রেলিক সিটির বিরুদ্ধে ৮ হাজার বিঘা জমি ‘দখলচেষ্টার’ অভিযোগ

| আপডেট :  ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৮  | প্রকাশিত :  ২৩ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৮

সাভারের বিরুলিয়া ইউনিয়নের কমলাপুর, রাজারবাগসহ অন্তত ১০ গ্রামের সাধারণ মানুষ বর্তমানে চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অভিযোগ উঠেছে, কথিত একটি হাউজিং প্রকল্প ‘রেলিক সিটি’ গ্রামের ফসলি জমি, বসতভিটা, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুলসহ ধর্মীয় ও সামাজিক স্থাপনাগুলো জোরপূর্বক দখলের চেষ্টা করছে।

সোমবার (২১ এপ্রিল) গ্রামবাসীরা শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেন রেলিক সিটির এই ভূমিদস্যু কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে। তবে প্রতিবাদ করায় পাল্টা হামলা, হুমকি ও ‘চাঁদাবাজি’র মতো অপবাদে পড়তে হয় তাদের। 

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) রেলিক সিটির পক্ষ থেকে একদল ভাড়াটে লোক এনে পাল্টা মানববন্ধন করে ভুক্তভোগীদের ‘চাঁদাবাজ’ আখ্যা দেওয়া হয়।

মানববন্ধনের সময় ভিডিও ধারণ করায় স্থানীয় যুবক সালাউদ্দিনের ওপর প্রকাশ্যে হামলা চালানো হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রেলিক সিটির চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজের নির্দেশে হামলা করা হয়। পরবর্তীতে সাংবাদিকদের সামনেই সালাউদ্দিনকে চাঁদাবাজ হিসেবে অপমান করা হয় এবং আরও একবার হামলা চালিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। বর্তমানে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

ভুক্তভোগীরা জানান, কোনো সরকারি অনুমোদন বা বৈধ মালিকানা ছাড়াই রেলিক সিটি কর্তৃপক্ষ ৮ হাজার ২৫১ বিঘা জমির নকশা তৈরি করে তা প্লট আকারে বিক্রি করছে। কমলাপুর, কুমারন, রাজারবাগ, সাধাপুর, চাকুলিয়া, চন্দপাড়া, রাজাশন, নিকরাইল, গান্ধারিয়া এবং বিলবাঘিল মৌজার জমিগুলো দখলের পাঁয়তারা চলছে বলেও অভিযোগ উঠে।

গ্রামবাসীরা জানান, তাদেরকে ভয় দেখিয়ে ও মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে গ্রাম ছাড়তে বাধ্য করার চক্রান্ত চলছে। ইতোমধ্যে নবাব স্টেটের জমি, সরকারি খাসজমি ও জলাভূমি ভরাট করে অন্তত ৩০০ কৃষকের ফসলি জমি ধ্বংস করেছে রেলিক সিটি।

এ বিষয়ে রেলিক সিটির চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ দাবি করেন, আমাদের ৬ বিঘা জমির বৈধ কাগজ আছে। অনুমোদনের প্রক্রিয়া চলছে। তিনি জানান, দশটি মৌজার নকশা থাকলেও বর্তমানে মাত্র দুটি মৌজায় সীমিত জমি কেনা হয়েছে।

এদিকে গ্রামবাসীরা সরকারের কাছে দাবি জানান, অবিলম্বে রেলিক সিটির মতো ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক এবং তাদের পৈত্রিক ভিটেমাটি ও কৃষিজমি রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হোক।

সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবুবকর সরকার বলেন, রেলিক সিটির বিরুদ্ধে কেউ লিখিত অভিযোগ করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সাভার সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির জানান, থানার ওসিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি তদন্ত করে মামলা নেওয়ার জন্য।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত