আ.লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকার ঘোষণা ছাত্রসংসদের
বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীকের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে ছাত্রদের নতুন সংগঠন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। তারা জানিয়েছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত মাঠে থাকবে ছাত্রসংসদ।
শুক্রবার (২১ মার্চ) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য প্রত্যাহার এবং গণহত্যার দায়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ থেকে তারা এ দাবি জানায়।
জুমার নামাজের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের সামনে থেকে মিছিল শুরু করেন ছাত্রসংসদের নেতা-কর্মীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে তারা কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনে এসে সমাবেশ করেন।
এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) ‘আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের পরিকল্পনা অন্তর্বর্তী সরকারের নেই’ বলে এক সাক্ষাৎকারে মন্তব্য করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
তার এই বক্তব্যের পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য প্রত্যাহার করে ব্যাখ্যা দেওয়ার দাবি জানান শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি পুনরায় জোরালো হয়ে ওঠে।
বিক্ষোভ সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সদস্য সচিব জাহিদ আহসান বলেন, আওয়ামী লীগ ও নৌকা প্রতীকে বাংলাদেশে কোনো রাজনীতি হবে না। সংস্কার আওয়ামী লীগ নামে কিছু হয় না। বাংলাদেশকে আমরা আরও একটি গণহত্যার দিকে ঠেলে দিতে পারি না। নামে-বেনামে আওয়ামী লীগ ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে। সেটা যেখান থেকেই হোক, এর বিরুদ্ধে আমাদের সংগ্রাম চলবে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় মুখ্য সংগঠক তাহমীদ আল মোদ্দাসসীর চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ফ্যাসিবাদ কায়েম করেছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু বারবার তাদের ফিরিয়ে এনে ফ্যাসিবাদ তৈরির সুযোগ দেওয়া হয়েছে। ফলে দেশে ১৭ বছর ফ্যাসিবাদ আবার কায়েম হয়েছে।
তিনি বলেন, পুনরায় কচুক্ষেত বা দিল্লির প্রেসক্রিপশনে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের চেষ্টা চলছে। ‘রিফাইন্ড আওয়ামী লীগ’ নামে কোনো আওয়ামী লীগকে ফেরার সুযোগ আমরা দেব না। আমাদের ভারত ও পাকিস্তানের আধিপত্য থেকে বের হতে হবে।
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র আশরেফা খাতুন বলে, আমরা ভেবেছিলাম ৫ আগস্টের পর ক্ষমতাকাঠামোর পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু সেটি হয়নি। আমরা আগস্টে যেভাবে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ছিলাম, এখনো তেমনই আছি। যত দিন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হয়, তত দিন আমরা মাঠে থাকব।
প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ভালো আওয়ামী লীগ বলে কাদের বোঝানো হচ্ছে? যারা গণহত্যায় সরাসরি ছিল না, তারা মাঠে ছিল না…অথচ আমরা যখন গুলির সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছি, তখন একটা ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতাও মুখ খোলেননি। তাদের রিফাইন্ড করে আওয়ামী লীগ ফিরিয়ে আনার সুযোগ নেই।
সামনের বাংলাদেশে জনতাই হবে ক্ষমতা, এমনটা জানিয়ে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখপাত্র রাফিয়া রেহনুমা হৃদি বলেন, অতীতে যারা গণহত্যা করেছে, তাদের বিচার করতে হবে। আওয়ামী লীগ নাম ও প্রতীক নিয়ে কোনো রাজনীতি হবে না। বাংলাদেশে দিল্লি থেকে কোনো সিদ্ধান্ত হবে না।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক লিমন মাহমুদ হাসান, সদস্য সচিব মহির আলম প্রমুখ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত