দুই দেশের ৩২ লক্ষ্যবস্তুতে তুরস্কের ভয়ংকর হামলা
দুই দেশে হামলা চালিয়েছে তুরস্কের বিমানবাহিনী। রাষ্ট্রীয় একটি প্রতিরক্ষা কোম্পানিতে হামলার জবাবে দেশটি এ পাল্টা হামলা চালিয়েছে।
বৃহিস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুর্দিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিশানা করে সিরিয়া ও ইরাকে হামলা চালিয়েছে তুরস্ক। দেশটির একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিরক্ষা কোম্পানিতে এসব গোষ্ঠীর হামলায় অন্তত পাঁচজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছিলেন। এ হামলার জবাবে তুর্কি বিমানবাহিনী এ হামলা চালিয়েছে।
দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ড্রোন হামলার মাধ্যমে বুধবার (২৩ অক্টোবর) ৩২টি লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করা হয়েছে। তবে এসব হামলার বিষয়ে বিস্তারিত বা কোনো লোকেশনের কথা জানানো হয়নি। এতে বলা হয়েছে, বেসামরিক নাগরিকদের ক্ষয়ক্ষতি রোধে সব ধরনের সতর্কতা নেওয়া হয়েছে।
আলজাজিরা জানিয়েছে, কুর্দিশ যোদ্ধারা বিস্ফোরক স্থাপন ও তুরস্কের আকাশসীমায় এবং প্রতিরক্ষা কোম্পানি টিইউএসএএস-এ হামলার চালানোর জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে। তুরস্কের এ কোম্পানিটি বেসামরিক এবং সামরিক বিমান, ড্রোন এবং অন্যান্য প্রতিরক্ষা শিল্প এবং মহাকাশ ব্যবস্থা ডিজাইন ও তৈরি করে থাকে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলী ইয়ারলিকায়া বলেন, ধারণা করা হচ্ছে এ হামলার পেছনে পিকেকের যোদ্ধারা রয়েছেন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াসার গুলেরও এ হামলার পেছনে পিকেকের দিকে আঙুল তুলেছেন।
তিনি বলেন, আমরা পিকেকের যোদ্ধাদের প্রতিবারই তাদের প্রাপ্য শাস্তি দিই। কিন্তু তাদের কখনও হুশ ফেরে না। সন্ত্রাসীরা নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত আমরা অভিযান চালিয়ে যাবো। তবে এ বিষয়ে পিকেকে তাৎক্ষণিক কোনো বিবৃতি দেয়নি।
এর আগে গত ১৮ সেপ্টেম্বর ইরাকের উত্তরাঞ্চলে বিমান হামলায় পিকেকের ২৪ স্থাপনা ধ্বংস করা হয়। এসব স্থাপনার মধ্যে গোষ্ঠীটির ঘাঁটি, বসতি এবং অস্ত্রাগার রয়েছে।
ওই সময়ে মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইরাকের পার্বত্য অঞ্চল হাকুরক, গারা, কান্দিল এবং তুর্কি সীমান্তের কাছে সন্ত্রাসীদের ঘাঁটি, আশ্রয়কেন্দ্র এবং ডিপোকে লক্ষ্য করে এ বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
পিকেকে তুরস্ক সীমান্তের কাছে উত্তর ইরাকে সন্ত্রাসী হামলার পরিকল্পনা করার জন্য একটি আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। গোষ্ঠীটি বিভিন্ন সময়ে তুরস্ক ও উত্তর সিরিয়ার স্থানীয়দের ওপর হামলা চালিয়ে আসছে। কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকার (KRG) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত উত্তর ইরাকের আধাস্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে গোষ্ঠীটির শক্ত অবস্থান রয়েছে। অন্যদিকে এসব এলাকায় ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের সামান্য প্রভাব রয়েছে।
তুরস্কের অভিযানে কারণে দেশটির অভ্যন্তরে পিকেকের উপস্থিতি বিলুপ্তির দিকে যেতে চলে গেছে। এর বদলে তারা তাদের অভিযানের বড় অংশ উত্তর ইরাকে স্থানান্তর করছে। এর মধ্যে মাউন্ট কান্দিল অঞ্চলে তাদের শক্ত ঘাঁটি রয়েছে। এ এলাকাটি তুরস্কের ইরবিল সীমান্ত থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার গভীরে অবস্থিত।
গত ২৫ বছরে তুরস্ক পিকেকের বিরুদ্ধে উত্তর ইরাকে কয়েক ডজিন সামরিক অভিযান চালিয়েছে। ক্লো অপারেশনের অংশ হিসেবে ২০২২ সাল থেকে দেশটি সন্ত্রাসী এ গোষ্ঠীটির আস্তানা ধ্বংস ও করিডোর নির্মাণরোধে এ বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত