লাইভে এসে নিরাপত্তা চাইলেন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের আহ্বায়ক
জামালপুরে ফেসবুকে লাইভে এসে নিজের ও পরিবারের নিরাপত্তা চেয়েছেন জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর ইছহাক হোসেন ইখলাস।
সোমবার (২১ এপ্রিল) রাত ১০টার দিকে নিজের ফেসবুক আইডি থেকে লাইভে এসে নিরাপত্তা চান তিনি। তার ফেসবুক লাইভের ৫ মিনিটের একটি ভিডিও ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
ফেসবুক লাইভে এসে জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর ইছহাক হোসেন ইখলাস বলেন, দীর্ঘ রক্তাক্ত আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারের আমরা পতন করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে যে, আজকে ৫ আগস্টের ৮ মাস পর আসামিরা আমার বাড়িতে গভীর রাতের হামলা করতে আসছে।
গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে জামালপুর সদর উপজেলার ৪ নম্বর মেষ্টা ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বদরুল হাসান বিদ্যুৎকে দায়ী করে ৫ মিনিটের ওই ভিডিওতে ইখলাস আরও বলেন, বিদ্যুতের বাবা, চাচা ও তার চাচাতো ভাই যারা আছে তারা সবাই আমার বাড়িতে হামলা করতে আসছে। সমন্বয়কদের লাশ রাখবে না, গুম করবে এই জাতীয় হুমকি দিচ্ছে। আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হওয়া সত্ত্বেও আমার সঙ্গে এরকম আচরণের পরও প্রশাসনের টনক নড়ে না?
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা, আইন উপদেষ্টা আমাদের জীবনকে ফাঁসির মঞ্চে রেখে, আজ কেন তাদের (আওয়ামী লীগকে) সুযোগ করে দেওয়া হচ্ছে। বারবার আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবির পরও কেন নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না। আজকে আমার বাড়িতে হামলা করার জন্য চক্রান্ত চালিয়েছে, হামলা করার জন্য পুরোপুরি প্ল্যান ছিল, পরবর্তীতে তারা হামলা চালাতে পারেনি। তারা আত্মগোপনে থেকে আমাদের হুমকি দিচ্ছে, আমাদের রাখবে না, আমাদের এলাকায় থাকতে দিবে না। তাদের কত বড় সাহস! আওয়ামী লীগের দোসররা এখনো আমাদের উপর হামলা চালাতে আসে, আমার মা-বাবার উপর হামলা চালাতে আসে। আমার বাবা-মা গ্রামে থাকে, আমার জীবন ও পরিবারের জীবন সংকটাপন্ন।
এ সময় পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তোলেন ইখলাস। টাকার বিনিময়ে তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ করে তিনি বলেন, পুলিশ ও সরকার কত টাকার লেনদেন করে বিদ্যুৎকে গ্রেপ্তার করছে না? কেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? এর জবাব দিতে হবে। টাকা লেনদেনের বিনিময়ে আমাদের জীবনকে সংকটে ফেলছে কেন?
নাগরিক পার্টির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে উদ্দেশ করে আহ্বায়ক ইখলাস বলেন, আপনার এই নমনীয়তা আমাদের জীবন আজ কবরের দিকে ধাবিত করছে।
এ সময় তিনি আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি বারবার সুযোগ দিচ্ছেন এই আসামিদের, আপনি সুযোগ না দিলে আমার বাড়িতে হামলা চালানোর সুযোগ পেত না।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনার পুলিশ প্রশাসন কি করে, প্রশাসন আমার ও জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ। আমি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জামালপুর জেলার সর্বোচ্চ পদে থাকা সত্ত্বেও আমার বাড়িতে যদি হামলা চালানো হয়, পুলিশ প্রশাসনকে জানানোর পরও যদি তাদের টনক না নড়ে, তাহলে এই স্বাধীনতার কোনো দরকার নেই। ৫ আগস্টের আগে মৃত হয়ে গেছি, আমরা মৃত্যুবরণ করব। আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হোক। আসামিদের গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে আমরণ অনশনের ঘোষণা দেন তিনি।
এ বিষয়ে মন্তব্য নেওয়ার জন্য জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মীর ইছহাক হোসেন ইখলাসের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ধরেননি।
জামালপুর সদর উপজেলা যুবলীগের ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক বদরুল হাসান বিদ্যুতের মোবাইলে একাধিকবার কল দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো. আতিক কালবেলাকে বলেন, মোবাইলের মাধ্যমে ঘটনা জেনেছি। ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি। এখনো পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত