পটুয়াখালীতে নারীসহ যুবলীগ নেতা আটক
পটুয়াখালীর বাউফলে এক নারীসহ ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতিকে আটক করেছে পুলিশ।
আটক যুবলীগ নেতা মিজান মোল্লা (৪৭) কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি। তার বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালান ও জমি দখলসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে।
মঙ্গলবার (২২অক্টোবর) রাত ১০টার দিকে উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের কলেজ রোড এলাকার একটি বাসা থেকে তাকে আটক করা হয়।
মিজানকে আটকের সময় তিনি রুমের মধ্যেই পুলিশের উপস্থিতিতে স্থানীয় এক ব্যক্তিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন। এতে উপস্থিত জনতার মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। তাকে গাড়িতে তোলার সময় পুলিশের সামনেই মারধর করে উত্তেজিত জনতা।
পুলিশ জানায়, রাত ৯টার দিকে মিজান মোল্লা নামের এক যুবলীগ নেতা কালাইয়া কলেজ রোডে একজন আওয়ামী লীগ নেত্রীর বাসায় অন্য একজন নারীকে নিয়ে ‘অসামাজিক কার্যকলাপে’ জড়িত রয়েছেন বলে খবর দেয় স্থানীয়রা। পরে থানার টহল টিম ঘটনাস্থলে যায়। সেখানে কয়েকশ মানুষ বাইরে থেকে বাড়িটি ঘেরাও করে রেখেছিল।
থানার ফোর্স ঘটনাস্থলে পৌঁছে একটি দুইতলা ভবনের নিচতলার একটি রুম থেকে মিজান মোল্লাকে নারীসহ আটক করে। আটক যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে সরকারি কবরস্থানের জায়গা দখল করে ঘর তোলা এবং সে ঘরে মাদকের আড্ডা বসানোর অভিযোগ আছে। তিনি নিজেও সেখানে মাদক সেবক করতেন।
একাধিক মাদক মামলার আসামি ও নিয়মিত মাদক কারবারি রেজাউল ওরফে রেজু মিজান মোল্লার সেই ঘর দেখাশোনা করতেন। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মাদক ইস্যুতে যুবলীগ সভাপতি মিজান মোল্লার নাম এসেছিল এবং ওই বাসা থেকে মাদক উদ্ধারও হয়েছিল। কিন্তু সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজের প্রভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। সরকার পতনের পর সম্প্রতি ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধ হয়ে কবরস্থান দখল করে গড়ে তোলা মাদকের আখড়া ঘর গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী একজন বলেন, মিজান মোল্লাকে এক নারীসহ এই বাসায় ঢুকতে দেখেন এক শিক্ষার্থী। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা তাকে ওই নারীর সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে। একপর্যায়ে অনেক লোক ভবনের ভেতর ঢুকে গেলে তিনি দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে কালাইয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি মিজান মোল্লা জানান, তিনি রাস্তা দিয়ে যাচ্ছিলেন। কয়েকজন কিশোর তাকে মারধর করেন। আত্মরক্ষার জন্য তিনি দৌড়ে এই রুমে প্রবেশ করেন। এখানে কোনো নারী সংক্রান্ত বিষয় নেই৷ তিনি মাদক ব্যবসার সঙ্গেও জড়িত না। এগুলো সব সাজানো নাটক বলে দাবি করেন তিনি।
ওই নারীও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাকে ডেকে এনে জোর করে কিছু লোক এই বাসায় ঢুকিয়েছেন।
বাউফল থানার ওসি মো. কামাল হোসেন বলেন, অসামাজিক কার্যকলাপে জড়িত থাকার অভিযোগে একজন যুবলীগ নেতাকে স্থানীয়রা আটকে রেখেছেন। এমন খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাকে আটক করেছি। তার বিরুদ্ধে মাদক ব্যবসা ও জমি দখলসহ বেশকিছু অভিযোগ আছে। জিজ্ঞাবাদে অভিযোগের সত্যতা পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও জানান তিনি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত