ক্ষোভের মুখে সরানো হলো বিএনপির অনুষ্ঠানের উপস্থাপক এহসানকে

| আপডেট :  ০১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৮  | প্রকাশিত :  ০১ জুলাই ২০২৫, ০৬:৫৮

জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থান, শোক ও বিজয়ের প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিএনপি আয়োজিত অনুষ্ঠানের একজন উপস্থাপককে নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়েছে। এহসান মাহমুদ নামে এক সাংবাদিককে অনুষ্ঠান মঞ্চে উপস্থাপনা করতে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপি বিটের সাংবাদিকরা।

তারা এহসান মাহমুদকে স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মতো অনুষ্ঠানে উপস্থাপনায় আপত্তি জানান। পরে তাকে আর মঞ্চে উঠতে দেননি আয়োজকরা।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাজধানীর বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে এমন ঘটনা ঘটেছে। এদিন বেলা ৩টায় আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

এর আগে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন। সভাপতিত্ব করছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক রুহুল কবির রিজভী আহমদ। এ ছাড়া বক্তব্য দেন জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে শহীদ পরিবার সদস্যরা।

অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে রুহুল কবির রিজভী ঘোষণা করেন তিনজন বাকি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করবেন। যার মধ্যে একজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, একজন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, আরেকজন সাংবাদিক এহসান মাহমুদ।

পরে অনুষ্ঠানে শুরুতে কোরআন তিলাওয়াত ও দোয়া করেন ওলামা দলের সদস্য সচিব আবুল হোসেন। এরপরই ডায়েসের সামনে এসে এহসান মাহমুদ এক মিনিট নীরবতার ঘোষণা দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এহসান মাহমুদ মঞ্চে উঠে কথা বলতেই সামনে থেকে সাংবাদিকরা সমস্বরে ফ্যাসিস্ট, ফ্যাসিস্ট বলে আপত্তি জানান। নেতাকর্মীরাও তাকে মঞ্চে দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এ সময় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। পরে আপত্তির কথা শুনে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানিসহ অন্য নেতারা দাঁড়িয়ে যান। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের কানেও চিৎকার পৌঁছায়। এরপর এহসান মাহমুদকে উপস্থাপনা থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।

দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংবাদিকদের আপত্তির বিষয়টি তারেক রহমানের নজরে আসার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা পেয়ে এহসান মাহমুদকে বিরত রাখা হয়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত এক সিনিয়র সাংবাদিক বলেন, একসময় মুজিব কোর্ট পরে এহসান মাহমুদ ঘুরে বেড়াতেন। কখনো আওয়ামী লীগ, এখনো জাসদ পরিচয় দিতেন। আওয়ামী লীগ, জাসদের নেতাদের সঙ্গে সব সময় ওঠাবসা করতেন। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাও নিয়েছেন। অথচ সেই এহসান মাহমুদ এখন বিএনপির বড় বুদ্ধিজীবী। দলটির বিষয়গুলো গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কয়েকজন তরুণ নেতা বলেন, এহসান মাহমুদকে নিয়ে আপত্তির কথা শুনেছি। ১৭ বছর ধরে এই সাংবাদিককে তো আমরা কেউ দেখিনি। হঠাৎ সে কীভাবে গুরুত্বপূর্ণ এই অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক কমিটিতে জায়গা পেয়েছেন আমরাও জানি না। উপ-কমিটিতেও তিনি সদস্য সচিবও হয়েছেন। মঞ্চে উপস্থাপনাতেও দেখলাম এই লোককে।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, বিএনপিতে কি উপস্থাপনা করার কেউ নেই? অথচ ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনে দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন কিছু সাংবাদিক। তাদেরও তো কাজে লাগানো যেত।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত