স্বপ্নের নায়ক নির্ধারণ করা কঠিন : ইফফাত আরা তিথি
শোবিজের পরিচিত মুখ ইফফাত আরা তিথি। নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন এই তরুণী। তবে বড় পর্দার স্বপ্নও তার মনে অটুট। নিজের নানান পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলেছেন কালবেলার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার—রাজু আহমেদ
অভিনয়ের পথচলা শুরু কীভাবে?
ইফফাত আরা তিথি: আমার পরিবার ছিল সংস্কৃতিমনা। বাবা, মা, বোন—সবারই থিয়েটারের প্রতি আগ্রহ ছিল ছোটবেলা থেকেই। আমি পারিবারিক পরিবেশে নাচ-গান ও অভিনয়ের সংস্পর্শে বড় হয়েছি। বোনের কাছ থেকে নাচ শিখেছি এবং বাবা-মায়ের কাছ থেকে অভিনয়ের হাতেখড়ি পেয়েছি। তাদের দেখে নাটকে কাজ করার ইচ্ছা জাগে। এরপর বাবা, পরিচালক দিন মোহাম্মদ মন্টুর একটি নাটকে শিশুশিল্পী হিসেবে কাজ করি। ২০১৫-২০১৬ সালের দিকে শখের বসে টিভিসি ও ওভিসিতে কাজ শুরু করি। এরপর কিছুটা সময় বিরতি নিয়ে আবার একটি ধারাবাহিক নাটকে কাজ শুরু করি, যা প্রায় চার বছর ধরে চলেছিল। ওই সময়ে প্রতিমাসে ১৫ থেকে ২০ দিন শুটিং করতে হতো। সিরিয়ালটি শেষ হওয়ার পর নাটকে কাজ শুরু করি, একে একে প্রায় একশর বেশি নাটকে অভিনয় করা হয়ে গেছে।
ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায় যাওয়ার ইচ্ছা আছে কি না?
ইফফাত আরা তিথি: বড় পর্দায় কাজ করার স্বপ্ন অবশ্যই আছে। এরই মধ্যে একটি সরকারি অনুদানের সিনেমায় কাজ করেছি, যা এখনো পোস্ট-প্রোডাকশনে রয়েছে। কখন সিনেমাটি মুক্তি পাবে তা এখনো নিশ্চিত নই। তবে আমি তাড়াহুড়ো করে বড় পর্দায় যেতে চাই না। ধীরে ধীরে এবং সময় নিয়ে সিনেমায় পা রাখতে চাই, যাতে আমি নিজেকে ভালোভাবে প্রস্তুত করতে পারি।
অভিনয়ের জন্য দর্শকের ভালোবাসা কেমন পাচ্ছেন?
ইফফাত আরা তিথি: আমি সবসময়ই কম কাজ করি। কিন্তু প্রতিটি কাজের মধ্যেই মান বজায় রাখতে চেষ্টা করি। দর্শকদের মুখে হাসি ফোটানোই আমার প্রধান উদ্দেশ্য। তাদের ভালোবাসা এবং সাপোর্ট আমাকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। তারা আমাকে গ্রহণ করেছে বলেই আজ আমি এখানে পৌঁছাতে পেরেছি। আগামীতে যেন দর্শকরা আরও ভালো গল্পে আমার অভিনয় উপভোগ করতে পারে, সেটাই আমার ইচ্ছা।
নাটকের ইন্ডাস্ট্রি কেমন করছে? উন্নতির দিকে যাচ্ছে নাকি অবনতির?
ইফফাত আরা তিথি: আমার মনে হয় বর্তমানে বেশ ভালো করছে। আমাদের নাটক দর্শক দেখছে এবং প্রশংসা করছে। আলহামদুলিল্লাহ, কাজের মানও দিন দিন আরও উন্নতি করছে।
আগামীর নাটকের ইন্ডাস্ট্রি কেমন চান?
ইফফাত আরা তিথি: আমি চাই ভালো গল্পের নাটক তৈরি হোক। আমরা সবাই মানসম্মত গল্পে কাজ করতে চাই। তবে সবসময় ভালো স্ক্রিপ্ট পাওয়া যায় না। আশা করি ভবিষ্যতে ভালো গল্পের নাটকগুলোর সংখ্যা বাড়বে, যা দর্শকদের ভালো লাগবে এবং আমাদের ইন্ডাস্ট্রি আরও সমৃদ্ধ হবে।
সিনেমায় স্বপ্নের নায়ক কে?
ইফফাত আরা তিথি: স্বপ্নের নায়ক নির্ধারণ করা কঠিন। তবে ছোটবেলায় একটি নাটকে আরিফিন শুভর অভিনয় দেখে আমি তার ভক্ত হয়ে যাই। তাকে আমি আমার সিনেমার নায়ক হিসেবে দেখতে চাই। যদিও শাকিব খানের সঙ্গে কাজ করাও বড় একটি সুযোগ হবে, কিন্তু শুভ আমার প্রিয়।
শুটিংয়ে মজার কোনো স্মৃতি? যা মনে পড়লে এখনো হাসি পায়…
ইফফাত আরা তিথি: হ্যাঁ, একবারের কথা মনে পড়লে এখনো হাসি পায়। একটি নাটকে আমার দুর্ঘটনার দৃশ্য ছিল। শীতকালে, পাতলা পোশাক পরে রাস্তায় শুয়ে ছিলাম। ঠান্ডা সহ্য করতে পারছিলাম না, প্রচণ্ড ঠান্ডায় কাঁদছিলাম। সেই সময় আলভী (অভিনেতা যাহের আলভী) এসে জিজ্ঞেস করেছিল, কেন কাঁদছি। পরে সে নিজেই বুঝে গিয়েছিল আমার কষ্ট। তখন পরিস্থিতি খুব কঠিন ছিল, কিন্তু এখন মনে পড়লে মজা লাগে।
পছন্দের অভিনেতা বা বন্ধু?
ইফফাত আরা তিথি: অধিকাংশ নাটকে আমার সহশিল্পী হিসেবে আলভী ছিলেন। দর্শক আমাদের ক্যামেস্ট্রি অনেক পছন্দ করে এবং এখনো অনেক নাটকে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি। আলভী শুধুই সহশিল্পী নয়, বরং সে আমার সবচেয়ে কাছের বন্ধু। আমাদের বন্ধুত্ব আমাদের কাজকে আরও সহজ এবং আনন্দময় করে তুলেছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত