মাহমুদউল্লাহ পারেন কিন্তু বাকিরা…
৩৮ বছর ৩১৪ দিন—আর কয়টা দিন গেলেই হয়ে যাবে ৩৯। অথচ ব্যাট হাতে এখনো লিটন দাস, আফিফ হোসেন ধ্রুবর মতো প্রতিভাবান তরুণদের চেয়েও বেশ কার্যকরী তিনি। বলছিলাম মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কথা। দলের সবচেয়ে সিনিয়র কিংবা অভিজ্ঞ খেলোয়াড় তিনি। তবে বয়সকে শুধু সংখ্যা বানিয়ে নিয়মিত পারফর্ম করে যাচ্ছেন। ‘বুড়ো’ শব্দটা যাকে শুনতে হচ্ছে অগণিত; সেই মাহমুদউল্লাহ পারলেও পারেননা বাকিরা…। কেন—তার উত্তরও নেই কোথাও! উত্তর একটাই মেলে এখনো ব্যাট হাতে পারছেন মাহমুদউল্লাহই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচেই ব্যাট হাতে দারুণ ছন্দে ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। ৫০*, ৬২ ও ৮৪*–তিন ফিফটিতে ১৯৬ গড়ে ১৯৬ রান। গড়ের হিসেবে তিন ম্যাচের দ্বিপক্ষীয় সিরিজে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারের সেরা পারফরম্যান্স। সিরিজে ১১ ছয়—এটাও বাংলাদেশের ওয়ানডেতে কোনো ব্যাটারের ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ। শুধু তাই নয়। টানা চার ফিফটিতেও রেকর্ড হয়ে গেছে মাহমুদউল্লাহর। সেটাও আবার মহেন্দ্র সিং ধোনির পাশেই গিয়ে বসে গেছেন তিনি। ওয়ানডে ইতিহাসে ছয়ে নেমে টানা চার ইনিংসে ফিফটি ছিল কেবল ধোনির। এবার সেখানে মাহমুদউল্লাহর নামও।
সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে রীতিমতো বাজিমাত করলেন তিনি। মাহমুদউল্লাহর লাকি ভেন্যু বোধ করি ক্যারিবীয় দ্বীপের ওই ওয়ার্না পার্কই। এই মাঠে খেলা ৬ ওয়ানডেতে ১৭০ গড়ে তিনি রান করেছেন ৩৪১। এর মধ্যে পাঁচটিতেই পেয়েছেন পঞ্চাশ ছোঁয়ানো ইনিংসের দেখা। এই মাঠের সর্বোচ্চ ওয়ানডে রানও এখন রিয়াদেরই। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৪৮ রান করেছেন উইন্ডিজ তারকা ক্রিস গেইল। মাহমুদউল্লাহর এমন দারুণ কীর্তির পরও বাংলাদেশ একটা ম্যাচও জিততে পারেনি। তিন ম্যাচেই হেরে উইন্ডিজের কাছে হোয়াইটওয়াশ হয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজরা। ম্যাচের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে অভিজ্ঞ এই ব্যাটারকে প্রশংসা ভাসালেন মিরাজ, ‘(মাহমুদউল্লাহ) খুব ভালো করেছেন। সিরিজে তিনটি ফিফটি করেছেন, যা দলের জন্য খুব ভালো ব্যাপার। তার কাছ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখি। এই সিরিজে তরুণদের দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ ছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমরা সেটি করতে পারিনি।’
মিরাজ ঠিকই বলেছেন। দায়িত্ব তারা নিতে পারেননি। বিশেষ করে লিটন দাস ও আফিফ হোসেন ধ্রুবর জন্য সিরিজটা ছিল নিজেদের প্রতিভার ছাপ রাখার। কিন্তু পর পর তিন ম্যাচেই লিটন ব্যর্থ। শুধু ব্যর্থই নয়; দলকেও চাপে ফেলেছিলেন তিনি। আফিফ লম্বা সময় পর দলে ফেরাকে রাঙাতে পারলেন না। ২৮, ২৪ ও ১৫—তিন ম্যাচে তার ব্যাটের সংগ্রহ। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে তার কোনো সিরিজ নেই বাংলাদেশের। প্রস্তুতির যতটুকু সুযোগ ছিল, সেটা উইন্ডিজেই নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু হলো উল্টো। ১০ বছর পর উইন্ডিজের কাছে ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ। তারপরও আশার কথা শোনালেন অধিনায়ক মিরাজ, ‘এই সিরিজের পরই আমাদের সামনে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। আমরা জানি, আমাদের কোথায় উন্নতি প্রয়োজন। আশা করি, সামনে এগিয়ে যাওয়ার পথে আমরা বুঝতে পারব কীভাবে সেসব জায়গায় উন্নতি করতে হবে।’
উন্নতির এই গল্প প্রতিটি সিরিজের পরই শোনা যায়; কিন্তু পরে তার ছাপ মাঠে পড়ে না। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেও সেরকম কিছু হোক—চাইবেন না সমর্থকরা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত