নির্বাচনে ইহুদি সম্প্রদায় থেকে কত অর্থ নিয়েছেন ট্রাম্প ও কমলা
রাত পোহালে দিনের শুরু তারপর রাত তারপর ইতিহাসের আরেকটি অধ্যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২৪। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, একদিকে রয়েছে ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধ, অপরদিকে রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘর্ষ এবং এর মাঝেই ইসরায়েলের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে লেবানন-ইরানও জড়িয়ে পড়ছে।
বিশ্ব পরিস্থিতির জটিল রাজনীতিতে এ নির্বাচন যা শুধু মার্কিন জনগণের জন্যই নয় বরং পুরো বিশ্বের জন্য বিশেষভাবে নজরকাড়া।
প্রেক্ষাপট যখন এই তখন সেই সময় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস উভয়েই নির্বাচনী তহবিল সংগ্রহে যুক্তরাষ্ট্রের ইহুদি সম্প্রদায়ের সমর্থন ও দানপ্রাপ্তির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন।
মার্কিন নির্বাচনে ইহুদি সম্প্রদায়ের অনুদান ও প্রভাব সবসময়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সম্পর্কের কারণে।
বিশেষ করে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বচনী তহবিলে ইহুদি সম্প্রদায়ের বিভিন্ন দাতা লক্ষাধিক ডলার অবদান রেখেছেন বলে জানা যায়। তবে সঠিক পরিসংখ্যান নেই। উল্লেখ্য, শুধু ইলন মাস্ক ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণায় প্রায় $১১৮ মিলিয়ন ডলার ব্যয় করেছেন।
এই অর্থ মাস্ক তার আমেরিকা পিএসি (America PAC)-এর মাধ্যমে দিয়েছেন, যা ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতা সমর্থন এবং গুরুত্বপূর্ণ রাজ্যে ভোটারদের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে গঠিত। মাস্কের অবদান ট্রাম্পের জন্য অন্যতম প্রধান দাতা হিসেবে তাকে অবস্থান করে।
এ ছাড়া ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় তার প্রশাসন ইসরায়েলের প্রতি বিশেষ সমর্থন দেখিয়েছেন। ২০১৭ সালে ট্রাম্প ‘জেরুজালেমকে’ ইসরায়েলের রাজধানী হিসেবে স্বীকৃতি দেন। একইসঙ্গে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস সরিয়ে সেখানে নিয়ে যান।
সেইসঙ্গে, ইসরায়েলের সঙ্গে আরব দেশগুলোর সম্পর্ক প্রতিষ্ঠায় ‘আব্রাহাম চুক্তি’ সফলভাবে সম্পাদন করেন। যা তাকে ইহুদি সম্প্রদায়ের অনেকের কাছে জনপ্রিয় করে তোলে।
বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এ দৌড়ে পিছিয়ে নেই। ২০২৪ সালের নির্বাচনের জন্য প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার সংগ্রহ করেছেন। তার তহবিলে ইহুদি দাতাদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ এসেছে, যদিও নির্দিষ্ট পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি, তবে এটি প্রচারণার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎস।
প্রসঙ্গক্রমে, কমলার সমর্থকদের মধ্যে রয়েছেন বিশেষত প্রগতিশীল ইহুদি দাতারা, যারা মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি স্থাপন এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্বের শান্তিপূর্ণ সমাধান প্রত্যাশা করেন।
এ ছাড়া হ্যারিসের রাজনৈতিক অবস্থান ও নীতির ভারসাম্যপূর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির কারণে এই সম্প্রদায় তার প্রচারণার প্রতি সমর্থন জানিয়েছে। কমলার প্রচারণায় ইহুদি সম্প্রদায়ের থেকে উল্লেখযোগ্য তহবিল আসার সম্ভাবনা রয়েছে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত
এদিকে মধ্যপ্রাচ্য রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ইহুদি সম্প্রদায়ের তহবিল ট্রাম্প ও হ্যারিস উভয়ের মধ্যপ্রাচ্য নীতি ও নির্বাচনী প্রচারণায় বড় প্রভাব ফেলতে পারে। নির্বাচনী তহবিলে এই অর্থায়ন শুধু তাদের নির্বাচনী শক্তিকেই বাড়াবে না বরং তাদের বিভিন্ন মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে তাদের বর্তমান অবস্থানকেও প্রভাবিত করতে পারে।
বিশেষ করে, ইহুদি দাতাদের সমর্থন প্রাপ্তির জন্য উভয় প্রার্থীর মধ্যপ্রাচ্য ইস্যুতে ভূমিকা এবং নীতির পার্থক্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে ২০২৩ সলের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
বিশ্বের অন্যতম অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠী হিসেবে মার্কিন ইহুদি সম্প্রদায়ের সমর্থন, বিশেষ করে তহবিল দানের বিষয়টি নির্বাচনী প্রচারণায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে আসছে।
সূত্র : নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, ব্লুমবার্গ, দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট, পলিটিকো, আল জাজিরা।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত