এবার সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকেও সরানো হলো শেখ মুজিবের ছবি

| আপডেট :  ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫  | প্রকাশিত :  ১৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৫৫

সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. লতিফুল ইসলাম শিবলী। মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক আইডির এক পোস্টে এ দাবি করেন তিনি।

তিনি বলেন, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের প্রধান হিসেবে গতকাল (১১ নভেম্বর) আমি আমার দপ্তরের পক্ষ থেকে ফারুকীকে অভিনন্দন জানিয়েছি। গতকালের ছবিতে যারা আমাদের মাথার উপর শেখ মুজিবের ছবি দেখেছেন, তাদের জানার জন্য বলছি যে– ফারুকী আজ তার অফিস তথা সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় থেকে ফ্যাসিবাদের আইকন শেখ মুজিবের ছবি সরিয়ে ফেলেছেন। সম্ভবত সচিবালয়ে এই কাজ ফারুকীই প্রথম করলেন।

কালবেলার পাঠকদের জন্য মো. লতিফুল ইসলাম শিবলীর স্ট্যাটাসটি তুলে ধরা হল।

কবি নজরুল ইনস্টিটিউট হল সংস্কৃতি মন্ত্রনালয়ের অধীনে, সেই অর্থে আমার দপ্তরের মন্ত্রী বা উপদেষ্টা  হলেন Mostofa Sarwar Farooki । দপ্তর প্রধান হিসেবে গতকাল আমি আমার দপ্তরের পক্ষ থেকে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছি। এটাকে ফারুকী হেটারসরা দোষ হিসেবে দেখছে। অসুবিধা নেই। 

আমার সাথে ফারুকির সম্পর্ক ভাই ও বন্ধুর মত। এই সম্পর্ক প্রায় ২৫ বছরের পুরাতন। ফারুকীর স্ত্রী তিশা ও তার ভাই ইথেন আমার ছোট ভাই-বোনের মত। তাদের বাবা মা আমাকে সন্তানতুল্য আদর করতেন। সেই ফারুকী এখন কর্মসূত্রে আমার দপ্তরের মন্ত্রী। এই দুই সম্পর্কের কারণে আমার কাজের ক্ষেত্রটা অনেক সহজ হবে, এটাই স্বাভাবিক। আমার কাছে নজরুল ইনস্টিটিউট কোন চাকরির জায়গা না। নজরুল আমার সাংস্কৃতিক বিপ্লবের হাতিয়ার। যে হাতিয়ার দিয়ে আমি ফ্যাসিবাদের ন্যারেটীভের বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমেছি। এই লড়াইয়ে আমার মত ফারুকিও প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। 

ফারুকি দোষেগুনে মেশানো একজন মানুষ। এই মন্ত্রণালয় চালানোর যোগ্যতা তার আছে। অতীতে তার ফ্যাসিবাদের সঙ্গে ঘেঁষাঘেসির যেমন প্রমাণ আছে, তেমনি তাদের বিরোধিতা করারও প্রমাণ আছে। আমি খুব ভাল করেই জানি আওয়ামী ফ্যাসিসদের দ্বারা সে কেমন নিগৃহীত হয়েছে।

জুলাইয়ের তীব্র দিনগুলিতে আমরা যখন আসহায়ের মত দেশের সেলেব্রিটি বুদ্ধিজীবীদের সমর্থনের আশায় তাকিয়ে ছিলাম, তখন ২/১ জন ছাড়া আর কাউকে আমাদের পাশে পাইনি। সেই জুলাইয়ে ২/১ জনের মধ্যে ফারুকী ছিলেন একজন। ফারুকীর সেই সময়ের স্ট্যাটাসগুলো অনেক তরুণকে সাহস জুগিয়েছে। 

অনেকের মত সে চুপ থাকেনি। নিশ্চিত নিরাপত্তার জীবন ফেলে ফারুকী রিস্ক নিয়েছিল। জুলাই আন্দোলন ফেইল করলে আমাদের অনেকের মত ফারুকীর পরিণতিও ভয়াবহ হত। আমি ফারুকীর জুলাইয়ের ভূমিকার জন্য তার অতীত ভুলতে রাজি আছি। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল। 

আর এখন থেকে ভবিষ্যতের ফারুকী তো আমাদের নাগালের মধ্যেই থাকবে। আমি ইনসাফ থেকে কখনই নড়ব না ইনশাআল্লাহ। ফারুকী যতক্ষণ ইনসাফের উপর থাকবে ততক্ষণই সে আমার নেতা। ইনসাফ থেকে সরে দাঁড়ালে সবার আগে আমিই তার বিরুদ্ধে দাঁড়াব। ইনসাফের প্রশ্নে আমি কারো পরোওয়া করি না। মনে রাখবেন আমি এই কথা যার জন্য বলছি পদাধীকার বলে তিনি এখন আমার বস। এবং তিনি আমার বন্ধু তালিকায় আছেন।

গতকালের ছবিতে যারা আমাদের মাথার উপর শেখ মুজিবের ছবি দেখেছেন, তাদের জানার জন্য বলছি যে – ফারুকী আজ তার অফিস তথা সংস্কৃতি মন্ত্রলায় থেকে ফ্যাসিবাদের আইকন শেখ মুজিবের ছবি সরিয়ে ফেলেছেন। সম্ভবত সচিবালয়ে এই কাজ ফারুকীই প্রথম করলেন।

দায়িত্বপ্রাপ্ত ফারুকীর মধ্যে আমি সেই স্পিরিট দেখেছি – সে আমাদের বিশ্বাসের মর্যাদা রাখবে ইনশাল্লাহ। আমরা একটু অপেক্ষা করি আর তার কর্মের দিকে তাকিয়ে থাকি। আমি সর্বদা আপনাদের ভালো পরামর্শ তার কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য আপনাদের সাথে আছি। আমাকে ভুল বোঝার দরকার নাই।

প্রসঙ্গত, গত ১০ নভেম্বর সন্ধ্যায় মোস্তফা সরয়ার ফারুকী উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নেন। সেদিন রাতেই তাকে সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়। 

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত