ঢাকা আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ৭ ডিসেম্বর
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে আন্তর্জাতিক মর্যাদা সম্পন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোাগ্রামিং কনটেস্টের (আইসিপিসি) ঢাকা আঞ্চলিক পর্ব অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ৭ ডিসেম্বর। সাভারের ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটি ক্যাম্পাসের স্বাধীনতা সম্মেলন কেন্দ্রে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিযোগিতার আয়োজন এবং এর বিশেষত্ব নিয়ে রোববার (২৪ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতার নানা দিক তুলে ধরেন আইসিপিসি ঢাকা আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ২০২৪-এর আঞ্চলিক পরিচালক এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আখতার হোসেন।
‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. নাদির বিন আলী। এ সময় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সহকারী অধ্যাপক ও ডেপুটি আঞ্চলিক পরিচালক সাইফুল ইসলাম, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেডের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাহআলম পাটোয়ারী, বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের ব্যবস্থাপক (সিস্টেমস) মো. গোলাম রাব্বানী, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনসংযোগ বিভাগের ঊর্ধ্বতন সহকারী পরিচালক মো. আনোয়ার হাবিব কাজল, সিএসই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. জাহাঙ্গীর আলম, প্রভাষক মো. ফেরদৌস আহমেদ ফয়সাল ও প্রভাষক তানজিনা আফরোজ রিমি।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আইসিপিসি ফাউন্ডেশন পরিচালিত ইন্টারন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং কনটেস্ট (আইসিপিসি), বিশ্বব্যাপী শিক্ষার্থীদের জন্য প্রোগ্রামিং দক্ষতা, দলগত সমন্বয় এবং সমস্যা সমাধানের সক্ষমতা প্রদর্শনের অন্যতম বৃহৎ মঞ্চ। বিশ্বব্যাপী এ প্রতিযোগিতায় প্রতি বছর ৩,০০০-এরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০,০০০ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে।
আঞ্চলিক পর্যায়ে প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করে ওয়ার্ল্ড ফাইনালের জন্য সেরা দল নির্বাচন করা হয়। ঢাকা আঞ্চলিক পর্বে বিজয়ী দলগুলো ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড ফাইনালে সরাসরি অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। বিশ্বের বৃহত্তম অনসাইট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা ঢাকা আঞ্চলিক আইসিপিসি ২০২৪, অংশগ্রহণকারী ৩০৮টি দল নিয়ে বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় অনসাইট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার মর্যাদা অর্জন করেছে। প্রিলিমিনারি রাউন্ডে বাংলাদেশের ১৪৮টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিভিন্ন আইটি ইনস্টিটিউটের ২,৪৮৯টি দল অংশগ্রহণ করে। এ রাউন্ডের ফলাফলের ভিত্তিতে এবং অতীতের সাফল্য ও পারফরম্যান্স বিবেচনায় এ দলগুলো নির্বাচিত হয়েছে। বিশ্বব্যাপী এ প্রতিযোগিতার বিশ্ব ফাইনাল আগামী ২০২৫ সালে কোথায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে তা নিয়ে এখনো কোনো ঘোষণা না এলেও চায়না এবং মেক্সিকোর মধ্যে সর্বশেষ পর্যায়ের বৈঠক চলছে, যে দেশই আয়োজন করুক না কেন তা ওই দেশের জন্য একটি বড় সম্মান।
সংবাদ সম্মেলনে আরও জানানো হয়, আগামী ৭ ডিসেম্বর সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত (বিরতিহীন) সাভারের ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা সম্মেলন কেন্দ্রে এ প্রতিযোগিতা চলবে। শীর্ষস্থানীয় ১০টি ইউনিভার্সিটি নগদ অর্থ পুরস্কার, সনদপত্র এবং প্রথম ৩টি দল ও শীর্ষস্থানীয় নারী দল নগদ অর্থ পুরস্কার, সনদপত্র ও চ্যাম্পিয়ন ট্রফি অর্জনের সুযোগ পাবে।
প্রথম স্থান বিজয়ীরা ২০২৫ সালের ওয়ার্ল্ড ফাইনালে সরাসরি অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পাবে। এ ছাড়া সব বিজয়ী (চ্যাম্পিয়ন ইউনিভার্সিটি ছাড়া) ২০২৫ সালের এশিয়া ওয়েস্ট ফাইনালে সরাসরি অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পাবে। এশিয়া ওয়েস্ট ফাইনালে ঢাকাসহ ভারত, পাকিস্তান, ইরান, শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানের আঞ্চলিক বিজয়ীরাও অংশগ্রহণ করবে (চ্যাম্পিয়ন ইউনিভার্সিটি ছাড়া)। এশিয়া ওয়েস্টের শীর্ষস্থানীয় দলগুলোও ওয়ার্ল্ড ফাইনালে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ পাবে। এবারের আয়োজনে প্রোগ্রামিংয়ে নতুন প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে জুনিয়র কম্পিটিটিভ প্রোগ্রামিং কনটেস্ট অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যেখানে স্কুল পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করতে পারবে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
আইসিপিসি ২০২৪ প্রতিযোগিতার সফল আয়োজনের পেছনে বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠানের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। এর মধ্যে ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড প্লাটিনাম স্পন্সর হিসেবে সরাসরি পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করছে। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনে কারিগরি সহযোগিতায় যুক্ত রয়েছে। আর ড্যাফোডিল কম্পিউটার্স লিমিটেড হার্ডওয়্যার সাপোর্ট পার্টনার হিসেবে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তা প্রদান করছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
প্রতিযোগিতার বিশেষ দিকগুলো
১. মাইক্রো ক্রেডেনশিয়াল প্রোগ্রাম চালু : ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি অনুষদের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিযোগিতার পাশাপাশি বিশেষ মাইক্রো ক্রেডেনশিয়াল প্রোগ্রাম চালু করা হয়েছে। এই প্রোগ্রামের আওতায় শিক্ষার্থীরা AWS, Oracle and Competitive Programming-এর মতো বিশেষ দক্ষতা অর্জন করতে পারবে, যা তাদের আন্তর্জাতিক পেশাদার দক্ষতায় পরিণত করবে।
২. বৃহৎ পরিসরে আয়োজন : দেশের সর্ববৃহৎ জব ফেয়ার আয়োজন, যেখানে শীর্ষস্থানীয় আইটি কোম্পানিগুলো অংশগ্রহণ করবে। প্রতিযোগিতা চলাকালীন সময়ে লাইভ স্কোরবোর্ড প্রদর্শন এবং বিভিন্ন টেক টক সেশন।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং সহযোগী প্রতিষ্ঠানগুলোর চেষ্টায় এ বছরের প্রতিযোগিতা শুধু প্রযুক্তি শিক্ষার্থীদের জন্য নয়, বরং দেশের আইটি খাতের সামগ্রিক অগ্রগতির জন্য একটি মাইলফলক হিসেবে কাজ করবে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত