আইলার ১৬ বছর, দুর্বল বেড়িবাঁধে উৎকণ্ঠা আর কতদিন
উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূর্ণিঝড় আইলার জলোচ্ছ্বাসে উপকূল লন্ডভন্ড হয়ে যায়। আইলার ১৬ বছর পেরিয়ে গেলেও নির্মাণ হয়নি টেকসই বেড়িবাঁধ। প্রলয়ংকরী এই ঘূর্ণিঝড়ের জলোচ্ছ্বাসে খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরাসহ উপকূলের বিভিন্ন স্থানে ৫৯৭ কিলোমিটার বাঁধ জলোচ্ছ্বাসে ভেসে যায়। কয়রায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি অনেক মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। আইলার পর উপকূলের মানুষের দাবি ছিল টেকসই বেড়িবাঁধ। কিন্তু ১৬ বছরেও তা নির্মিত হয়নি।
প্রতি বছর বৈশাখ-জৈষ্ঠ (এপ্রিল-মে) মাস আসলে নদীর পানি ফুঁসে ওঠে। ভয়ে বুক ধড়ফড় শুরু করে। আবার না বাঁধ ভেঙে ঘরবাড়ি, জমিজায়গা ফসল সবকিছু ভাসায় না নিয়ে যায়। আবার ছেলেমেয়ে নিয়ে কই থাকব। খাব কী, ছটফট করতে করতে এমন কথাগুলো বলছিলেন উপকূলীয় জনপদ খুলনার কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী হরিণখোলা গ্রামের বয়োবৃদ্ধ নমিছা খাতুন। তিনি নদী ভাঙনজনিত দুর্যোগে ভিটেমাটি হারিয়ে পরিবার নিয়ে বাঁধের পাশে বসবাস করেন। আইলায় সব হারিয়ে তিনি এখন নিঃস্ব। আইলার স্মৃতি তাকে এখনো কাঁদায়। কয়রা উপজেলার যে কয়টি ঘূর্ণিঝড়ে এখানকার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে সেগুলো সব আঘাত এনেছে মে মাসে। তাই কয়রাবাসী মে মাস আসলে সব সময় আতঙ্কে থাকে।
জানা গেছে, ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ আইলার পর থেকে যত দুর্যোগ এসেছে সব বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ অর্থাৎ এপ্রিল-মে মাসে। এ কারণে এ সময়টিতে নমিছার মতো বাঁধের পাশের বাসিন্দাদের বুকের ধড়ফড়ানি বেড়ে যায়।
স্থানীয় বাসিন্দা রবিউল শেখ, জিয়াদ আলী, ফরিদা খাতুন, সাবিনা খাতুনসহ আরও কয়েকজন বলেন, আইলার পর থেকে প্রতি বছর নদীভাঙনের কবলে পড়তে হয়েছে তাদের। বেশির ভাগ মানুষ ফসলি জমি, বসতবাড়ি হারিয়েছেন। আশ্রয় নেওয়া বাঁধের জায়গা ভাঙতে-ভাঙতে সরু হয়ে গেছে।
উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী রফিকুল ইসলাম বলেন, গতবার মে মাসে ঘূর্ণিঝড় রেমালের ভয়ে ঘর ছাড়তি হয়েছিল। বাঁধ না ভাঙলেও উপচে পানি ঢুকেছিল। দিন-রাত সবার চেষ্টায় কোনোরকম রক্ষা পেয়েছি। এখন থেকে প্রতিনিয়ত নদীর পানি আরও বাড়বে। যে কারণে দুর্বল বাঁধ নিয়ে আমরা শঙ্কিত রয়েছি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত