‘শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শ্রমনীতি চালু করতে হবে’

| আপডেট :  ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১০  | প্রকাশিত :  ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:১০

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাবেক এমপি মাওলানা আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শ্রমনীতি চালু করতে হবে।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) বিকাল ৩টায় রাজধানীর উত্তরায় নওয়াব হাবিবুল্লাহ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি। 

ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি মাওলানা মো. মহিব্বুল্লাহর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এইচ এম আতিকুর রহমানের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন- বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা মোহাম্মদ আব্দুল হালিম, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এবং ঢাকা  মহানগর উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহসভাপতি অধ্যাপক হারুন-অর-রশীদ খান, বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান।

আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সহসাধারণ সম্পাদক মো. আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নূরুল আমিন,
ফেডারেশনের মহানগর উত্তরের উপদেষ্টা মো. জামাল  উদ্দীন, মো. মাহাবুব আলম প্রমুখ।

মাওলানা শামসুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলন ও বিজয়ের মাধ্যমে আমরা দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা অর্জন করেছি। তাই দেশকে ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচার মুক্ত করে অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ ও ফলপ্রসূ করতে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অপশাসন-দুঃশাসনমুক্ত শ্রমিকবান্ধব ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার জন্য জাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোন বিকল্প নেই। আমরা আর দুর্নীতি, দুঃশাসান, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুপ্তহত্যা ও চাঁদাবাজীর যুগে ফেরৎ যেতে চাই না। এ জন্য আমাদের বীর সন্তানরা রাজপথে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দেয়নি। 

তিনি আগষ্ট বিপ্লবের শহীদদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ এবং আহত ও পঙ্গুত্ব বরণকারীদের আশু আরোগ্য কামনা করে তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
 
তিনি বলেন, আমাদের দেশের শ্রমজীবী মানুষ জাতীয় অর্থনীতির মূল চালিকা শক্তি। তাদের হাড়ভাঙা শ্রমের মাধ্যমেই আমাদের রেমিট্যান্স আসে। পরিবহন ও কল-কারখানা চলে। মূলত, অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরগুলোই তাদের হাতেই পরিচালিত হয়। কিন্তু তারা এখনো তাদের নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। মূলত দেশে ইসলামী শ্রমনীতি চালু না থাকায় দেশের শ্রমিক সমাজ তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত। ইসলাম শ্রমিকদের বিশেষ মর্যাদা দিয়েছে। হাদিসে রাসুল (সা.) শ্রমিকদেরকে আল্লাহর বন্ধু হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। তাই শ্রমজীবী মানুষের যথাযথ মূল্যায়ন ও অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য দেশে ইসলামী শ্রমনীতি চালু করতে হবে। তিনি দেশে ইসলামী শ্রমনীতি চালুর জন্য শ্রমিক সমাজকে ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, দেশের শ্রমিক সমাজই জাতীয় উন্নয়নের মূল চালিকা শক্তি। তারাই দেশ ও জাতীয় উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার। দেশ ও জাতির যেকোন ক্রান্তিকালে শ্রমজীবী মানুষ ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। কিন্তু কোনো সরকারই দেশের শ্রমজীবী মানুষের যথাযথ মূল্যয়ন করেনি বরং তারা এখনো অবহেলিত ও অধিকার বঞ্চিত। তাই নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় শ্রমজীবী মানুষকে এক প্লাট ফরমে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, দেশ ও জাতি এক মহাক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। পতিত স্বৈরাচার নানাবিধ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশকে আবারো নৈরাজ্যের মুখে ঠেলে দিতে চায়। তাই দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলেও দলমত নির্বিশেষে জাতীয় ঐক্যের কোন বিকল্প নেই। তিনি ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশ গড়তে একদফায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত