অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্রসংস্কার ও নির্বাচন একইসঙ্গে ভাবতে হবে : ভিপি নুর
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেছেন, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে যে জনআকাঙ্ক্ষা তৈরি হয়েছে সে আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে রাষ্ট্রসংস্কার ও নির্বাচন একইসঙ্গে ভাবতে হবে। রাষ্ট্র সংস্কারের আগে নির্বাচন দিলে জনগণের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হবে না।
শুক্রবার (৮ নভেম্বর) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে গণঅধিকার পরিষদের বিভাগীয় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নুর বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ ও চার বছর মেয়াদী সংসদ সংস্কারের প্রস্তাবনা দিচ্ছে। সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন রাজনীতিতে একটা ভারসাম্য আনবে। আগামীতে কোনো সরকারকে স্বৈরাচারী হওয়ার হাত থেকে রক্ষা করবে।
ডাকসুর সাবেক এই ভিপির দাবি, এখন ভোটের অধিকার, ন্যায় বিচার পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা জেগেছে। কিন্তু গত ৫৩ বছর দেশে যে রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় এসেছে তারা সবাই আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে নির্যাতন-নিপীড়ন ও গণবিরোধী অবস্থান নিয়েছে।
এর আগে জাতীয় পার্টির বিক্ষোভ কর্মসূচি প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে দলটির সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।
জাতীয় পার্টিকে উদ্দেশ্য করে নুর বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে ছাত্র জনতার রক্তাক্ত সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিবাদের দুঃশাসনের অবসান হয়েছে। কিন্তু সারা দেশে আওয়ামী লীগের দোসর হিসেবে যারা ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে তাদের আস্ফালন থামেনি। রংপুরের মাটিতে গণ অধিকার পরিষদের নেতাদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও কটুক্তি করা হয়েছে তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, রংপুরে আবু সাইদের রক্ত, ছাত্র-জনতার রক্তে ভেজা সারা দেশের মাটি এখনো শুকায়নি। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগকে যারা পুনর্বাসনের চেষ্টা করবে, ছাত্র জনতাকে সঙ্গে নিয়ে তাদেরকে রুখে দেওয়া হবে। আগামীর বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদ ও তাদের দোসরদের কোনো জায়গা হবে না।
সাবেক এই ভিপি বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশ্যে বলছি গণহত্যাকারী ও তাদের দোসরদেরকে গ্রেপ্তার করে এই দেশের মানুষকে স্বস্তি প্রদান করুন। আপনারা যদি আইনগত ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হন জনগণ কিন্তু আইন হাতে তুলে নেবে। কিন্তু আমরা আইন হাতে তুলে নিতে চাই না। ছাত্র জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যে পরিবর্তন এসেছে সেই পরিবর্তনকে স্থায়ী করতে আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে স্থিতিশীল করতে চাই, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে সাহায্য করতে চাই।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরে তিস্তার যে দুঃখ, এই অঞ্চলের মানুষের যে ভোগান্তি কোনো সরকারই সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে এই অঞ্চলের মানুষের সমস্যা থেকে উত্তরন ঘটাতে পারেনি। এত দিনেও এখানে একটি ভালো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান নেই। রংপুরের ৪৭ শতাংশ মানুষ দরিদ্র হলেও কৃষিতে দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় জায়গা। রংপুরে উৎপাদিত ১০টি কৃষিপণ্য বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে। তাই এখানকার কৃষি নীতিকে গুরুত্ব দিয়ে এই অঞ্চলের মানুষের জন্য প্রকল্প নেওয়া হলে গোটা বাংলাদেশ লাভবান হবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত