নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে প্রতিযোগিতা কমিশনের আইনি সংস্কার দাবি
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনের যথাযথ প্রয়োগে প্রতিযোগিতা কমিশনের আইনি কাঠামোর সংস্কার দাবি করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
রোববার (২৭ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে এ সংক্রান্ত সংস্কার দাবি করেন তারা।
বিবৃতিতে আইনি কাঠামোর সংস্কার বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজিয়া কবির গণমাধ্যমকে বলেন, সত্যিকার অর্থে সচ্ছতা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে প্রতিযোগিতা কমিশন আইন-২০১২ এর ৩৭(২) ধারা অনতিবিলম্বে বাতিল পূর্বক প্রতিযোগিতা আইন, ২০১২ সংস্কার করা জরুরি। তা না হলে কমিশনের ও সরকারের উপর জনগণের এবং অংশীজনদের আস্থার সংকট বাড়বে।
আর কমিশনের সাবেক পরিচালক খালিদ এ নাসের বলেন, প্রতিযোগিতা কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো বাজার এনালাইসিস করা। কেন নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি হলো, এর পেছনে কি কি কারণ থাকতে পারে, সেটা খুঁজে বের করা। প্রতিযোগিতা কমিশনকে যথাযথ ভূমিকা রাখতে হলে এখানে অর্থনীতিবিদ প্রয়োজন।
প্রতিযোগিতা আইন বিশেষজ্ঞ ব্যারিস্টার হামিদুল মিসবাহ বলেন, দেশ ও জনগণের বৃহত্তর স্বার্থে প্রতিযোগিতা কমিশনের আইন পুনর্গঠন করতে হবে। কারও বিরুদ্ধে মামলা করতে হলে বা শাস্তি দিতে হলে তা আইন মেনে করতে হবে। মামলার কার্যক্রম ভুলভাবে পরিচালনা করা বন্ধ করতে হবে, যা এখনো কমিশন করে আসছে। তা না হলে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করা হতে বিরত থাকবে। যাতে করে বাজারে পণ্যের জোগানে ঘাটতি দেখা দিবে ও বাড়তে থাকবে পণ্যের মূল্য, অস্থিতিশীল হবে বাজার। আর এর খেসারত দিতে হবে দেশের জনগণ ও অর্থনীতিকে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর খামারিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি সভা করেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন। সভায় কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, আমরা পুরোপুরিভাবে সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে চাই। আপনাদের সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। যদি সহযোগিতা না করেন, তাহলে প্রতিযোগিতা কমিশনের ক্ষমতা আছে আপনাদের বড় অঙ্কের শাস্তি দেওয়ার।
এ সময় বাংলাদেশ ব্রিডারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান কমিশনের সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, ‘মামলা দিয়ে পোলট্রি কোম্পানিগুলোকে হ্যারাসমেন্ট করা হয়েছে। ফলে এখন আর বিনিয়োগের পরিবেশ নেই। মামলাগুলো এখন প্রত্যাহার করা উচিত। বাংলাদেশ ব্রিডারস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি কাজী জাহিন হাসান বলেন, ডিমের বাজারে প্রতিদিন কয়েক হাজার উৎপাদনকারী ও পাইকারি বিক্রেতারা বেচাকেনা করে। এত সংখ্যক লোক যখন কোনো বাজারে বেচাকেনা করে তখন বাজারে কোনো সিন্ডিকেট থাকতে পারে না। বড় খামারিগুলো মোট ডিমের চাহিদার ২০% উৎপাদন করে, আর বাকি ৮০% উৎপাদন করে প্রান্তিক ছোট খামারিগুলো। বন্যা, গরম ও অতিবৃষ্টির কারণে অনেক প্রান্তিক খামার ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে করে ডিমের উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। চাহিদার তুলনায় বাজারে ডিমের জোগান কম। তাছাড়া মুরগির খাদ্যের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। কাজী জাহিন হাসান এ সময় কমিশনে একজন অর্থনীতিবিদ নিয়োগ দিয়ে নিয়মিতভাবে বাজার বিশ্লেষণ করার তাগিদ দেন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত