চূড়ান্ত তালিকায় কৌশল অবলম্বন করে নাম লেখানোর অভিযোগ উঠেছে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার আনিছুর রহমান নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। এতে এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আনিছুর উপজেলার ৩ নম্বর দেউলবাড়ী দোবড়া ইউনিয়নের বিলডুমুরিয়া গ্রামের আব্দুস সালামের ছেলে।
তিনি বরিশাল বিএম কলেজের অনার্সের শেষ বর্ষের ছাত্র এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বরিশালে ব্যাপক ভূমিকাও পালন করেছেন বলে দাবি করেন।
এদিকে ওই আন্দোলনে আহতদের তালিকায় আনিছুরের নাম থাকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এ ঘটনায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয় কালবেলার অসুসন্ধানে উঠে আসে ঘটনার আদ্যোপান্ত।
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের তালিকায় নাম দেখে নাজিরপুরের অবাক হন এলাকাবাসী। তারা বিশ্বাস করতে পারছে না এ ঘটনা। তাদের প্রশ্ন, কীভাবে এটা হলো?
জানা যায়, গত ১৬ জুলাই আনিসুর রহমান ব্যক্তিগত কাজে বিলডুমুরিয়া থেকে ভাড়ায় চালিত মোটরসাইকেলে করে বড় ভাই রেজাউল মোল্লাকে নিয়ে রওনা দেন। পথে নাজিরপুর-গোপালগঞ্জ হাইওয়ে রোডে দুর্ঘটনার শিকার হন। গুরুতর আহত হয়ে প্রথমে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা গাজী মেডিকেলে এবং শেষে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতাল ও ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
এদিকে আনিসুরের মোটরসাইকেল সড়ুক দুর্ঘটনার তথ্য জানিয়ে তার পরিবার ও আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুরা ফেসবুকে পোস্ট দিয়েছিলেন, যা সর্বত্র ভাইরাল হয়েছিল।
জানতে চাইলে আনিসুর রহমান কালবেলাকে বলেন, কীভাবে ছাত্র আন্দোলনের নামের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হলাম, তা আমিও জানি না। আমি বরিশাল বিএম কলেজে ছাত্র আন্দোলনে অংশ নিই। হঠাৎ ১৫ জুলাই আমার বাবা স্ট্রোক করেছেন, এ কারণে আমি বাড়ি চলে আসি। আবার ১৬ জুলাই বরিশালের উদ্দেশে রওনা হওয়ার সময় নাজিরপুর-গোপালগঞ্জ হাইওয়ে সড়কে আমি ও আমার বড় ভাই মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় দুর্ঘটনায় পড়ি।
নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার পবিত্র হালদার জানান, ঘটনা সত্য গত ১৬ জুলাই আনিসুর রহমান এবং তার বড় ভাই ও মোটরসাইকেলের ড্রাইভার নাজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে ভর্তি হয়েছিল, যা আমাদের এই বুক রেজিস্টারে লিপিবদ্ধ আছে।
নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মশিউর রহমান বলেন, আমি শুনেছি বিষয়টি এবং ইউএনও স্যারকে জানিয়েছি। আমরা ভেরিফাই করে দেখছি।
নাজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহত নিহতের নাজিরপুর উপজেলার যাচাই-বাছাই কমিটির প্রধান অরূপ রতন সিংহ বলেন, এই মুহূর্তে আমি এ বিষয়ে কোনো কিছুই বলতে পারবো না। আগামীকাল আপনি অফিসে আসেন।
এ বিষয়ে পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফুল আলম খান বলেন, না জেনে আমি কীভাবে বলবো? আমি এ নিয়ে এখন কোনো বক্তব্য দিতে পারবো না বলে লাইন রেখে দেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত