নিহত সেই মোস্ট ওয়ান্টেড পার্সনের খোঁজ মেলে যেভাবে
ইয়াহিয়া সিনওয়ার, একজন নেতা, একজন বীরযোদ্ধা, যিনি ছিলেন অবৈধ দখলদারদের জন্য একটি মূর্তিমান আতঙ্ক। অসংখ্যবার যাকে হত্যার চেষ্টা করেছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। ২০১৭ সাল থেকেই তাকে বলা হচ্ছিল ইসরায়েলের মোস্ট ওয়ান্টেড পার্সন।
গত বছরে গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই বলা হচ্ছিল কোনো এক সুরক্ষিত সুরঙ্গে লুকিয়ে রয়েছেন সিনওয়ার। আর তার পাহারায় নিয়োজিত দুর্ধর্ষ অস্ত্রধারী গার্ড। শুধু তাই নয়, ইসরায়েলি হামলা থেকে বাঁচতে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর জিম্মি করা ইসরায়েলিদের চারপাশে রাখা হয়েছে। সেইসব তথ্য মিথ্যা প্রমাণ করে সম্মুখ যুদ্ধে লড়াই করে নিহত হয়েছেন এই স্বাধীনতাকামী যোদ্ধা। যুদ্ধ শুরুর এক বছর পর ঠিক কীভাবে তাকে খুঁজে পেল ইসরায়েল এটিই এখন বড় প্রশ্ন।
গেল এক বছর ধরে ইসরায়েলের হাজার হাজার সৈন্য সিনওয়ারের হদিস বের করতে ড্রোন, বৈদ্যুতিক আড়ি পাতার যন্ত্র এবং গোপন তথ্যদাতাদের নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে চেষ্টা চালিয়ে গেছে। তবে এবার আইডিএফ জানিয়েছে, তাদের ৮২৮তম বিসলামাক ব্রিগেডের একটি দল বুধবার (১৬ অক্টোবর) রাফার তাল আল-সুলতান এলাকায় টহল দিচ্ছিল। সেখানে একটি ভবনে তিনজন সশস্ত্র ব্যক্তিকে শনাক্ত করা হয় এবং তারা ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে নিহত হন। তখনও সেনারা জানতেন না তারা কত বড় সাফল্য অর্জন করেছেন।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সেনারা সেই ভবনে প্রবেশ করেন। এ সময় তারা অবাক হন। কারণ, তিনজনের একজন অবিকল সিনওয়ারের মতো দেখতে। শেষমেশ ডিএনএ ও দাঁত পরীক্ষায় সেনাদের ধারণা সত্য প্রমাণিত হয়।
ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে নিহত হওয়ার সময় সিনওয়ারের সঙ্গে কোনো ইসরায়েলি বন্দি ছিল না, যাদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ উঠে আসছিল সিনওয়ারের বিরুদ্ধে। এমনকি গাজার এই যোদ্ধা কোনো টানেলে লুকিয়েও ছিলেন না। বরং তার সশস্ত্র সহযোদ্ধাদের সঙ্গে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মোকাবেলা করতে করতে নিহত হয়েছেন।
আইডিএফ-এর মুখপাত্র ড্যানিয়েল হাগারি জানান, তারা জানতেন না সিনওয়ার সেখানে ছিলেন। তবে তারা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তারা তিনজনকে এক ঘর থেকে আরেক ঘরে পালাতে দেখে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালান। সিনওয়ার একা একটি বাড়িতে ঢুকে পড়েন এবং ড্রোনের মাধ্যমে তাকে শনাক্ত করে হত্যা করা হয়।
সিনওয়ারকে হত্যার পরও গাজা যুদ্ধ সমাপ্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন ইহুদিবাদী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। জানান, সিনওয়ারকে হত্যা করা ইসরায়েলের জন্য একটি প্রধান লক্ষ্য ছিল। গত বছরের ৭ অক্টোবরের হামলার পরপরই তাকে হত্যার জন্য অভিযান চালাচ্ছিল ইসরায়েলি বাহিনী। কিন্তু তার শেষ মানেই গাজা যুদ্ধ শেষ নয়। হামাসের হাত থেকে ১০১ জন জিম্মিকে বাঁচাতে এই যুদ্ধ চলবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত