ফায়ার সার্ভিসকে দেওয়া হলো আগুনের ভুল তথ্য, অতঃপর…

| আপডেট :  ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৬  | প্রকাশিত :  ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২:১৬

আগুন লেগেছে পানের বরজে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসে চায়ের দোকানে আগুন লাগার খবর দেওয়া হয়েছে। চায়ের দোকানে কোথাও এমন দুর্ঘটনা না ঘটায় ফিরে যান ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। ততক্ষণে রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার চার চাষির এক বিশাল জমির পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। পানবরজে এই আগুনে প্রায় ১০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে। 

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজশাহী মোহনপুর উপজেলায় এ ঘটনা ঘটেছে। 

আগুন লেগেছিল উপজেলার বাগশিমইল ইউনিয়নের বিদ্যাধরপুরে পানের বরজে। কিন্তু ফায়ার সার্ভিসে খবর দেওয়া হয়, উপজেলার জাহানাবাদ ইউনিয়নের বিষহারা এলাকায় হালিমের চায়ের স্টলে আগুন লেগেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মোহনপুরের ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে বিদ্যাধরপুর দক্ষিণদিকে ৮ কিলোমিটার। আর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে পূর্বদিকে ৯ কিলোমিটার বিষহারা এলাকার দূরত্ব।

মোহনপুর উপজেলার ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে,  দুপুর ১টায় ফায়ার সার্ভিসের মোবাইলে কল আসে মোহনপুর উপজেলার বিষহারা এলাকায় হালিমের চায়ের স্টলে আগুনের। এমন খবরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা রওনা দেন ১টা ৮ মিনিটে বিষহারার উদ্দেশে। আবার ঠিক ১৫ মিনিট পর ফায়ার সার্ভিসে কল আসে একই উপজেলার বিদ্যাধরপুরে পানের বরজে আগুনের। ঘটনাস্থলে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দেখেন চায়ের দোকানে আগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনা ঘটেনি। 

এরপর অভিযোগ আসা মোবাইল নম্বরে কল করা হলে রিসিভ করে বলেন, ‘ইট বিছানো রাস্তায় একটু গিয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের বসতবাড়িতে আগুন।’ সেখানে গিয়ে আগুন দেখতে না পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা বুঝে ফেলেন- ভুল তথ্য দেওয়া হয়েছে। এবার ওই নম্বর ফোন দেওয়া হলে বন্ধ পাওয়া গেছে। এরই মধ্যে বিদ্যাধরপুরে চার চাষির এক বিঘার বেশি পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

বিদ্যাধরপুর গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত পান চাষিরা বলছেন, পানের বরজে আগুনের বিষয়টি প্রথমে মোহনপুর ফায়ার সার্ভিসে জানানো হয়। ফায়ার সার্ভিস থেকে জানায়, বিষহারা এলাকায় আগুনের বিষয়টি। জানানো হয় সেখান থেকে আগে কল পাওয়ার কারণে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিষহারায় যাচ্ছে আগুন নেভাতে। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আসতে দেরি হওয়ায় এলাকাবাসী আগুন নিভিয়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এলে এতো ক্ষতি হতো না। এ ঘটনাটি পরিকল্পিত হতে পারে বলেও ধারণা করছেন তারা।

মোহনপুর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটার নুরুল ইসলাম বলেন, আগুন লেগেছে এক এলাকায়, আর আমাদের ফোন করে অন্য এলাকায় পাঠানো হয়েছে। এটা আমাদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতারণা করা হয়েছে। যিনি এই কাজটা করেছেন তিনি জেনে বুঝেই করেছেন। বিষয়টি আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছে। তারা বিষয়টি পুলিশকে জানাবেন।

মোহনপুর থানার ওসি আব্দুল হান্নান বলেন, খবর পেয়ে পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পানবরজে কীভাবে আগুন লেগেছে তা জানা যায়নি। বরজের মালিকরাও বলতে পারছেন না কীভাবে আগুন লেগেছে। একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে ক্ষতিগ্রস্তরা। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করে দেখছি। কেউ জড়িত থাকলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত