পরীক্ষায় ফেল করায় বিয়ের পীড়িতে কিশোরী, বিয়ে ভাঙলো প্রশাসন
এসএসসি পরীক্ষায় ফেল করায় বিয়ের পীড়িতে বসতে বাধ্য করা হচ্ছিল কিশোরীকে। বিয়ের দিন ঠিক করে সব আয়োজন সম্পন্ন। পরে বিয়ের দু-দিন আগে স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে ভেঙ্গে দেন বিয়ে।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যায় সিলেটের ধর্মপাশা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীনের নির্দেশে এ বাল্যবিবাহটি বন্ধ করা হয়। আগামীকাল বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) বিয়ের দিন ধার্য করা ছিল।
উপজেলা প্রশাসন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ধর্মপাশা উপজেলার রাজনগর গ্রামের ওই কিশোরীর (১৬) সঙ্গে নেত্রকোনা জেলার বারহাট্রা উপজেলার এক যুবকের (২৫) বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। আত্মীয় স্বজনরাও আসেন বিয়ে বাড়িতে। মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) বেলা ১টার দিকে বেসরকারি সংস্থা ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ কর্তৃক পরিচালিত উপজেলা শিশু ফোরাম নামের একটি সংগঠনের একজন সদস্য বাল্য বিবাহের আয়োজনের খবরটি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ গিয়াস উদ্দীনকে মোবাইলে জানান। পরে ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে খোঁজ নিয়ে এ বাল্যবিবাহটি বন্ধ করতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অলিদুজ্জামানকে নির্দেশ দেন।
মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে সহকারী কমিশনার (ভূমি) সরেজমিনে কনের বাড়িতে যান। তিনি সেখানে গিয়ে বাল্য বিবাহের আয়োজনের সত্যতা পান। এ সময় ওই কিশোরীর বাবা ও মা বাড়িতে ছিল না। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ওই কিশোরীর প্রতিবেশী ও আত্মীয় স্বজনদেরকে ডেকে এনে বাল্যবিবাহের কুফল ও রাষ্ট্রীয় আইনে এ ধরনের বিবাহের স্বীকৃতি নেই, এমনটি বুঝিয়ে বলার পর কিশোরীর চাচা ১৮ বছরের আগে তার ভাতিজিকে বিবাহ দেবেন না বলে লিখিতভাবে অঙ্গীকার করেন। খবরটি বরের বাড়িতেও জানিয়ে দেওয়া হয়।
এ ব্যাপারে ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক কালবেলাকে জানান, বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে সহকারী কমিশনারের (ভূমি) সঙ্গে পুলিশ পাঠানো হয়। ঘটনাস্থলে মেয়ের মা-বাবাকে পাওয়া না গেলেও চাচা এ বিয়ে দিবেন না বলে অঙ্গীকার করেন। পরে বুধবার (২৭ নভেম্বর) মেয়ের বাবা থানায় গিয়ে লিখিত অঙ্গীকার দেন।
উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) অলিদুজ্জামান কালবেলাকে বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে মেয়ের জন্মনিবন্ধন এবং এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন কার্ড দেখে ঘটনার সত্যতা পাই। সত্যতা পেয়ে বাল্য বিবাহটি বন্ধ করেছি। বাল্যবিবাহ রোধে উপজেলা প্রশাসন সবসময় তৎপর রয়েছে।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত