ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় রাবি ছাত্রদলের আরেক নেতাকে বহিষ্কার
শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজে জড়িত থাকার অভিযোগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ফারুক হোসেনকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) রাতে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সদস্য ফারুক হোসেনকে সাংগঠনিক পদ থেকে বহিষ্কার করা হল। ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেন এবং ছাত্রদলের সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের তার সঙ্গে কোনো ধরনের সাংগঠনিক সম্পর্ক না রাখার জন্য নির্দেশনা প্রদান করেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগে ছাত্রদলের এক নেতার করা একটি মামলা থেকে ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউট (আইবিএ) শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সৈকত রায়হানকে বাঁচানোর কথা বলে চাঁদা চাওয়ার অভিযোগ উঠে ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে। এ সংক্রান্ত ৯ মিনিট ৭ সেকেন্ডের একটি কল রেকর্ড ফাঁস হয়।
ওই কল রেকর্ডে শোনা যায়, ছাত্রদল নেতা ফারুক ছাত্রলীগ নেতার নাম মামলা থেকে বাদ দেওয়ার সুপারিশের কথা বলেন। এ সময় তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে টাকা না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। ছাত্রলীগ নেতা টাকার জোগাড় করতে না পেরে দুই হাজার টাকা দিতে চান। এ সময় ছাত্রদলের ওই নেতা বলেন, আমি কি ভিখারি? আমাকে দুই হাজার টাকা দিতে চাও? ছাত্রলীগ নেতা ১০/২০ হাজার টাকা দেওয়া লাগবে নাকি বললে, এ বিষয়ে আর কথা বলবো না তোমার সঙ্গে। কালকের মধ্যে তুমি টাকা জোগাড় করো বলে ফারুক কল কেটে দেন।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা ফারুক হোসেন বিশবিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য। তিনি ফিন্যান্স বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। অপরদিকে ওই ছাত্রলীগ নেতা হলেন ব্যবসায় প্রশাসন ইনস্টিটিউটের (আইবিএ) ছাত্রলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং এইবিএ ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
উল্লেখ্য, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে গত ১৬ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের সামনে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শাখা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মাদ আহসান হাবিব বাদী হয়ে ছাত্রলীগের ১০১ জন নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন। গত ৮ অক্টোবর দুপুরে নগরের মতিহার থানায় দায়ের হওয়া ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ থেকে ২২০ জনকে আসামি করা হয়।
এই মামলা থেকে নাম বাদ দিতে এর আগে মামলার বাদী আহসান হাবীব ও ছাত্রদল কর্মী হাসিবুল ইসলামের দুইটি পৃথক কল রেকর্ড ফাঁস হয়। এ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হলে গত ১৯ অক্টোবর সংগঠন থেকে তাদের সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত