সুসজ্জিত গাড়িতে পুলিশ কনস্টেবলের রাজকীয় বিদায়
অবসরের বিষণ্নতা কাটিয়ে ৩৫ বছরের কর্মজীবন শেষে রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা পেলেন এক পুলিশ কনস্টেবল। দেশের বিভিন্ন থানায় নিষ্ঠা, দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে চাকরি করেন পুলিশ কনস্টেবল অনল কুমার নাগ।
মঙ্গলবার (০২ জুলাই) ছিল তার চাকরি জীবনের শেষ দিন। সর্বশেষ কর্মস্থল মৌলভীবাজারের বড়লেখা থানা থেকে তিনি অবসর নিয়ে বাড়ি ফিরলেন।
বুধবার (০২ জুলাই) সকালে সহকর্মীরা তাকে ব্যতিক্রমী বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছেন। এ সময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। পরে নানা রঙে সুসজ্জিত ওসির সরকারি গাড়িতে তোলে তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।
বিদায়ী পুলিশ কনস্টেবল অনল কুমার নাগ সিলেটের বিয়ানীবাজার উপজেলার বাসিন্দা। ১৯৯১ সালে ১ জুন রাঙামাটি জেলার রাবুনিয়া আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নে চাকরি জীবনের শুরু। দীর্ঘ যাত্রায় সুনামের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন থানায় দায়িত্ব পালন করেন। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি দুই কন্যার জনক। বড় মেয়ে সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স শেষ সেমিস্টারের ছাত্রী ও ছোট মেয়ে এবার এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।
পুলিশ সুপার এমকেএইচ জাহাঙ্গীর হোসেনের নির্দেশনায় থানার ওসি মাহবুবুর রহমান মোল্লা ব্যতিক্রমী বিদায় সংবর্ধনার আয়োজন করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন থানার ওসি (তদন্ত) হাবিবুর রহমান, এসআই সুব্রত কুমার দাস, এসআই দেবল সরকারসহ থানার সকল পুলিশ সদস্যরা। থানা ভবনের করিডোরের দুই পাশে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে সহকর্মীরা ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে তাকে থানা ভবন থেকে ধীরে ধীরে সুসজ্জিত গাড়ির দিকে নিয়ে যান। এর আগে অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল অনল কুমার নাগকে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য থানার অফিসার ইনচার্জের সরকারি গাড়িটি নানা রঙে সুসজ্জিত করে রাখা হয়।
অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কনস্টেবল অনল কুমার নাগ জানান, সহকর্মীরা তাকে এভাবে সম্মান দেবেন তা কখনও কল্পনাও করেননি। চাকরি শেষে এমন সম্মান কয়জনের ভাগ্যে জুটে। চাকরিকালীন তিনি চেষ্টা করেছেন সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের। হয়তো তিনি কিছুটা পেরেছেন বলেই সহকর্মীরা তাকে এত সম্মান দিয়েছে, মনে হচ্ছে পুলিশের চাকরিতে যাওয়া তার সার্থক হয়েছে।
থানার ওসি মাহবুবুর রহমান মোল্লা জানান, অবসরে যাওয়া পুলিশ সদস্য অনল কুমার নাগ পুলিশ বিভাগে যথেষ্ট অবদান রেখেছেন, নিজেও সুনাম অর্জন করেছেন। বিদায়লগ্নে আমরা চেষ্টা করেছি তাকে সসম্মানে বিদায় দিতে। এসপির নির্দেশে প্রবীণ পুলিশ সদস্যের চাকরি জীবনের শেষ মুহূর্তটি স্মরণীয় রাখতে সহকর্মীরা মিলে এ আয়োজন করি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত