‘রাষ্ট্রধর্ম’ বাতিলসহ একগুচ্ছ প্রস্তাব ঐক্য পরিষদের

| আপডেট :  ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪  | প্রকাশিত :  ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৪

‘রাষ্ট্রধর্ম’ সম্বলিত সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণরূপে বাতিল করাসহ একগুচ্ছ প্রস্তাবনা দিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। সোমবার (২৫ নভেম্বর) অধ্যাপক আলী রীয়াজের নেতৃত্বাধীন সংবিধান সংস্কার কমিশনের কাছে অনলাইনে বাংলাদেশের ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর পক্ষে এসব প্রস্তাবনা দিয়েছে সংগঠনটি। 

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রস্তাবনায় বিদ্যমান সংবিধানের প্রস্তাবনা হুবহু বহাল রাখার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে ঐক্য পরিষদ বলেছে, এ প্রস্তাবনা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সব নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করে। 

প্রস্তাবনায় ‘রাষ্ট্রধর্ম’ সংবলিত সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদ সম্পূর্ণরূপে বাতিলের অভিমত ব্যক্ত করে পরিষদ বলেছে, এ অনুচ্ছেদটি সংবিধানের মূল প্রস্তাবনা অর্থাৎ ‘সকল নাগরিকের জন্য আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার’ নিশ্চিত করার সম্পূর্ণ পরিপন্থি ও সাংঘর্ষিক, যা ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিকে পরিণত করে। 

প্রস্তাবনায় ‘ধর্ম নিরপেক্ষতা ও ধর্মীয় স্বাধীনতা’ শীর্ষক অনুচ্ছেদ হুবহু বহাল রাখার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে ঐক্য পরিষদ বলেছে, ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের চরিত্র ও বৈশিষ্ট্য জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করে- যা সংবিধানের অন্যতম মূলনীতি। 

প্রস্তাবনায় সংবিধানের ২৮ অনুচ্ছেদ হুবহু বহাল রাখার পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করে পরিষদ বলেছে, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বৈষম্য দূর করার লক্ষ্যে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন অপরিহার্য। এতে বলা হয়েছে, ‘ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের জনজীবনে ও সমাজে বিরাজমান বৈষম্য দূর করা এবং আইনের দৃষ্টিতে সকলে সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী’ হওয়ার ক্ষেত্রে এ প্রস্তাবনাগুলো সংবিধানে যুক্ত হওয়া অত্যাবশ্যক। 

এছাড়া সংবিধানের ২৮(৪) অনুচ্ছেদের পর (৫) অনুচ্ছেদ হিসেবে রাষ্ট্রের বিভিন্ন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান যেমন- বাংলাদেশ জাতীয় সংসদ, নির্বাচন কমিশন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, সরকারি কর্ম কমিশনসহ সব ক্ষেত্রে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘুদের যথাযথ প্রতিনিধিত্ব ও অংশীদারিত্ব সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিত করার পাশাপাশি (৬) অনুচ্ছেদ হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জনসংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব সাংবিধানিকভাবে নিশ্চিতের প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত