অন্তঃসত্ত্বা অধ্যক্ষকে চাকরিচ্যুত করা মানবাধিকার লঙ্ঘন : মানবাধিকার কমিশন
দুই বছরে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ায় নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে বিধি বহির্ভূতভাবে জোরপূর্বক চাকরিচ্যুত করা অমানবিক ও মানবাধিকার লঙ্ঘন। কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেসঙ্গে এ ঘটনায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত অভিযোগ (সুয়োমটো) গ্রহণ করেছে।
জাতীয় কমিশনের চেয়ারম্যান ড. কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, মাতৃত্বকালীন ছুটি একটি অধিকার এবং এ বিষয়ে আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। কর্মক্ষেত্রে নারীর অধিকার ও মর্যাদা নিশ্চিতে পিছিয়ে থাকার কোনো সুযোগ নেই। এই ঘটনাটি অনৈতিক এবং অপরাধমূলক। এ বিষয়ে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করাসহ প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আইননানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।
চট্টগ্রাম ইমপেরিয়াল কলেজ অব নার্সিং ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে জোর করে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এছাড়া, মধ্যরাতে তার ৮ মাসের শিশুসহ ওই নারী শিক্ষককে কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। দুই বছরে দ্বিতীয়বার অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার কারণে এমন আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ডলি আক্তার।
তিনি জানান, ডাক্তারি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানতে পারেন তিনি পুনরায় অন্তঃসত্ত্বা হয়েছেন। কলেজ কর্তৃপক্ষ বিষয়টি জানার পর থেকে নানাভাবে হেনস্তা শুরু করে। একপর্যায়ে প্রতিষ্ঠানটির মানবসম্পদ বিভাগে পদত্যাগপত্র জমা দিতে বলেন। অন্যথায় চাকরিচ্যুত করার হুমকি দেওয়া হয়।
তিনি আরও জানান, পদত্যাগ না করায় ৯ অক্টোবর বিকালে কর্তৃপক্ষ তাকে মানবসম্পদ বিভাগে ডেকে নিয়ে পদত্যাগ করতে জোর করেন। তখন তাকে একটি চাকরিচ্যুতির নোটিশ ধরিয়ে দেয়। তৎক্ষণাৎ কলেজ সংক্রান্ত সব কাগজপত্র কলেজ সেক্রেটারির কাছে বুঝিয়ে দিয়ে কলেজ হোস্টেল ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেন। শুধু তাই নয়, কর্তৃপক্ষ অমানবিকভাবে তাকে ওই দিনই মধ্যরাতে আট মাস বয়সী সন্তানসহ অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় কলেজের হোস্টেল থেকে বের করে নগরীর হোটেল পেনিনসুলায় রেখে আসে।
অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইননানুগ ব্যবস্থার মাধ্যমে স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের সচিবকে আগামী ২৪ নভেম্বর এর মধ্যে কমিশনে প্রতিবেদন প্রেরণ করতে বলা হয়।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত