বরগুনায় বিশাল আকৃতির অজগর উদ্ধার
বরগুনার তালতলীতে সাড়ে ৭ ফুট দৈর্ঘ্যের একটি অজগর সাপ উদ্ধার করেছে স্থানীয়রা। পরে উদ্ধারকৃত সাপটি বন বিভাগের মাধ্যমে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) সকাল ১১টায় উপজেলার কবিরাজপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বশিরের বাড়িতে ইলিশ মাছ ধরার জালে পেঁচানো অবস্থায় একটি অজগর সাপ দেখতে পায় স্থানীয়রা।
৬নং সোনাকাটা ইউনিয়ন ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোসা. নুরজাহান বেগম বলেন, বশিরের বাড়ির লোকজন সকালে ইলিশের জালে প্যাঁচানো আজগর সাপটি দেখেন। সাপটি লোকজন দেখে ফোঁস ফোঁস শব্দ করতে থাকে। এতে তারা ভয় পেয়ে দৌড়ে বাড়ির মধ্যে চলে যায়।
পরে আমাদের খবর দিলে ৭নং সোনাকাটা ইউনিয়নের যুবদলের সদস্য সচিব মো.সোহাগ খান ও মো. মাসুদ রানার নেতৃত্বে আমরা বন বিভাগকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে এসে সাপটিকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
এ বিষয়ে ৫নং বড়বগী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া বিট কর্মকর্তা মো. হায়দার হোসেন বলেন, স্থানীয়দের খবর পেয়ে সাপ ধরার টিমসহ ঘটনাস্থলে গেলে অজগরটিকে জালে প্যাঁচানো অবস্থায় দেখতে পাই। বশিরের বাড়ি থেকে সাড়ে সাত ফুট দৈর্ঘ্যের অজগরটি উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা জানান, অজগর নির্বিষ সাপ। এটি নিশাচর ও খুবই অলস প্রকৃতির, প্রয়োজন ছাড়া নড়াচড়াও করে না। এই প্রজাতিটি গাছে একাকী বাস করলেও শুধু প্রজননকালে জোড়া বাঁধে। সাধারণত মার্চ থেকে জুনের মধ্যে এদের প্রজননকাল। দেশের ম্যানগ্রোভ বন, ঘাসযুক্ত জমি, চট্টগ্রাম ও সিলেটের চিরসবুজ পাহাড়ি বনে এদের দেখা পাওয়া যায়। সাপটি সাধারণত মানুষের ক্ষতি করে না। খাদ্য হিসেবে এরা ইঁদুর, কচ্ছপের ডিম, সাপ, বন মুরগি, পাখি, ছোট বন্যপ্রাণী ইত্যাদি খায়। সাপটি নিজের আকারের চেয়েও অনেক বড় প্রাণী খুব সহজেই গিলে খেতে পারে।
জোহরা মিলা বলেন, চামড়ার জন্য সাপটি পাচারকারীদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হয়েছে। ফলে আমাদের বনাঞ্চল থেকে এটি দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ এর তপশিল-২ অনুযায়ী এ বন্যপ্রাণীটি সংরক্ষিত, তাই এটি হত্যা বা এর যে কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত