মা তার ১০ মাসের সন্তানকে নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল : জামায়াত আমির
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বিগত ৫৩ বছরে শাসকচক্র দেশে নানাবিধ বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। মানুষকে তাদের সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমাদের বীর সন্তানরা তাদের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। মা তার ১০ মাসের সন্তানকে নিয়ে রাজপথে নেমে এসেছিল।
শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) রাজধানীর শেওড়াপাড়ার মনিপুর স্কুলে স্থানীয়দের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকারের পাঠানো এক বার্তায় আজ এ তথ্য জানানো হয়।
জামায়াতের আমির দাবি করেন, যারা রাজপথে আছেন তারা সবাই তার সন্তান। আর এই ইস্পাত কঠিন ঐক্যের মাধ্যমেই আমাদের বিজয় এসেছে। তিনি অর্জিত বিজয়ের সুফল ঘরে ঘরে পৌঁছাতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।
তা ছাড়া তিনি বলেন, আল্লাহ মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন এ কথা পরখ করার জন্য যে, কে সবচেয়ে বেশি নেক আমল করে। তাই দুনিয়ায় শান্তি আখেরাতে মুক্তির জন্য সবাইকে নেক আমল ও মানুষের কল্যাণে কাজ করতে হবে। তিনি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানান।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, মানুষের মধ্যে সে ব্যক্তিই উত্তম যে মানুষের কল্যাণে কাজ করে। হাদিসে রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে তারাই ভালো মানুষ যারা সবসময় মানুষের উপকারের ধান্দায় থাকেন।’ নির্বাচন এলেই একশ্রেণির রাজনীতিবিদ জনগণের কাছে ভোট প্রার্থনা ও মানুষের কল্যাণে কাজ করে ইবাদত করার সুযোগ চায়। কিন্তু তারা ক্ষমতায় যাওয়ার পর সে অঙ্গীকারের কথা ভুলে গিয়ে নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।
তিনি আরও বলেন, পক্ষান্তরে সৎ ও আল্লাহভীরু লোকেরা বলেন, ‘আমরা আপনাদের সেবা করতে চাই যদি আমাদের সে সুযোগ প্রদান করেন। যদি আমরা ভালো কাজ করি তাহলে সহযোগিতা করবেন। আর মন্দ কাজ করলে বিদায় করে দেবেন।’ তাই নেতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যক্তির সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা, আমানতদারিতা ও তাকওয়া বিবেচনায় নিতে হবে।
তিনি ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় আগামী দিনে যোগ্য ও নিবেদিতদের নির্বাচিত করার আহ্বান জানান।
জামায়াতের আমির বলেন, অসৎ নেতারা বারবার জনগণের কাছে নতুন নতুন কথা বলে নানা প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন না। ঔপনিবেশিক শাসকরাও একই পথ অনুসরণ করেছে। উপমহাদেশের আলেম সমাজ তাদের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিল। কিন্তু একশ্রেণির বিশ্বাসঘাতকদের কারণেই তাদের সেসব আন্দোলন প্রথমে সফল না হলেও এক সময় সফল হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতে ইসলামী এমন এক বৈষম্যহীন ও ইনসাফপূর্ণ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে চায় যে সমাজে কেউ না খেয়ে থাকবে, আর কেউ অবৈধভাবে সম্পদ গড়ে বিদেশে পাচারের মাধ্যমে অর্থবিত্তের পাহাড় জমাবে এমন হবে না। আর কুরআন-সুন্নাহর আইনের মাধ্যমে এমন শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। যে সমাজে সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ করা হবে- সে সমাজই আমাদের কাঙ্ক্ষিত ও ঈপ্সিত লক্ষ্য।
তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ বিনির্মাণে সবাইকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে সুবিধাবঞ্চিত ১০০০ জনকে কম্বল উপহার দেওয়া হয়।
কাফরুল পশ্চিম থানা আমির আব্দুল মতিন খানের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি মাওলানা আতিক হাসান রায়হানের পরিচালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ, শাহ আলম তুহিন প্রমুখ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত