৩৯তম বিশেষ বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিতদের স্মারকলিপি প্রদান
৩৯তম বিশেষ বিসিএসে নিয়োগবঞ্চিতদের পক্ষ থেকে বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনকে (পিএসসি) স্মারকলিপি দিয়েছে।
রোববার (২৪ নভেম্বর) দুপুর ১টার দিকে একটি প্রতিনিধি দল এই স্মারকলিপি প্রদান করেন। জনসংযোগ কর্মকর্তা এসএম মতিন এই স্মারকলিপি গ্রহণ করেন। এসময় ৩৯তম বিশেষ বিসিএসে সুপারিশবঞ্চিতদের একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, ২০১৭ সালের ১৫ জুন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় দেশের চিকিৎসক সংকট নিরসনে ১০ হাজার চিকিৎসক নিয়োগের লক্ষ্যে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষরকৃত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। তারই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন ৮ এপ্রিল ২০১৮ সালে ৩৯তম বিশেষ বিসিএস-এর প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে। ৩৯তম বিশেষ বিসিএস এর চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয় ২০১৯ সালের ৩০ এপ্রিল।
এই ফলাফলে ৪৫৪২ জন সহকারী সার্জন এবং ২৫০ জন ডেন্টাল সার্জন সুপারিশ প্রাপ্ত হন। অবশিষ্ট ৮৩৬০ জনকে নন ক্যাডার হিসেবে অভিনন্দন জানিয়ে অপেক্ষমান তালিকায় রাখা হয়। পদ স্বল্পতার কারণে তাদের সুপারিশ দেওয়া হয়নি বলে পদ সৃষ্টি হলে নিয়োগ প্রদানের আশ্বাস দেওয়া হয়। ৩০ এপ্রিল ২০২০ সালে ৩৯তম বিসিএস উত্তীর্ণ কিন্তু পদ স্বল্পতার জন্য পূর্বে সুপারিশপ্রাপ্ত নয় এমন ৮ হাজার ১০৭ জন (এমবিবিএস) প্রার্থীর মধ্য থেকে ২০০০ জনকে সুপারিশ প্রদান করা হয়।
ফলাফল প্রকাশের প্রজ্ঞাপনটিতে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের চাহিদা অনুযায়ী ও যথাযথ বিধি-বিধান অনুসরণ পূর্বক সুপারিশ প্রদান করা হয়েছে। একই সালে মহামারির ভেতরে চিকিৎসক সংকট যখন প্রবল তখন পূর্বের উত্তীর্ণ চিকিৎসকদের নিয়োগ বঞ্চিত রেখে পুনরায় ৪২তম বিসিএস-এর প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। চিকিৎসক সংকট নিরসনের উদ্দেশ্য ৩৯তম বিশেষ বিসিএস গ্রহণ করা হলেও উত্তীর্ণ চিকিৎসকদেরকে নিয়োগ বঞ্চিত রাখা হয়।
মহামারির ভেতর বিশেষ অনুমতি সাপেক্ষে পরীক্ষা গ্রহণে পিএসসি বাধ্য হয়। ৪২তম বিসিএস এর প্রজ্ঞাপনে দুই হাজার চিকিৎসক নিয়োগের কথা বলা হলেও রাষ্ট্রের ক্ষমতা বলে ৪০০০ জন চিকিৎসককে ক্যাডার পদে সুপারিশ করা হয়। সরকারি কর্মকমিশন একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্তেও উত্তীর্ণ প্রার্থীদের বাদ রেখে সরকারের আজ্ঞা বহন করে।
২০২৩ সালের ১০ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে প্রকাশিত প্রস্তাবনা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, দেশে ৩২ হাজার ৪১৬টি পদের বিপরীতে ২৬ হাজার ৬৪৮ জন সরকারি চিকিৎসক কর্মরত আছেন। এখনো ৫৮৪৮ টি পদ খালি আছে। পরিচালক মহোদয় প্রস্তাব করেছেন- স্ট্যান্ডার্ড চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আরও ৮৩০০টি পদ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। প্রতি ১০ হাজার জনগণের জন্য মাত্র দুইজন চিকিৎসক রয়েছে। এত এত চিকিৎসক ঘাটতির পরেও যোগ্য ও মেধাবী চিকিৎসকদেরকে বছরের পর বছর নিয়োগ বঞ্চিত রাখা হয়েছে। বিগত সরকারের আমলে স্পষ্ট দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। মন্ত্রীদের বিশেষ প্যাডে স্বাক্ষরিত আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্ম কমিশন প্রার্থীদেরকে সুপারিশ প্রদান করে। বারবার আমরা পাবলিক সার্ভিস কমিশন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় নিয়োগ পাওয়ার আশায় গিয়েও ব্যর্থ হয়েছি। এমতাবস্থায় আমরা আদালতের দারস্ত হই।
২০২২ সালে আমরা আমাদের পক্ষে রায় পাই। সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কাছে আমাদের আবেদন। ৩৯তম বিশেষ বিসিএস উত্তীর্ণ চিকিৎসকদের দ্রুত সুপারিশ দিয়ে নিয়োগ প্রদানের উদ্যোগ গ্রহণ করুন।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত