পাক-ভারত টানাপড়েনে পাকিস্তানের সাহসী নেতৃত্বে মুগ্ধ ট্রাম্প

| আপডেট :  ০৭ জুন ২০২৫, ০৮:০৩  | প্রকাশিত :  ০৭ জুন ২০২৫, ০৮:০৩

ভারতের সঙ্গে চরম উত্তেজনার সময় দৃঢ় নেতৃত্ব প্রদর্শনের জন্য পাকিস্তানের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। 

স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (৫ জুন) হোয়াইট হাউসে জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের সঙ্গে এক দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে তিনি এই মন্তব্য করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, এটি ছিল ৬ মে নির্বাচনের পর চ্যান্সেলর মের্জের সঙ্গে ট্রাম্পের প্রথম আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ। খবর দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

বৈঠকে দ্বিপক্ষীয় ও বৈশ্বিক নানা ইস্যুর পাশাপাশি আলোচনায় উঠে আসে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনার সাম্প্রতিক পরিস্থিতিও। গত ২২ এপ্রিল ভারত-অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরে এক প্রাণঘাতী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। কোনো প্রমাণ ছাড়াই ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে। পাকিস্তান তা প্রত্যাখ্যান করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।

এর জেরে ভারত ৬৫ বছর পুরোনো সিন্ধু পানি চুক্তি স্থগিত করে, বাণিজ্য বন্ধ করে দেয় ও সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ায়। পাকিস্তানও পাল্টা ব্যবস্থা নেয়- বাণিজ্য বন্ধ করে, আকাশপথে ভারতীয় উড়োজাহাজের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে।

উভয় দেশের মধ্যে শুরু হয় পাল্টাপাল্টি বিমান হামলা ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা। এতে বহু মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক হস্তক্ষেপ নেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, পাকিস্তানের নেতৃত্ব খুবই শক্তিশালী। কেউ কেউ হয়তো আমার এই বক্তব্য পছন্দ করবে না, কিন্তু এটাই সত্য।

ট্রাম্প জানান, তিনি দুই পক্ষের নেতাদের সঙ্গে গভীরভাবে কথা বলেছেন এবং যুদ্ধ থামাতে চাপ সৃষ্টি করেছেন। তার ভাষায়, আমি বলেছিলাম, যদি তোমরা পরমাণু অস্ত্র উঁচিয়ে পরস্পরের দিকে গুলি চালাও, তাহলে আমাদের বাণিজ্য হবে না।

পরিস্থিতি আরও খারাপ হয় ৭ মে, যখন ভারত পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে বিমান হামলা চালায় এবং আজাদ কাশ্মীরেও আঘাত হানে। জবাবে পাকিস্তান ভারতের রাফায়েল যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করে এবং ভারতীয় ড্রোন ভূপাতিত করে।

১০ মে ভারত পাকিস্তানের বিমানঘাঁটিতে হামলা চালালে পাকিস্তান ‘অপারেশন বুনইয়ানুম মারসূস’ চালায়, যার মাধ্যমে ভারতীয় সামরিক স্থাপনায় পাল্টা হামলা চালানো হয়। যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছানো এই সংঘাত থামাতে সক্রিয় হন ট্রাম্প।

তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফলে ১০ মে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়, যা পরে দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা নিশ্চিত করেন। তবে যুদ্ধ থেমে গেলেও কূটনৈতিক বাকযুদ্ধ অব্যাহত থাকে।

পাকিস্তান ট্রাম্পসহ চীন ও উপসাগরীয় দেশগুলোর ভূমিকাকে ধন্যবাদ জানালেও, ভারত এই যুদ্ধবিরতিকে নিজেদের দ্বিপক্ষীয় আলোচনার ফল বলেই দাবি করে।

তবে ট্রাম্প নিজেকে মধ্যস্থতাকারী হিসেবে তুলে ধরেন এবং বলেন, আমি সেই যুদ্ধ থামিয়েছি। আমি এতে গর্বিত। আশা করি তারা আবার শুরু করবে না। তিনি দুই পক্ষের নেতৃত্বের প্রশংসা করলেও পাকিস্তানের ‘দৃঢ় নেতৃত্ব’-এর ওপর বিশেষভাবে আলোকপাত করেন।

সংক্ষেপে, এক অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে শান্তির বার্তা ছড়াতে ট্রাম্পের হস্তক্ষেপ যে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল, তা স্পষ্ট করে তুলেছে তার বক্তব্য-তারা সেই যুদ্ধ থামিয়েছে। আমি এতে খুব গর্বিত।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত